পেশাদার ঠিকাদার, বিবাহিত, বিএনপি পরিবারের সদস্য, ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা ছাত্র ও শিবিরের সঙ্গে জড়িত থাকাসহ নানা অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হলেন রাকিব উদ্দিন।
১৩ মে প্রকাশিত ছাত্রলীগের ৩০১ সদস্যের কমিটির ৫৪তম সহ সভাপতি রাকিব উদ্দিন। ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে আলিম ও ফাজিল পাশ করা রাকিব পারিবারিকভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাছাড়া নিয়মিত ঠিকাদার, বিবাহিত, ভুয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচয় প্রদান ও ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের নাম ভাঙ্গিয়ে নানা যায়গা থেকে চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার ঝলম ইউনিয়নের শশইয়া গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে রাকিব উদ্দিন। রাকিবের বাবা আবদুল মান্নান গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির সমর্থন নিয়ে মেম্বার পদে নির্বাচন করেছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী তাবারুক হোসেনের কাছে ৬৩ ভোট পেয়ে হেরে যান।
ঢাকা আলিয়ার ছাত্র রাকিব মাদ্রাসার আল্লামা কাশগরী হলে থাকার সময় শিবির সংশ্লিষ্টতা ও নিজেদের অভ্যন্তরীণ মারামারির দায়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক থেকে বহিষ্কার হয়েছেন। তৎকালিন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি আনিসুর রহমান সরকার ও সাধারণ সম্পাদক আনিসুজ্জামান রানা তার বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, রাকিব পেশাদার ঠিকাদার। গ্রাম বাংলা কনস্ট্রাকশন লি: নামের একটি ঠিকাদারি কোম্পানীর মালিক। যার নামে রাজধানীর ধানমন্ডিতে একটি বহুতল ভবনের পাইলিংয়ের কাজ করছেন তিনি।
এছাড়া তানিয়া নামের একটি মেয়েকে বিয়ে করে লালবাগ থাকেন। ছাত্রলীগের নেতারা তাকে একাধিকবার ওই মেয়েসহ দেখছেন বলেও জানিয়েছেন।
ঢাকা আলিয়ার ছাত্র হয়েও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়দানকারী রাকিব উদ্দিনের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সে ২০১৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ধ্যাকালিন এমবিএ কোর্সের টুরিজম ও হসপিটালিটি বিষয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। এরপর আর তিনি এটি শেষ করেননি। বরং এই বিভাগে ভর্তি করিয়ে দেবে প্রলোভন দিয়ে নানা জনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ আছে। তাছাড়া ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও শিল্পপতির কাছ থেকে টাকা নেয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের নব মনোনীত সহ-সভাপতি রাকিব উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তানিয়া নামের ওই মেয়ের সঙ্গে এখন আর তার কোনো সম্পর্ক নাই। তার এলাকার পরিচিত একজনের কাছ থেকে একটি কাজ পেয়েছেন বলে ধানমন্ডিতে কাজটি করেছেন। এটা তো পেশাদার ঠিকাদারী নয়। অবশ্য তার ঠিকাদারী লাইসেন্স ও ওয়ার্কঅর্ডার প্রতিবেদকের হাতে আছে।
এবিষয়ে জানার জন্য ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।