Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

রাস্তায় সন্তান জন্ম দিলো মৃত্যুপথযাত্রী পাগলি, কে এই ধর্ষক?

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ জুন ২০১৯, ০৫:৫১ PM
আপডেট: ২০ জুন ২০১৯, ০৫:৫১ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


মধ্যরাতে এক মানসিক ভারসাম্যহীন মায়ের প্রসববেদনার গগনবিদারী চিৎকার ভারী করে তুলেছিল চারপাশের পরিবেশ। কেই নেই তার চিৎকার দেখার। তার এই অসহায় অবস্থা দেখে এগিয়ে আসে ঝাড়ুদার জাহানারা বেগম। সঙ্গে আশপাশের কয়েকজন নারীকে ডেকে এনে পাগলির সন্তান প্রসব করান তিনি। জন্ম নেয় ফুটফুটে এক পুত্রসন্তান। অন্ধকার কাটিয়ে ভোরের সূর্য যখন উঁকি দেয় তখন পৃথিবীর আলো দেখে শিশুটি। এজন্য শিশুটির নাম রাখা হয় সূর্য। ইতোমধ্যে শিশুটিকে দত্তক নিতে ভীড় জমাচ্ছেন অনেকেই।

বুধবার (১৯ জুন) মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আরিচাঘাটের পুরনো ট্রাক টার্মিনাল এলাকায় ফুটফুটে এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী। কেউ তার নাম-পরিচয় জানে না।

সন্তান প্রসবের পর গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় পাগলিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেই সঙ্গে নবজাতককে হামিদা বেগম নামে এক নারীর কাছে পরিচর্যার জন্য রাখা হয়।

স্থানীয় জানাহারা বেগম বলেন, আরিচা বন্দরে তিনি ঝাড়ুদারের কাজ করেন। মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে প্রতিদিনের মতো ঝাড়ু দেয়ার জন্য বাজারে আসেন। এ সময় হঠাৎ পাগলির চিৎকার শুনতে পান। পুরনো ট্রাক টার্মিনালে গিয়ে দেখেন কাদা-মাটির মধ্যে গড়াগড়ি করছেন পাগলী। সন্তান প্রসবের আগ মুহূর্তে পাগলীর এমন কষ্ট দেখে গ্রামের ধাত্রী মেহেরুন নেছা, সুলতানাসহ আশপাশের কয়েকজন নারীকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন জাহানারা। রাতভর চেষ্টার পর বুধবার ভোরে পাগলির সন্তান প্রসব করান তারা।

মা আর সন্তান তখন কাদা-মাটিতে একাকার হয়ে যায়। গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় সকালে স্থানীয় এক চিকিৎসককে ডেকে এনে পাগলিকে স্যালাইন দেয়া হয়। ওই সময় পাগলির সন্তানকে দেখতে ভিড় জমান কয়েকশ নারী-পুরুষ।

জাহানারাসহ যেসব নারীর চেষ্টায় পাগলি ও তার সন্তান বেঁচে যায় তাদের প্রশংসা করেন স্থানীয়রা। অনেকেই পাগলির ধর্ষণকারীকে খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানান।

স্থানীয়রা জানান, পাঁচ-ছয় বছর ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীকে আরিচাঘাট এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে দেখেন তারা। রাতে পুরনো টার্মিনালে খোলা আকাশের নিচে ঘুমান তিনি।

খবর পেয়ে শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএফএম ফিরোজ মাহমুদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পাগলিকে উদ্ধার করে শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান তিনি। ইউএনও নবজাতকের নাম রাখেন সূর্য। সূর্যের পরিচর্যার জন্য হামিদা নামের এক নারীকে দায়িত্ব দেয়া হয়। এ সময় আর্থিক সহায়তাও দেন ইউএনও।

ফিরোজ মাহমুদ বলেন, স্থানীয়দের কাছে জানতে পারি নবজাতকের যখন জন্ম হয় তখন আকাশে সূর্য উঁকি দিচ্ছিল। সেই মুহূর্তটি ধরে রাখার জন্যই শিশুটির নাম রাখা হয়েছে সূর্য।

তিনি আরও বলেন, সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে শিশুটিকে ঢাকায় ‘ছোট মণি’ নবজাতক সেফহোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। সূর্যকে দত্তক নিতে হলে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিতে হবে।

Bootstrap Image Preview