মাদারীপুর জেলার চরাঞ্চল অধ্যষিত কালকিনি উপজেলার কয়ারিয়া ইউনিয়নের ৩টি গ্রামে শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদককারবারী মোশাররফ ফকির ও তার বাহিনীর অত্যাচারে আতংকে নির্ঘুম রাত কাটছে চর-আলিমাবাদ, সেলিমপুর ও রামচর গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষের।
ভয়ে স্থানীয় একটি মসজিদ ও আত্মীয়দের বাড়ীতে আশ্রয় নিয়ে কোনো রাত্রি যাপন করছেন তারা।
জানা গেছে, বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত শীর্ষ মাদককারবারী, অবৈধ অস্ত্রধারী মোশাররফ ফরিক ক্ষমতাশীন রাজনৈতিক ব্যক্তির মদদে এখন নব্য আওয়ামী লীগ সেজে এলাকায় তারা এ সব অপকর্ম করে যাচ্ছে। সম্প্রতি অস্ত্র, হত্যা ও চুরির মামলায় জামিনে ছাড়া পেয়ে এলাকায় ফিরে পুনরায় ত্রাস সৃষ্টি করেছে।
গত তিন দিনে ঐ এলাকার প্রায় ৫০-৬০ বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে মোশাররফ বাহিনী। মোশাররফের ভয়ে গ্রাম ছেড়ে শহরে অন্যত্র বসবাস করছে কালাম ফকির, ফিরোজ ফকির, বাবুল ফকির, রাসেল ফকির, সবুজ হাওলাদার, জাকির ফকির, ইব্রাহিম শিকদার, আকবার ফকির, সানাউল ফকির, দুলাল ফকির, মাইনুদ্দিন হাওলাদার ও নুরুল আমিন ফকিরসহ প্রায় ৫০ টি পরিবার।
মোশাররফ ও তার বাহিনীর দাপটে চর আলিমাবাদ গ্রামের মানুষ নির্ঘুম রাত পাড়ি দিচ্ছে। এই গ্রামের শতাধিক কৃষক পরিবার সন্ত্রাসীদের ভয়ে আতংকে জীবন-যাপন করছেন। চর আলিমাবাদে বাড়ী দখল, পুকুর দখর, বসত বাড়ী-ঘর ভাংচুর, নগদ অর্থ ও আসবাবপত্র লুটপাট, হুমকি-ধামকি, মারপিট গ্রাম থেকে বেড় করে দেয়া সহ বিভিন্ন প্রকার অন্যায় ও অত্যাচারের সাথে জড়িত এই মোশাররফ বাহিনী।
মোশাররফ ফকিরের অন্যায়, অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষার জন্য গ্রামের শান্তি প্রিয় সাধারন মানুষগুলো ও ভুক্তোভোগী পরিবার রাজনৈতিক ব্যক্তি ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে প্রতিকার চেয়েও পাচ্ছে না।
ভুক্তোভোগী ইব্রাহিম শিকদার জানান, চর আলিমাবাদ গ্রামের শতাধিক মানুষ মাদারীপুর জেলার পুলিশ সুপারের নিকট অভিযোগ করেন এবং এই শীর্ষ সন্ত্রাসী মোশাররফ ফকিরের নিকট থেকে অন্যায় ও অত্যাচারের প্রতিকার চান।
কৃষকদের অভিযোগ, এবার নানা প্রতিকুলতা সত্ত্বেও আমরা কৃষকরা ধানের ভালো ফলন পেয়েছি। এ সব গৃহস্থের বাড়ি লুটপাট করার জন্য পাঁয়তারা চলছে। তাছাড়া গ্রামে বাস করতে হলে তাদের মোটা অংক চাঁদা দিতে হবে। চাঁদা না দিলে তাদের প্রান ণাশের হুমকিও দেওয়া হয়।
বিভিন্ন তথ্য মতে, মোশাররফ বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্যের জন্য এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে আসছে। চর আলিমাবাদ গ্রামের অনেক কৃষক ও সাধারন শান্তি প্রিয় পরিবারগুলো তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা করলেই তাদের বাড়িঘর লুটপাট ও প্রানে মেরে ফেলার হুমকি এবং গ্রাম ছাড়ার করে আসছে।
সম্প্রতি মোশাররফ ফকিরকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরন করলে এলাকায় শান্তিপূর্ন অবস্থা বিরাজ করছিল।
চর আলিমাবাদ গ্রামের কৃষক জাকির ফকির বলেন, এলাকার হাজার হাজার মানুষ তাদের অপকর্মের সাক্ষী। তাদের অত্যাচারে গ্রামের মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমরা এখন গ্রাম ছাড়া। ওদের ভয়ে কেউ গ্রামে থাকতে পারছে না।
কালকিনির থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মোফাজ্জেল হোসেন জানান, এলাকা দূর্গম হওয়ার পরেও আমাদের অভিযান অব্যাহত রেখেছি। পুলিশ ওই এলাকায় পৌছানোর আগেই তারা খবর পেয়ে পাশ্ববর্তী উপজেলার চলে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ফিরে এলে আবারো তারা এলাকায় ফিরে এসে এলাকাবাসীর উপর চড়াও হয়।