Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৬ মঙ্গলবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষিকার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৯ জুন ২০১৯, ০৭:৪৬ PM
আপডেট: ২৯ জুন ২০১৯, ০৮:০১ PM

bdmorning Image Preview


নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা আনসার-ভিডিপি কর্মকর্তা মো. ওয়িদুজ্জামান ও প্রশিক্ষিকা মোছা. পাপিয়া খাতুনের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, ঘুষ ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। 

চাকরি থেকে বরখাস্ত করার ভয় দেখিয়ে দলনেত্রীদের কাছ থেকে মোটা অংকের ঘুষ গ্রহন, দূর্গা পুঁজা, নির্বাচনসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ডিউটি প্রদানে, ইউনিফরম প্রদানে, গ্রাম ভিত্তিক মৌলিক প্রশিক্ষণ প্রদানে, সম্মানি ভাতা প্রদানে ঘুষ গ্রহণসহ নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে ওই দুই কর্মকর্তার বিচারের দাবিতে সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ৬ জন দলনেত্রী।

এছাড়া অভিযোগের অনুলিপি নওগাঁ-৩ আসনের সাংসদ, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান/কমিশনার, আনছার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহীনির উপ-পরিচালক ও জেলা কমান্ডারসহ বিভিন্ন দফতরে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় আনসার ভিডিপি সদস্যদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ বিষয়ে তারা তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

লিখিত অভিযোগ ও ভুক্তভোগী আনসার-ভিডিপি সদস্যদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, উপজেলা আনসার-ভিডিপি কর্মকর্তা মো. ওয়িদুজ্জামান ও প্রশিক্ষিকা পাপিয়া অফিসে যোদানের পর থেকেই ঘুষ ও নিয়োগ বাণিজ্যে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। দলপতি-দলনেত্রী মকলেছুর রহমান, জাফর আলী, মমতাজ হোসেন, মোছা. দেলোয়ারা, সেলীনা বেগম, শামসুন্নাহারকে চাকরি থেকে বরখাস্ত ও সম্মানী ভাতার বিল না করার ভয় দেখিয়ে দু’দফায় ৫০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহন করেন।

বিগত জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনসহ উপজেলার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের ডিউটি প্রদানে প্রত্যেক সদস্যদের কাছ থেকে ৬’শ টাকা করে ঘুষ নিয়েছেন। যেসব সদস্য টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান তাদের বাদ দিয়ে প্রশিক্ষণবিহীন লোকদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ডিউটি করিয়ে থাকেন। এখনও তা অব্যাহত আছে।

মহান স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস উৎযাপন করা সদস্যদের ১’শ থেকে ১’শ ৫০ টাকা দিয়ে বিদায় করা ও মাত্র ১৫ জন সদস্য দিয়ে ওইসব দিবস উৎযাপন করে অবশিষ্ট টাকা আত্মসাৎ করেন। প্রশিক্ষনে সদস্য প্রেরণ ও ইউনিয়ন কমান্ডার নিয়োগের জন্য প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা, গ্রাম মৌলিক প্রশিক্ষনের জন্য সদস্য প্রতি ৩’শ টাকা এবং বাহিরের গ্রামের সদস্যদের ভর্তি করার জন্য সদস্যপ্রতি ৩ হাজার টাকা এবং মহিলা সদস্যদের সরকার বরাদ্দকৃত ইউনিফরম (শাড়ি) বিক্রি করেন উপজেলা আনসার-ভিডিপি কর্মকর্তা মো. ওয়িদুজ্জামান ও প্রশিক্ষিকা পাপিয়া।

দলনেত্রী শামসুন্নাহারা বলেন, ‘উপজেলা আনসার-ভিডিপি কর্মকর্তা মো. ওয়িদুজ্জামান ও প্রশিক্ষিকা পাপিয়া আমাদের বিরুদ্ধে জেলা অফিসে মিথ্যা অভিযোগ করেন, আমরা নাকি কোন কাজকর্মে অংশগ্রহন করি না। আমরা ১৬ ডিসেম্বর, ২৬ মার্চ ও নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র এবং পুঁজা মন্ডবে দায়িত্ব পালন করেছি।

দলপতি মমতাজ, দেলোয়ারা ও সেলিনা বেগম জানান, ‘চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত আমরা ছয় মাসের সম্মানী ভাতা পেতাম। কিন্তু গত ঈদুল ফিতরের একদিন আগে ৪ মাসের বেতন ভাতা পেয়েছি। বর্তমানে দু’মাসের বেতন ভাতা বাকি রয়েছে। বর্তমান জেলা কমান্ডিং স্যারকে জনপ্রতি ২ হাজার টাকা দিলে আমরা এই বিল পাবো কিন্তু আমরা ঘুষ দিতে না চাওয়ায় এ বিল পাইনি।

উপজেলা আনসার-ভিডিপি কর্মকর্তা মো. ওয়িদুজ্জামানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোদ করলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীত। আমি কর্মরত থাকাকালিন কোন অনিয়ম ও ঘুষ বাণিজ্য হয় নি। তবে নতুন দলপতি-দলনেত্রী নিয়োগের ক্ষেত্রে জেলা কমান্ডিং স্যার চাইলে কিছু দিতে হয়। অপরদিকে তিনি প্রতিবেদককে প্রশ্ন করেন, এটা শুধু কি এ অফিসেই হয়?

অভিযোগ অস্বীকার করে প্রশিক্ষিকা মোছ. পাপিয়া খাতুন বলেন, ‘ওরা অভিযোগ দিতে পারে চাইলে আপনারা রিপোর্ট করতেই পারেন।

নওগাঁ জেলা কমান্ড্যান্ট আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উপ-পরিচালক সঞ্জয় চৌধুরীর সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসমা খাতুন বলেন, ‘এ ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Bootstrap Image Preview