বরগুনার প্রকাশ্য দিবালোকে নব্য বিবাহিত স্ত্রীর সামনেই নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রিফাত শরীফ (২৫) নামের এক যুবককে। চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাব্বির হোসেন নয়ন এখনো পুলিশের হাতে ধরা না পড়লেও তাকে নিয়ে বিভিন্ন ধরণের তথ্য দিয়েছেন তারই নিকটতম আত্মীয়-স্বজনরা।
নয়নের বিষয়ে তার ফুফা আবদুল খালেক মুন্সি দাবি করেছেন, নয়ন সন্ত্রাসী ছিল না। তাকে সন্ত্রাসী তৈরি করা হয়েছে।
রবিবার (৩০ জুন) স্থানীয় সংবাদকর্মীদের তিনি বলেন, রাজনৈতিক ও পুলিশের সহায়তায় সাব্বির হোসেন নয়ন মোল্লা আজ দেশব্যাপী কুখ্যাত নয়ন বন্ড মাদক সম্রাট ও খুনি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
এ সময় তিনি আরও জানান, দীর্ঘ ১৫ বছর পূর্বে বরগুনা সরকারি কলেজের চাকরি থেকে অবসর নিয়ে পটুয়াখালীর দশমিনায় পরিবার নিয়ে বসবাস করছি। তখন নয়নের বয়স ছিল ৯-১০ বছর।
নয়নের ফুফাতো ভাই সাফায়েত হোসেন বলেন, আমরা দুই ভাই বরগুনায় জন্মগ্রহণ করে বড় হয়েছি। আমাদের মামাতো ভাই নয়ন বরগুনার নোংরা রাজনীতির পাল্লায় পড়ে ধীরে ধীরে উচ্ছৃঙ্খল হয়ে গেছে। স্কুলপড়ুয়া শান্ত-সুবোধ ছেলেটা মামা মারা যাওয়ার পর মামীর কোনো কথাই শুনতো না। ফলে ধীরে ধীরে হিংস্র হয়ে উঠতে থাকে সে।
এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, বরগুনার রিফাত হত্যার ঘটনায় পারিবারিক ও সামাজিকভাবে আমরা বিপর্যস্ত অবস্থায় আছি। আমরাও রিফাত হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। পাশাপাশি নয়নকে যারা ব্যবহার করে সন্ত্রাসী বানিয়েছেন তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাই।
প্রসঙ্গত, বুধবার (২৬ জুন) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রী মিন্নিকে বরগুনা সরকারি কলেজে নিয়ে যান রিফাত। কলেজ থেকে ফেরার পথে মূল ফটকে নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজীসহ আরও দুই যুবক রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে চলে যায়।
পরবর্তীতে, স্থানীয় লোকজন রিফাত শরীফকে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে নিহত রিফাতের পরিবার জানায়, রিফাতকে কুপিয়ে হত্যায় অংশ নেয় নয়ন বন্ডসহ ৪-৫ জন। রিফাতের সঙ্গে দুই মাস আগে পুলিশলাইন সড়কের আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির বিয়ে হয়। বিয়ের পর নয়ন মিন্নিকে তার সাবেক স্ত্রী ও প্রেমিকা দাবি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপত্তিকর পোস্ট দিতে থাকে। ফলে এ বিষয়কে কেন্দ্র করেই দ্বন্দ্ব শুরু হয় দু’জনের মাঝে।
এছাড়াও রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বলেন, নয়ন প্রতিনিয়ত আমার পুত্রবধুকে উত্ত্যক্ত করত এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপত্তিকর পোস্ট দিত। এর প্রতিবাদ করায় আমার ছেলেকে নয়ন তার দলবল নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।