সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় গ্রীষ্মের তাপদাহের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সুপেয় পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। কিন্তু পানির তৃষ্ণা তো আর অন্য কিছুতে মেটানো সম্ভব নয়। তাই, যেভাবেই হোক সুপেয় পানি সংগ্রহ করতে মরিয়া গৃহস্থলিরা।
প্রয়োজনের তাগিদেই উপজেলা সদরের আশপাশের বাসিন্দারা পানযোগ্য এক কলসি পানির জন্য কয়েক কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে পানি নিতে ছুটে আসছেন তালা সরকারি কলেজ ও উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়ি সংলগ্ন (নজরুল সাংবাদিকের জমিতে) অবস্থিত গভীর নলকূপের কাছে। আর যারা ক্লান্ত শরীরে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে না পারছেন তাদের নগদ টাকার বিনিময়ে কিনতে হচ্ছে খাবার পানি। এভাবে গ্রীষ্মে খাবার পানি সংগ্রহে রীতিমত যুদ্ধ করতে হচ্ছে তাদের।
তালা উপজেলার সর্বত্রই কৃষি কাজের জন্য অতিমাত্রায় সেচ পাম্প দিয়ে উত্তোলন করা হচ্ছে ভূগর্ভস্থ পানি। ফলে পানির লেয়ার নিচে নেমে যাচ্ছে। এ কারণে গ্রামের অধিকাংশ নলকূপেই পানি উঠছে না, আর যা উঠছে তা পানযোগ্য নয়।
সরজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিন কাকডাকা ভোর থেকে উপজেলার মহান্দী, খলিলনগর, নলতা, গোনালি, বারুইহাটি শাহাপুর, খড়েরডাঙা, শিবপুর ও গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দারা কলসি, ড্রাম, বোতল নিয়ে সাইকেল, মোটরসাইকেল ও ভ্যানযোগে ছুটছেন উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসা ও সরকারি কলেজ অভিমুখে। এখানে পানি নিতে আসছেন সূদর পাইকগাছা, কপিলমুনি থেকেও। সেখানে গিয়ে মিলছে পানি সংগ্রহ করতে যাওয়া মানুষের লম্বা লাইন। অনেক সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর মিলছে কাঙ্খিত পানি।
এদিকে তালা হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় গড়ে ওঠা পানি কোম্পানিতেও ভিড় করছেন স্বচ্ছল পরিবারের লোকজন। কিন্তু সেখানেও চাহিদা অনুযায়ী পানি সরবরাহ করতে হীমসিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপদহ, খরা, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এ সঙ্কট ঘনীভূত হচ্ছে। আগামি কয়েক বছরে এ সংকট আরো ব্যাপকতা ধারণ করবে। তাই এখন থেকেই বিকল্প পথে মানুষকে সুপেয় পানি সরবরাহে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ নিতে হবে।