নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নবজাতক কোলে নিয়েই বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন কনে নাদিয়া আক্তার। গতকাল বুধবার দুপুরে উপজেলা অডিটরিয়ামে এ বিয়ে অনুষ্ঠিত হয় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মমতাজ বেগমের হস্তক্ষেপে এই বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। নাদিয়া আক্তার ভোলাবো ইউনিয়নের চারিতালুক ভূঁইয়াবাড়ি এলাকার নাঈম ভূঁইয়ার মেয়ে।
পরিবার সূত্র জানায়, বছরখানেক আগে ভোলাবো এলাকার সালাউদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে মোবারকের সঙ্গে নাঈম মিয়ার মেয়ে নাদিয়া আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মোবারক বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সঙ্গে একাধিকবার শরীরিক সম্পর্ক গড়েন। এতে নাদিয়ার গর্ভে সন্তান চলে আসে। কিন্তু সেই সন্তানকে অস্বীকার করতে শুরু করেন মোবারক। এ নিয়ে এলাকায় বেশ কয়েকবার সালিশ বসে। অবস্থা বেগতিক দেখে মোবারক সম্প্রতি মালয়েশিয়া পাড়ি জমান।
এদিকে ছয় দিন আগে নাদিয়া কন্যাশিশুর জন্ম দেন। নাদিয়ার বাবা মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত মোবারককে ফোনে তার মেয়েকে বিয়ের জন্য অনুরোধ করেন, এমনকি তার পরিবারকেও জানান। কিন্তু ছেলের পরিবার গুরুত্ব দেয়নি। উপায় না পেয়ে নাদিয়ার পরিবার রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মমতাজ বেগমের শরণাপন্ন হন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভোলাবো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন টিটুর সহযোগিতায় ইউএনও বিষয়টি নিয়ে উভয় পরিবারকে নোটিশ করেন।
গতকাল বিকালে উভয় পরিবারের সম্মতিতে ১০ লাখ টাকা মোহরানা ধার্য ও নবজাতকের নামে দুই শতক জমি লিখে দেওয়ার চুক্তি সাপেক্ষে প্রবাসী মোবারকের সঙ্গে ভিডিওকলের মাধ্যমে নাদিয়ার বিয়ে সম্পন্ন হয়। কনের শাড়ি, কাবিনের ফি ও বিভিন্ন খরচ ইউএনও নিজেই বহন করেন। বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধান হওয়ায় স্থানীয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বিয়েতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওমর ফারুক ভূঁইয়া, ভোলাবো ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন টিটু, ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান আশকারী, কাজী আবদুল মতিনসহ আরও অনেকে।