Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

র‌্যাবের অভিযানে ৬ মাদক ব্যবসায়ী আটক

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২ জুন ২০১৯, ০১:০৭ PM
আপডেট: ১২ জুন ২০১৯, ০১:০৭ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


গোয়েন্দাসূত্রে পাওয়া তথ্য ওপরে ভিত্তি করে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানাধীন আব্দুল্লাহপুর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উত্তরা মডেল টাউনের চুংহুয়া অ্যালমিনিয়াম ইন্ড্রাস্ট্রি লি. এর সামনে কক্সাবাজার থেকে গাজীপুরগামী  মিয়ামী পরিবহনের বাসে অভিযান পরিচালনা করে সংঘবদ্ধ মাদক কারবারি চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব ১।

আকটকৃতরা হচ্ছেন- মো. জুবায়ের আহম্মেদ (২৮), মো. সাইদুল ইসলাম (২৩), মো. মিঠু (২৮), মো. আনোয়ার (৩২), মো. আসাদ হোসেন (৩৫) ও মো. খায়রুল ইসলাম (২৮)।র‍্যাব ১ এর অপারেশন অফিসার সহকারী পুলিশ সুপার সুজয় সরকারের নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।

এ সময় ধৃত আসামিদের পেট থেকে ৪০৫০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয় ও ৭টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা একটি সংঘবদ্ধ মাদক কারবারি চক্রের সদস্য। তারা উক্ত মাদকের চালানটি অভিনব কায়দায় পায়ুপথে এবং মুখের মধ্য দিয়ে পেটের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে টেকনাফ থেকে নিয়ে আসে। তারা ৫০টি করে ইয়াবার একটি ছোট প্যাকেট তৈরি করে নারিকেল তেল দিয়ে ওই প্যাকেট পিচ্ছিল করে বিশেষ কৌশলে পায়ুপথে পেটের ভেতরে প্রবেশ করায় আবার কেউ ইয়াবার প্যাকেট কলার মধ্যে ঢুকিয়ে মুখে দিয়ে পেটের ভেতরে প্রবেশ করায়।

তারা আরো জানায়, টেকনাফের মাদক কারবারি জয়নাল এর নিকট হতে মাদকের চালনটি গাজীপুরের সালনার আটক মাদক কারবারি জুবায়ের এর কাছে হস্তান্তর করার কথা ছিল। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। চক্রটি ইতিপূর্বে একাধিকবার টেকনাফ থেকে মাদকের চালান গাজীপুর এবং রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করেছে।

আসামি জুবায়েরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে ২০০৮ সালে গাজীপুরের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হতে বিবিএ পাস করে। সে মাদকাসক্ত এবং পরবর্তীতে সে মাদক কারবারের সাথে জড়িয়ে পড়ে। সে এই মাদক কারবারি চক্রের মূল হোতা। সে আসাদ, আনোয়ার, সাইদুর, মিঠুদের মাধ্যমে টেকনাফ থেকে মাদকের চালান সংগ্রহ করে নিয়ে এসে গাজীপুরসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করত।

আটক আসামি আসাদ জানায়, সে গাজীপুরে একটি গার্মেন্টে চাকরি করে। চাকরি করার পাশাপাশি সে টেকনাফ হতে মাদকের চালান পায়ুপথে বিশেষ কৌশলে পেটের ভেতরে প্রবেশ করে নিয়ে এসে জুবায়ের এর নিকট হস্তান্তর করত। জুবায়ের চালান প্রতি তাকে ১০,০০০/- টাকা দিত। সে ইতিপূর্বে ৩-৪টি ইয়াবার চালান এনেছে বলে জানায়। তার অপর সহযোগী আনোয়ার ১০/১৫ বছর যাবৎ গাজীপুরে লেগুনা চালায়। লেগুনা চালানোর পাশাপাশি সে টেকনাফ হতে ইয়াবার চালান নিয়ে এসে জুবায়ের এর নিকট হস্তান্তর করত।

আসামি সাইদুর জানায়, সে গাজীপুরের আজিমুদ্দীন কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। সে জুবায়ের এর মাধ্যমে মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়ে এবং সে একজন মাদকাসক্ত। সে আসাদ, আনোয়ার, মিঠুর সাথে টেকনাফ হতে পায়ুপথে মাদকের চালান গাজীপুরে নিয়ে আসত। চালান প্রতি জুবায়ের তাকে ১০,০০০/- টাকা করে দিত। ধৃত অপর আসামি মিঠু গাজীপুরের সালনা এলাকার একটি সেলুনে কাজ করে। সে সেলুনে কাজ করার পাশাপাশি টেকনাফ হতে মাদকের চালান নিয়ে আসত। সে নিজে মাদকাসক্ত এবং সালনা এলাকায় মাদক বিক্রি করত।

খাইরুলকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গাজীপুরের সালনা এলাকায় সে একটি অটো গ্যারেজে কাজ করে। গ্যারেজে কাজ করার পাশাপাশি সে মাদক বিক্রি করত। টেকনাফ হতে মাদকের চালান সংগ্রহ করার পর মাদক কারবারিরা তার নিকট ইয়াবা জমা রাখত। ইয়াবা রাখার বিনিময়ে তাকে প্রতি পিস ইয়াবার জন্য ৫/- টাকা করে দিত।

উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। এই পর্যন্ত র‌্যাব বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি অবৈধ মাদক উদ্ধার করে জনমনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

মাদকমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানের ধারাবাহিকতায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটলিয়ন ১ এর একটি বিশেষ আভিযানিক দল গোয়েন্দা সূত্রে জানতে পারে যে, বেশ কিছুদিন ধরে একটি মাদক কারবারি চক্র দেশের বিভিন্ন স্থান হতে মাদকদ্রব্য কৌশলে রাজধানীতে নিয়ে আসছে। র‌্যাব ১ এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি মাদকের বড় চালান আটক করতে সক্ষমও হয়েছে। চক্রটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দেওয়ার জন্য নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করছে। কখনো যাত্রীবাহী বাসে করে, কখনো পচনশীল মৌসুমি শাক-সবজি বহনকারী ট্রাকে করে, কখনো ধান, ভুট্টা বহনকারী গাড়িতে করে, কখনো ব্যক্তিগত গাড়িতে করে মাদকদ্রব্য রাজধানীতে নিয়ে আসছে। গোপান সূত্রে জানা যায়, টেকনাফ হতে মাদকদ্রব্য ইয়াবার একটি বড় চালান গাজীপুরের উদ্দেশে আসছে। র‌্যাব ১ মাদক কারবারি চক্রটিকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।

আটককৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

 

Bootstrap Image Preview