Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কোটা পদ্ধতি না থাকলে আন্দোলনকারীদের একজনও চাকরি পাবে না: মোস্তাফা জব্বার

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৫ জুন ২০১৯, ১০:০০ PM
আপডেট: ১৫ জুন ২০১৯, ১০:০০ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


কোটা পদ্ধতি না থাকলে, আন্দোলনকারীদের একজনও চাকরি পাবে না বলে মন্তব্য করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশই একমাত্র দেশ, যে দেশ একশো বছর পর কী হবে, তা জানে। সেই পরিকল্পনা এখনই গ্রহণ করা হয়েছে। ২১০০ সালে কী হবে, সেটি একমাত্র বাংলাদেশই বলতে পারবে।

শনিবার বেলা পৌনে ১টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় প্রেসক্লাবে বৃহত্তর ময়মনসিংহ যুব সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা ও ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সরকার ২০৪১, ২০৭১ ও ২১০০ এই তিনটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। পৃথিবীর বুকে একমাত্র দেশ বাংলাদেশ, যেখানে এমন স্বপ্নের পরিকল্পনা নেওয়া হলো। শেখ হাসিনার মতো এমন রাষ্ট্রনায়ক বিশ্বের কেউ পায়নি। এটা বাংলাদেশের মানুষের চরম সৌভাগ্য।

কোটা আন্দোলনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, কিছু দিন আগে কোটা সংস্কার আন্দোলন করলো কিছু ছাত্র-ছাত্রী। তারা আসলে জানেই না, সরকার যে পরিমাণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে, তা আদৌ সীমিত না। এখন প্রতিবছর প্রচুর সরকারি চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এরা আসলে বুঝতে পারেনি। তারা মনে করছিলো, কোটা সংস্কার করলেই চাকরি পাবে।

তিনি আরো বলেন, কোটা যদি না থাকে, আন্দোলনকারীদের একজনও চাকরি পাবে না, এটা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি। বর্তমান সরকার যেভাবে চলছে, ৫ বছর পর সেভাবে চলবে না। এখন যারা চাকরিতে প্রবেশ করবেন, তাদের ডিজিটালাইজড মনমানসিকতায় ও দক্ষ হয়েই প্রবেশ করতে হবে। ডিজিটাল পদ্ধতি না জানলে চাকরি হবে না।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের মতো কোনো উন্নত দেশ খোঁজে পাবেন না। বাংলাদেশের জিডিপির ধারে কাছেও নেই কোনো দেশ। এমন কি যে পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশ হলো, সেই পাকিস্তানেরও সেই যোগ্যতা নেই।

মন্ত্রী বলেন, এখন ধান কাটার তথা কৃষি শ্রমিক খোঁজে পাওয়া যায় না। আমি যদি ময়মনসিংহ অঞ্চলের মানুষের কথাই বলি, তারা চিটাগং চলে যায়, সেখানকার কল-কারখানায় চাকরি করে। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কাজ করে ৮০০ টাকা পায়। আবার বিকেল ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কাজ করে ৬০০ টাকা পায়। মাস শেষে ৩৫-৩৬ হাজার টাকা পায়, দেশে কর্মসংস্থান আছে বলেই তো এতো টাকা পায়। এই যে পরিবর্তন হয়েছে, সেটা উপলব্ধি করতে হবে।

মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার দুই মাস পর স্পেনের বার্সেলোনায় যাওয়ার কথা উল্লেখ করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমি যখন টার্কিশ এয়ারলাইন্সে করে বার্সেলোনা যাই, তখন প্লেনে থাকতেই ১০টি ফাইল সই করার জন্য আমার কাছে পাঠানো হয়। সেগুলো প্লেনে বসেই সই করি। এখন শতকরা ৯০ শতাংশ ফাইল ডিজিটাল পদ্ধতিতে সই করি। কাগজের ফাইল আর দেখি না। এটা কয়েক বছরে উধাও হয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রীও দুই-একটি ফাইল ছাড়া কোনো মন্ত্রণালয়ের কোনো ফাইল কাগজে সই করেন না।

পাঁচবছর পরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা আর চক-ডাস্টারে সীমাবদ্ধ থাকবে না। শিক্ষকদের ডিজিটাল দক্ষতা না থাকলে ক্লাসে গিয়ে শিক্ষার্থীর কাছে লজ্জা পাবেন, তখন শিক্ষকেরা ক্লাসে গিয়ে পড়া যদি বলে দিতে না পারেন, ছাত্ররাই বলে দেবে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা বক্তৃতা দিতে পারে না। এটা প্র্যাক্টিস করে না। মৌখিক পরীক্ষায় গেলে কাঁপন শুরু হয়ে যায়। তাই বক্তৃতা প্র্যাক্টিস করতে হবে। আমাদের ছেলে-মেয়েরা শুধু চায়ের কাপে জম্পেশ আড্ডা জমাতে পারে।

তবে নারীর ক্ষমতায়ন ও উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, কিছুদিন আগে ডাক বিভাগের একটি অনুষ্ঠানে যাই, সেখানে দেখি আমার চারপাশে একই ইউনিফর্মের নারীরা বসে আছেন। আমি তাদের জিজ্ঞেস করলাম, ওরা কারা। একজন বললো স্যার, ওরা ডাক বিভাগের গাড়ি চালক। আমি তখন বিস্মিত হই। ডাক বিভাগে ৫০ জন নারী গাড়ি চালক। এ সংখ্যা শতকে পৌঁছাবে।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী মোজাফফর হোসেন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি মোল্লা জালাল, বৃহত্তর ময়মনসিংহ যুব সমিতির সভাপতি মুতাসিম বিল্লাহ ফারুক ও সাধারণ সম্পাদক রুজিনা সুলতানা প্রমুখ।

Bootstrap Image Preview