নড়াইলে একাধিক শিক্ষার্থীকে ইভটিজিং এর দায়ে এক স্কুল শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে নড়াইল জেলা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) গভীর রাতে নড়াইল জেলা পুলিশের একটি চৌকশ টিম তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে শনাক্ত করে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতারকৃত ওই শিক্ষকের নাম এস.এম. মাহমুদ হাসান সজীব (৩৩)। সে নড়াইল জেলার সদর উপজেলাধীন দক্ষিণ নড়াইল গ্রামের শেখ মুহাম্মদ হুসাইনের ছেলে এবং বেতেঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত এস.এম. মাহমুদ হাসান সজীব দীর্ঘদিন ধরে ইভটিজিং এর সাথে জড়িত। সে নিজের পরিচয় লুকাতে হেলমেট পরিহিত অবস্থায় বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে মেয়েদের শ্লীলতাহানি করে থাকে।
লোকলজ্জার ভয়ে অনেক মেয়ে মুখ না খুললেও চলতি বছরের জুন মাসে প্রাইভেট পড়ে নিজ বাসায় ফেরার পথে নড়াইল শহরের খাদ্য গুদামের কাছে এক স্কুল ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করে ঐ স্কুল শিক্ষক। এ সময় শিক্ষার্থীর চিৎকারে আশেপাশের লোক এগিয়ে এলে বখাটে শিক্ষক নিজ মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তার অভিভাবকদের সাথে নিয়ে নড়াইল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়ে অভিযোগ করলে বিষয়টি আমলে নিয়ে নড়াইল পুলিশ তৎপর হয়। পরে ঘটনাস্থলের সিসি টিভি ফুটেজ চেক করে বখাটে শিক্ষকের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের লাইসেন্স নাম্বারটি শনাক্ত করে পুলিশ (যার নং- নড়াইল-হ-১১৮০৬৮)। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে শুক্রবার (২১ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় নড়াইল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন হয়। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম, পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ শরফুদ্দীন, নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস হোসেন, পিপিএম, নড়াইল জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের ওসি আশিকুর রহমান, নড়াইল জেলা বিশেষ শাখার ডিআইও-১ এস.এম. ইকবাল হোসেন প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলন চলাকালে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, নড়াইল জেলাকে অপরাধমুক্ত করতে আমরা শহরের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছি। যার সুফলে আজকে শিক্ষক নামধারী এই নরপশুকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। এছাড়াও এই সিসি ক্যামেরার কল্যাণে পূর্বেও অনেকে উপকৃত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ইভটিজিং একটি সামাজিক ব্যাধি। শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে এর কুফল তুলে ধরেন। কিন্তু গ্রেফতারকৃত এই শিক্ষক তার বিবেককে বিসর্জন দিয়ে এই ধরনের ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ড করেছেন। আমরা বিজ্ঞ আদালতের কাছে তার কঠোর শাস্তি দাবি করবো যাতে করে আর কেউ এ ধরনের অপকর্ম করার সাহস না পায়।