Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

দুই শিক্ষকের ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রী, এলাকায় তোলপাড়

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ জুন ২০১৯, ১২:১২ PM
আপডেট: ১৬ জুন ২০১৯, ১২:১২ PM

bdmorning Image Preview
প্রতীকী ছবি


সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে দুই শিক্ষকের ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা স্কুলছাত্রী। এই ঘটনা চাপা দেওয়ার জন্য টাকার বিনিময়ে ঘটনাটি শেষ করার চাপ দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

পারিবারিক সূত্র থেকে জানা গেছে, জগন্নাথপুরের খাসিলা পূর্বপাড়া গ্রামের ওই কিশোরী স্থানীয় আটপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। পাশাপাশি বাড়ি বাপ্পা ও কিশোরীর। সৈয়দ আইডিয়াল গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষক মিশন সেন বাপ্পা ওই কিশোরীকে বাড়িতে প্রাইভেট পড়াতো।

প্রাইভেট পড়ানোর সুবাধে বাপ্পা প্রায় সময় মেয়েটিকে কু-প্রস্তাব দিতো। এমনকি প্রেমেরও আবেদন জানায়। কিন্তু ওই কিশোরী কখনোই বাপ্পার প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি।

গত ৪ মার্চ ওই কিশোরী জেএসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন করতে স্কুলে যায়। স্কুল থেকে ফেরার পথে কলকলি বাজারের কাছে ব্রিজের ওপর ওঠামাত্র বাপ্পা কাউছার ড্রাইভারের সিএনজি অটোরিকশাতে জোরপূর্বক তুলে নেয়।

ছাতক উপজেলার চানপুরে তার বন্ধু আব্দুস সামাদ আজাদের বসতঘরের দোতলায় প্রথমে বাপ্পা এবং পরে আজাদ ওই কিশোরীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। প্রায় তিন ঘণ্টা তারা ওই ঘরে বন্দি রেখে ধর্ষণের পর মোবাইল ফোনে সেটির ভিডিও ধারণ করে। এরপর আবার সিএনজি অটোরিকশাযোগে বাপ্পা তাকে জগন্নাথপুরে নিয়ে আসে।

পরে নিজের বাসায় গিয়ে ওই কিশোরী ধর্ষণের কথা তার পরিবারের কাছে জানায়। এঘটনায় থানায় মামলা করে কিশোরীর পরিবার।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, এ ঘটনার পর ধর্ষিতার পরিবার আইনের আশ্রয় নিতে গেলে স্থানীয় কয়েকজন বিষয়টি সালিসের মাধ্যমে দেখে দেয়ার কথা বলেন।

এ সময় তারা ধর্ষিতার পিতার হাতে ১০ হাজার টাকা তুলে দিয়ে কাউকে বিষয়টি না জানানোর জন্য বলেন। এরপর থেকে তারা বিষয়টি নিয়ে টালবাহানা করে।

এদিকে, গত ৭ মে ওই কিশোরী হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ সময় তাকে জগন্নাথপুর থানা হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার পরীক্ষা করে জানান, ওই কিশোরী ১০ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা।

পরবর্তীতে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ধর্ষিতার পিতাকে ডেকে নিয়ে গর্ভপাত ঘটানোর জন্য ১১ হাজার টাকা দেন। এতে রাজি না হলে তারা হুমকিও দেন ধর্ষিতার পিতাকে। এমন অভিযোগ উঠেছে কলকলি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিপাল দেবসহ স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে।

তবে কলকলি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিপাল দেব জানিয়েছেন, তিনি এ ঘটনা কিংবা মামলার ব্যাপারে কিছুই জানেন না। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দেয়া হচ্ছে তা সত্য নয়।

এ ঘটনায় গত ২৪ মে জগন্নাথপুর থানায় কিশোরীর পিতা বাদী হয়ে ধর্ষণ মামলা করেন। মামলায় আসামি করা হয় খাসিলা পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মিশন সেন বাপ্পা, ছাতকের চানপুরের আব্দুল সামাদ আজাদ ও গাড়ি ড্রাইভার কাউছারকে।

স্থানীয় জগন্নাথপুর আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন, বিষয়টি এলাকার সাংসদ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নানকে জানানো হয়েছে। ধর্ষিতা পরিবারকে আইনি সহায়তা দিতে তিনি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।

পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি বাপ্পা ও গাড়ি চালক কাউছারকে গ্রেফতার করেছে।

শনিবার জগন্নাথপুর থানার ওসি (তদন্ত) নব গোপাল জানিয়েছেন, প্রধান আসামি বাপ্পা ঘটনা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। সিএনজি অটোরিকশাযোগে মেয়েটিকে নিয়ে সে ও আজাদ মিলে ধর্ষণ করে বলে জানায়। এখন দুই আসামি কারাগারে।

আব্দুস সামাদ আজাদ নামের আরেক স্কুলশিক্ষক পলাতক। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

Bootstrap Image Preview