Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

‘নামমাত্র ধান সংগ্রহ করে কৃষকদের সঙ্গে তামাশা করছে সরকার’

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৫ মে ২০১৯, ০৬:২৮ PM
আপডেট: ২৫ মে ২০১৯, ০৬:২৮ PM

bdmorning Image Preview


ঠাকুরগাঁওয়ে ধানের ন্যায্যমূল্যের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় কৃষকরা। ধান ও ভূট্টাসহ সকল কৃষি ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণ, অবিলম্বে প্রতিটি ইউনিয়নে সরকারি ক্রয় কেন্দ্র চালু করে খোদ কৃষকদের কাছ থেকে ১০৪০ টাকা মণ দরে ধান ক্রয়ের দাবি জানিয়েছেন তারা।

শনিবার (২৫ মে) সকাল ১১টা থেকে ঠাকুরগাঁও খোচাবাড়ী বাজারে ঢাকা-ঠাকুরগাঁও মহাসড়কে অবরোধ করে কর্মসূচি পালন করে কৃষকরা। এতে অংশ নিতে দেখা গেছে ছাত্র নেতাদেরও।

বিক্ষোভ ও প্রতিবাদী সমাবেশ চলাকালীন সময়ে বক্তব্য রাখেন, বাসদের (মার্কসবাদী) জেলা সমন্বয়ক মাহাবুব আলম রুবেল, থানা সিপিবি সভাপতি আহসানুল হাবিব বাবু, সংহতি বক্তব্য রাখেন জেলা উদীচী সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানুল হক রিজু প্রমুখ।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও ধানের ন্যায্যমূল্য থেকে কৃষক বঞ্চিত। ব্যবসায়ীবান্ধব সরকারি কৃষি নীতিই আজ কৃষকের দুর্দশার মূল কারণ। সরকার প্রতি কেজি ধানের মূল্য ২৬ টাকা নির্ধারণ করলেও বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৮-১২ টাকা দরে। যা দিয়ে কৃষকদের উৎপাদন খরচ উঠা তো দূরের কথা, বিঘা প্রতি ৩-৫ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।

বক্তারা আরও বলেন, সরকার উন্নয়নের বুলি বলছে। দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে, অথচ সরকারের সব সুবিধা থেকে কৃষকরা বঞ্চিত। ধানের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে ক্রমাগত লোকসান করেও কৃষক বাম্পার ফলন ফলিয়ে যাচ্ছে। যারা ১৬ কোটি মানুষের মুখে অন্ন তুলে দিচ্ছে তাদেরকে থাকতে হচ্ছে অনাহারে-অর্ধাহারে। যারা দেশের অর্থনীতির ভিত্তি মজবুত করছে, অথচ তাদের জীবনের ভিত্তিটাই আজ ধ্বংসের মুখে।

বক্তরা বলেন, কৃষক চাল উৎপাদন করে না, অথচ সরকার চাল সংগ্রহ করে বেশি, তারা ধান সংগ্রহ কম করে। নামমাত্র ধান সংগ্রহ করে কৃষকদের সঙ্গে তামাশা করছে।

বক্তারা ঠাকুরগাঁওয়ের উদাহরণ দিয়ে বলেন, এবার ঠাকুরগাঁওয়ে বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লক্ষ ৬৯ হাজার ৪৮১ মেট্রিক টন। সরকার চাল সংগ্রহ করবে ৩০ হাজার ৬১৯ মেট্রিক টন, যা মোট উৎপাদনের ১২.২৭%। অন্যদিকে ধান সংগ্রহ করবে ১ হাজার ৮৫৭ মেট্রিক টন, যা মোট উৎপাদনের ০.৫০%।

সারা দেশের মতো ঠাকুরগাঁওয়ের হিসাব বলে দেয়, সরকারের কৃষি নীতি কতটা কৃষিবান্ধব। ক্রমাগত ধানসহ কৃষি ফসলের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে কৃষক আজ ঋণগ্রস্থ, জমি হারিয়ে নিঃস্ব। গত ৪৭ বছরে ৫০ ভাগ কৃষক জমি হারিয়ে ভূমিহীনে রূপান্তর হয়েছে। জমি থেকে উচ্ছেদ হয়ে বাঁচার তাগিদে বিদেশ যেতে গিয়ে ভূমধ্যসাগরে ডুবে মরছে। থাইল্যান্ডের ঘন জঙ্গলে গণ কবরে ঠাঁই হচ্ছে।

বক্তারা আরো বলেন, দেশের উৎপাদিত ফসলের কমপক্ষে ৫০ ভাগ প্রতিটি ইউনিয়নে সরকারি ক্রয় কেন্দ্র খুলে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্যমূলে সংগ্রহ করতে হবে। ধান সংগ্রহের জন্য প্রয়োজনীয় গোডাউন নির্মাণ করতে হবে। উন্নয়ন বাজেটের কমপক্ষে ৪০ ভাগ কৃষি খাতে বরাদ্দ দিতে হবে। সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী বান্ধব কৃষি নীতি নয়, কৃষক বান্ধব কৃষি নীতি একমাত্র পারে দেশের কৃষি ও কৃষককে বাঁচাতে।

Bootstrap Image Preview