Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

পঞ্চগড়ে এক মাসেও আটক হয়নি ধর্ষণ মামলার আসামী 

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২০ জুন ২০১৯, ১২:৫৮ PM
আপডেট: ২০ জুন ২০১৯, ১২:৫৮ PM

bdmorning Image Preview
প্রতিকী ছবি


পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে ১২ বছরের শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হলেও অভিযুক্তকে এখন পর্যন্ত আটক করতে পারেনি পুলিশ। 

উপজেলার সোনাহার ইউনিয়নের  হাজি প্রধানপাড়া এলাকার হুমায়ুন কবির প্রধান (৪৫) এর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ুয়া শিশুটি। শিশুটি একই এলাকার প্রতিবন্ধি মুছাব্বেল ইসলামের মেয়ে।

পরিবার ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, শিশুটির বড় বোন ও মা ঢাকায় চাকরি করেন। আর বাসায় প্রতিবন্ধী বাবাকে নিয়ে থাকেন চতুর্থ শ্রেণীতে পড়া শিশুটি। গত মে মাসের ৯ তারিখ সন্ধ্যায় শিশুটির বাবা বাড়িতে না থাকার সুযোগে প্রতিবেশি হুমায়ুন কবির প্রধান বাড়িতে শিশুটির মুখ চেপে ধরে ঘরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন।

এক পর্যায়ে শিশুটির চিৎকারে তার বাবা মুছাব্বেল, প্রতিবেশী আব্দুল আজিজ ও আয়েশা বেগম ঘটনাস্থলে পৌঁছলে অভিযুক্ত হুমায়ুন পালিয়ে যায়।

ঘটনার পর অভিযুক্ত হুমায়ুনের উকিল শ্বশুর ও একই এলাকার বাসিন্দা জমশের প্রধান, প্রতিবেশী আফজাল প্রধান ও আবু কালাম প্রধান বিষয়টি আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদানের মাধ্যমে আপোস করার জন্য শিশুটির পরিবারের উপর চাপ সৃষ্টি করেন বলে জানান মুছাব্বেল।

কিন্তু শিশুটির পরিবার মামলা করার সিদ্ধান্তে অটল থাকায় ঘটনার দুই দিন পর (১১ মে) স্থানীয় ইউপি সদস্য মজিদ প্রধানের সহযোগিতায় দেবীগঞ্জ থানায় হুমায়ুনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে (সংশোধি ২০১৩) মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ০৩।

শিশুটির বাবা মুছাব্বেল জানান, প্রতিবন্ধী হওয়ায় তার স্ত্রী ও বড় মেয়ে ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করে পরিবারের খরচ বহন করেন। আর ছোট মেয়ে বাড়িতে থেকে তার দেখাশুনা করেন ও স্থানীয় বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়েন। হুমায়ুন তার (মুছাব্বেল) মেয়ের প্রতিবেশী চাচা হয়ে এরকম ঘৃণ্য কাজ করতে পারেন তা কল্পনাতেও ভাবতে পারেন নি জানান মুছাব্বেল।

মামলার পর থেকে হুমায়ুনের আত্মীয় ও স্থানীয় প্রভাবশালী জমশের, আফজাল ও আবু কালাম মামলা তুলে নিতে ভীতি প্রদর্শন ও চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রেখেছেন অভিযোগ করেন মুছাব্বেল।

এদিকে,  ঘটনার এক মাস অতিবাহিত হলেও আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন মুছাব্বেল। আসামী গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত তাই শঙ্কায় থাকতে হচ্ছে তাকে ও তার মেয়ে শিশুটিকে।

তবে হুমায়ুনের উকিল শ্বশুর জমশের প্রধান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মামলা তুলে নিতে আমি, আফজাল প্রধান ও কালাম প্রধান কোন ভাবেই মামলা তুলে নিতে ভিকটিমের পরিবারের উপর চাপ সৃষ্টি করিনি।

এই বিষয়ে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা দেবীগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক (এস আই) সাইদুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সাথে হুমায়ুনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। ধর্ষণের শিকার শিশুটির মেডিকেল রিপোর্ট এখনো আসেনি। আশা করছি কয়েক দিনের মধ্যেই মেডিকেল রিপোর্ট পেয়ে যাব। মেডিকেল রিপোর্ট হাতে পেলেই চার্জশিট প্রদান করা হবে।

এক মাসেও অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার না হওয়ার পেছনে পুলিশের দায়িত্বে অবহেলা রয়েছে কিনা জিজ্ঞাসা করলে মি. সাইদুল জানান, এটা সত্য নয়। হুমায়ুনকে গ্রেফতারের জন্য আমার সোর্স কাজ করছে। কিন্তু ঘটনার পর থেকে হুমায়ুনের কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।

দেবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রিতু আক্তার জানান, বিষয়টি আমি অবগত ছিলাম না। তবে প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা জানতে পারলাম। ধর্ষকের কোন ক্ষমা নেই। সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তাকে এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ করেছি। তিনি শীঘ্রই মামলার চার্জশিট প্রদান করবেন বলে জনিয়েছেন।

 

 

Bootstrap Image Preview