Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

১১ টি সন্তান জন্ম দিয়েও মিলেনি বাবার পরিচয়, আবারও অন্তঃসত্ত্বা নারী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯ জুলাই ২০১৯, ০৮:৪১ PM
আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৯, ০৮:৪১ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


নরসিংদীর মনোহরদীতে মানসিক ভারসাম্যহীন চল্লিশোর্ধ এক নারী আবারও ধর্ষণের শিকার হয়ে মা হতে চলছেন। বর্তমানে তিনি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এর আগে একইভাবে ধর্ষণের শিকার হয়ে ১০ জন পুত্র এবং একটি কন্যা সন্তানের মা হয়েছেন ঐ নারী। কিন্তু মিলেনি কোনো সন্তানেরই বাবার পরিচয়।

মানসিক ভারসাম্যহীন নারীটি আবার মা হতে যাওয়ায় এলাকায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। এতোগুলো সন্তানের বাবা কে বা কারা? কাদের নির্মম নির্যাতনের শিকার মানসিক ভারসাম্যহীন এই নারী? এমন নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে সচেতন মহলে। ঘৃণ্য এ ঘটনা ঘটেছে মনোহরদী উপজেলার বড়চাপা ইউনিয়নের পূর্ব বড়চাপা গ্রামে।

স্থানীয়রা জানায়, প্রায় ১৫ বছর আগে মানসিক প্রতিবন্ধী ওই নারীর একই ইউনিয়নের বীর মাইজদিয়া গ্রামে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় তার স্বামী মানসিকভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন থাকলেও কয়েকমাস পর পুরোপুরি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। এরপর থেকে ওই নারীটি বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে থাকেন। বড়চাপা বাজার থেকে পোড়াদিয়া বাজার পর্যন্ত রাস্তার যেখানে সেখানে ঘুমাতে থাকেন। বিভিন্ন সময় বাজারের খাবার হোটেল থেকে চেয়ে চেয়ে খাবার খান।

তারা আরও জানায়, ২০০৪ সালে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীর শারীরিক গঠনের পরিবর্তন লক্ষ্য করেন বাজারের লোকজন। ওই বছরই পোড়াদিয়া বাজারের রাস্তার পাশে ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন। ঘটনাটি দেখতে পেয়ে আশপাশের মহিলারা এসে সদ্য ভূমিষ্ঠ নারীজোড়া শিশু এবং মাকে তুলে পাশের বাড়িতে নিয়ে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করেন। দু-একদিন পর কিছুটা সুস্থ হয়ে ওই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যায় নারীটি। প্রতিবেশী নিঃসন্তান এক দম্পত্তি নিয়ে যায় ওই কন্যা শিশুটিকে।

একইভাবে অজানা ব্যক্তির ধর্ষণের শিকার হয়ে আবারো অন্তঃসত্বা হয়ে পড়েন তিনি। এবারো রাস্তার পাশে ফুটফুটে একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন তিনি। এই পুত্র সন্তানটিও নিঃসন্তান দম্পত্তির ঘরে আশ্রয় পায়। এভাবে ওই নারীটি ১১ বার অজানা পুরুষের হাতে ধর্ষিত হয়ে সন্তান প্রসব করেছেন। যাদের মধ্যে ১০ জন পুত্র এবং একজন কন্যা। আর তাদের প্রত্যেককেই আশপাশের গ্রামের নিঃসন্তান অথবা পুত্রসন্তানহীন দম্পত্তি নিয়ে যায়।

বড়চাপা বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, প্রায় ১৫ বছর ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন এই নারীটি বাজারে চলাফেরা করে। যারা বারবার তার সাথে লজ্জাজনক কাজ করে যাচ্ছে তাদের চিহ্নিত করে আইননানুগ ব্যবস্থার দাবি জানাই।

বড়চাপা ইউপি চেয়ারম্যান উপাধ্যক্ষ এম সুলতান উদ্দিন বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন নারী এ পর্যন্ত বারো বার ধর্ষণের শিকার হয়ে অন্তঃসত্বা হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক ও লজ্জাজনক ঘটনা। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে নরপশুদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানাই।

মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাফিয়া আক্তার শিমু বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীর বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। বিস্তারিত জেনে ওই নারীর পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং অপরাধীদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Bootstrap Image Preview