সম্প্রতি তিউনিসিয়ার উপকূলে ভূমধ্যসাগরে লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে ৩৭ জন বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনায় মানবপাচারকারীদের বিষয়ে দুই মাসের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (১ জুলাই) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এমদাদুল হক সুমন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
এরআগে, গত ১৭ জুন লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে তিউনিসিয়ার উপকূলে ভূমধ্যসাগরে ৩৭ জন বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনায় তাদের প্রত্যেকের পরিবারকে মোট ৩৭ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। একইসঙ্গে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত পাচার সংক্রান্ত ঘটনা তদন্ত করে ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা চাওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ এমদাদুল হক সুমন এ রিট দায়ের করেন।
এছাড়া, রিটে প্রতারক ট্রাভেল এজেন্সি ও মানবপাচার চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ২০১২ সালের মানবপাচার দমন আইনে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান নিশ্চিত করার নির্দেশনা চাওয়া হয়।
রিটে প্রতারক ট্রাভেল এজেন্সি ও মানবপাচার চক্রকে আইনের আওতায় আনার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে সিলেট ও নোয়াখালীর এসপিকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়। পাশাপাশি রিট আবেদনে প্রতারক ট্রাভেল এজেন্সি ও মানবপাচার চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারিরও আবেদন করা হয়।
রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সচিব, আইন মন্ত্রণালয় সচিব, পুলিশের আইজি, সিলেট ও নোয়াখালীর এসপিকে বিবাদী করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ৯ মে ভূমধ্য সাগরে তিউনিসিয়ার উপকূলে নৌকাডুবিতে ৩৭ বাংলাদেশি প্রাণ হারান। এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওইসব প্রতিবেদনে প্রতারক ট্রাভেল এজেন্সি, ১৫ পাচার চক্র ও নোয়াখালীর তিন ভাই মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য উঠে আসে। এরপর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।