Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

ডালে থাকা পাখিদের মল-মূত্রে ক্যাম্পাস নষ্ট হয়, তাই গাছ কাটা হয়: বুয়েট শিক্ষক

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৯ জুন ২০১৯, ১০:১২ PM
আপডেট: ১৯ জুন ২০১৯, ১০:১২ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


গাছে থাকা পাখিদের মল-মূত্রে ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট হয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষকরা। এদিকে নির্বিচারে গাছ কাটা বন্ধসহ ১৬ দফা দাবিতে বুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বুধবার ৫ম দিনে গড়িয়েছে।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষকরা এমন মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হল- বুয়েট গেটের জন্য সিভিল ও আর্কিটেকচার বিভাগের বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের নিয়ে কমিটি গঠন করতে হবে এবং ডিজাইনের জন্য ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে প্রতিযোগিতার আয়োজন করার অফিসিয়াল নোটিশ প্রদান করতে হবে। বিতর্কিত নতুন ডিএসডব্লিউকে অপসারণ করে ছাত্রবান্ধব ডিএসডব্লিউ নিয়োগ দিতে হবে।

ছাত্রী হলের নাম ‘সাবেকুন নাহার সনি হল’ হিসেবে নামকরণ করতে হবে। ১০৮ ক্রেডিট অর্জনের পর ডাবল সাপ্লি দেয়ার যে পদ্ধতি গত টার্মে চালু হয়েছিল, সেটা পুনর্বহাল রাখতে হবে। আবাসিক হলগুলোর অবকাঠামোগত যেসব কাজ ভিসি অফিসে আটকে আছে, সেটা ক্লিয়ার করতে হবে। সিয়াম-সাইফ সুইমিংপুল কমপ্লেক্স স্থাপনের জন্য ভিসির সিগনেচারে নোটিশ প্রদান করতে হবে। নির্মাণাধীন টিএসসি ভবন ও এসএমই ভবনের কাজ শুরু করতে হবে।

১৬ দফার অন্য দাবিগুলো হল- নিয়মিত শিক্ষক মূল্যায়ন প্রোগ্রাম চালু করতে হবে। বুয়েটের যাবতীয় লেনদেনের ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়ার অফিসিয়াল উদ্যোগ নিতে হবে।

বিনা বিচারে ক্যাম্পাসের গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে, কেন গাছ কাটা হয়েছে, সেটির ব্যাখ্যা দিতে হবে, যতগুলা গাছ কাটা হয়েছে তার দ্বিগুণ গাছ ভিসিকে উপস্থিত থেকে লাগাতে হবে। গবেষণায় বরাদ্দ বাড়াতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক মেইল আইডি প্রদান করতে হবে। বুয়েট ওয়াইফাই’র আধুনিকায়ন করতে হবে।

জিমন্যাশিয়ামের আধুনিকায়ন করতে হবে। বুয়েট মাঠের উন্নয়ন করতে হবে। পরীক্ষার খাতায় রোলের পরিবর্তে কোড সিস্টেম চালু করতে হবে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এসব দাবির বিষয়ে বারবার বলা হলেও প্রশাসন একেবারেই ভ্রুক্ষেপ করছে না। তাই ক্লাস বর্জন করে রাজপথে নেমেছেন তারা।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা দীর্ঘ দিন ধরে প্রশাসনের কাছে এ দাবিগুলো জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু কোন সময়ই প্রশাসন তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়নে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। যদিও সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করে বিবৃতি প্রদান করেছে বুয়েটের শিক্ষক সমিতি।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী অনির্বাণ বলেন, আন্দোলনের তৃতীয় দিন শিক্ষকরা ও ডিন স্যার আমদের আশ্বাস দিয়েছিলেন যে আমাদের দাবিগুলো মানা হবে এ বিষয়ে তারা ভিসি স্যারের সাথে কথা বলেছেন। কিন্তু হাস্যকর বিষয় হচ্ছে এটা তারা আমাদের দাবিগুলোর বিপরীতে যুক্তিহীন কিছু কথা বলেছেন । তারা বলেছেন যে, গাছের ডাল পরে নাকি গাড়ি ভেঙে যায় এবং গাছে থাকা পাখিদের মল-মূত্রে নাকি ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট হয় তাই তারা গাছ কেটে ফেলেছে।

বুধবার সকাল ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যায়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে জড় হতে থাকেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এরপর তারা শহীদ মিনার থেকে একটি মিছিল নিয়ে ভিসির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে দেন। দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত তাদের এই আন্দোলন চলে।

এর আগে গত মঙ্গলবার দাবি পূরণের জন্য আন্দোলনকারীদের বেঁধে দেওয়া তিন দিনের আল্টিমেটাম শেষ হওয়ায় ভিসি কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। এদিন তারা পলাশি ও বকশীবাজার মোড়ে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র বিশ্ববিদ্যায়ের মেকানিক্যাল বিভাগের সমাপনী বর্ষের ছাত্র হাসান সরওয়ার সৈকত বলেন, আমরা এখনো শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি আমাদের দাবি মেনে না নেয় তাহলে আমরা আরও কঠিন আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।

বুধবারের আন্দোলন শেষে সৈকত বলেন, বৃহস্পতি ও শুক্রবার আমাদের সাপ্তাহিক ছুটি। এ কারণে এ দুদিন আন্দোলন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী শনিবার সকাল থেকে আবারও আমরা আন্দোলনে নামব। এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কেউ যোগাযোগ করেনি বলে জানান।

আন্দোলন দাবিসমূহের ব্যাপারে জানার জন্য বুয়েটের ভিসি প্রফেসর ড. সাইফুল ইসলাম একাধিকবার মুঠো ফোনে ফোন দেওয়া হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

Bootstrap Image Preview