নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় শারীরিক প্রতিবন্ধী আবুল কাশেমের ৪শ ১৩টি হাঁস বিষ দিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। গত ৯ জুন বিকালে উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নের ছবিলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি তাৎক্ষণিক পুলিশকে জানান আবুল কাশেম।
এসব হাঁসের দেয়া ডিমের উপার্জনে প্রতিবন্ধী আবুল কাশেম সংসার চালাতেন। মরে যাওয়া হাঁসের বাজার মূল্য প্রায় আড়াই লাখ টাকা ছিল বলে জানান তিনি।
ঘটনার পর এ ব্যাপারে হাঁসের খামার মালিক আবুল কাশেম জানান, রবিবার সকালে প্রতিদিনের মতো তার ১৭ শ হাঁসকে হাওড়ের পরিত্যক্ত খাবার খেতে ছাড়া হয়েছিল। তখন নিজের বাড়ির খামার থেকে বেরিয়ে পাশেই অন্যের একটি পরিত্যক্ত ধান ক্ষেতে কিছুক্ষণ খাবার খেয়েছে অধিকাংশ হাঁস। খাবার খাওয়ার কয়েক মিনিট পরেই হাঁসগুলো মারা যেতে শুরু করে।
আবুল কাশেমের ধারণা, ওই ধান ক্ষেতে কেউ হয়ত শত্রুতাবশত করে বিষ দিয়ে রেখেছিল। এজন্য হাঁসগুলো মারা যায়।
উপার্জনের অবলম্বন হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়া কাশেমের পাশে দাঁড়িয়েছে ছাত্রলীগ। সংগঠনটির নেতারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাকে ৮০০টি হাঁস কিনে দেয়ার।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী তার ফেইসবুকে লিখেছেন, ‘নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নের ছবিলা গ্রামের হতদরিদ্র আবুল কাশেম। শারীরিক প্রতিবন্ধী কাশেম ভাই কায়িক শ্রমের কাজ করতে পারেন না বলেই মোটা সুদে ঋণ করে হাঁসের খামার করেছিলেন ভাগ্য ফেরানোর আশায়। বিধি বাম! দুর্বৃত্তদের প্রয়োগ করা বিষে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে তার বেঁচে থাকার অবলম্বন প্রায় ৮০০ হাঁস!’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ পরিবার অসহায় আবুল কাশেম ভাইয়ের পাশে দাঁড়াব। সারা দেশের লাখো লাখো ছাত্রলীগ কর্মীর মাঝে আমরা ৮০০ কর্মী যদি একটি করে হাঁসের দায়িত্ব নেই, কাশেম ভাইয়ের পরিবার আবার বাঁচার অবলম্বন পাবে।’
‘আমি আজ কথা বলেছি তার সাথে, ইনশাআল্লাহ আমরা সবাই মিলে কাশেম ভাইয়ের পাশে থাকবো। দ্রুতই ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তাকে ৮০০ হাঁস কিনে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য।’
সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর ঘোষণার পর মঙ্গলবার বিকেলে আবুল কাশেমের বাড়িতে গিয়ে ব্যক্তিগত উদ্যোগে তার হাতে ২০০ হাঁসের দাম ২৮ হাজার টাকা তুলে দেন জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোবায়েল আহমদ খান।
সোবায়েল আহমদ খান বলেন, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ভাইয়ের স্ট্যাটাস দেখে আমি তার সঙ্গে কথা বলি। রাব্বানী ভাইয়ের নির্দেশে তার পক্ষ থেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে আজ (মঙ্গলবার) বিকেলে আবুল কাশেমের বাড়িতে গিয়ে ২০০ হাঁসের দাম ২৮ হাজার টাকা দিয়ে এসেছি।
এ ধরনের কাজে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বানও জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে খামার মালিক আবুল কাশেম জানান, ছাত্রলীগ নেতারা আমাকে হাঁস কেনার টাকা দিয়েছেন। আমি এখন ছেলে-মেয়ে নিয়ে চলতে পারব।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সৈয়দ আল রাকিব, সদস্য সাইফুল ইসলাম শুভ্র, মো. করিম, ওবায়দুর রহমান খান, সাইফুল ইসলাম লালন, জাহিদ হাসান প্রান্ত, তানভীর হাসান বাধন, জাহিদুল হাসান জিকু, তাকবির হোসেন, সাদ সাদেক, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মো. মুরসালিন, রাকিব তুষার, মাহফুজুর রহমান পিয়াস, সানোয়ার সাকলাইন, সারিমূল ইসলাম সানি, সানিমূল ইসলাম তুহিন প্রমুখ।