Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সুদের টাকার জন্য খুন, মূল আসামি আটক

আজিজুল ইসলাম সজীব, হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ২৩ মে ২০১৯, ০৮:০২ PM
আপডেট: ২৩ মে ২০১৯, ০৮:০২ PM

bdmorning Image Preview


সুদের টাকা পরিশোধ না করায় বানিয়াচংয়ের নয়াপাতারিয়া গ্রামের সাজেল মিয়া ওরফে সাজনকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে পাওনাদাররা। হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে মামলার অন্যতম আসামি মিজান।

বুধবার (২২ মে) সন্ধ্যায় প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন অতিরিক্তি পুলিশ সুপার হবিগঞ্জ সদর (সার্কেল) মো. রবিউল ইসলাম।

তিনি আসামির দেয়া স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে জানান, ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট রাতে সদর উপজেলার আলম বাজারে তাজউদ্দিন ও মহিন উদ্দিনের টমটম গ্যারেজ থেকে সাজেন মিয়া ওরফে সাজনকে গুরুতর অবস্থায় সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে যায় কয়েকজন। হাসপাতালে তাকে নিয়ে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়েছে বলে ভর্তি করানো হয়।

সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাজন মিয়াকে দেখে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করা হয়।

ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত জনিত কারণে সাজন মিয়ার মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা মতামত দেন। 

এরই প্রেক্ষিতে নিহতের মা বাদি হয়ে ২০১৮ সালের ২৩ নভেম্বর কাউরিয়াকান্দি গ্রামের মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, নয়াপাতারিয়া গ্রামের সাদ্দাম হোসেন, টলিয়া গ্রামের রুস্তম আলী, টমটম গ্যারেজ মারিক তাজ উদ্দিন ও মহিন উদ্দিনসহ আরও অজ্ঞাত ৩/৪ জনকে আসামি করে সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।  

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক উত্তম কুমার দাস আসামী মহিন উদ্দিন ওরফে মহিউদ্দিন ও তারেককে গ্রেফতার করেন। তাদেরকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তারা কৌশলে সাজন মিয়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনা এড়িয়ে যায়।

বুধবার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হবিগঞ্জ সদর (সার্কেল) মো. রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে মামলার অন্যতম আসামি  বানিয়াচং উপজেলার কাউরিয়াকান্দি গ্রামের টমটম চালক মিজানুর রহমান মিজানকে পুলিশ গ্রেফতার করে।

পরে জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, সাজন মিয়া হত্যা মামলার আসামি তাজ উদ্দিন ও মহিন উদ্দিন ওরফে মহিউদ্দিন তার পরিচিত। এক সময় তাদের গ্যারেজে সে থাকতো।

তাজ উদ্দিন ও মহিন উদ্দিন উভয়েই সুদের ব্যবসায়ী। নিহত সাজন মিয়া সুদখোর তাজ উদ্দিনের নিকট থেকে ১০ হাজার টাকা দাদন নেয়। কিন্তু ওই টাকা সময় মতো পরিশোধ না করায় তাজ উদ্দিনের সাথে সাজনের বিরোধ সৃষ্টি হয়। 

উল্লেখ, ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট রাত ৯টার দিকে সাজন মিয়া গ্যারেজের সামনের রাস্তা দিয়ে বাড়িতে যাবার পথে মহিন উদ্দিন, তাজ উদ্দিন ও মিজানুর রহমান মিজানসহ অজ্ঞাত আরও ২ জন তাকে ডেকে টমটম গ্যারেজের ভেতর নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে কিল, ঘুষি ও পাইপ দিয়ে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতারী মারপিট করলে সাজন মিয়া গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে পড়ে যায়।

ঘাতকরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট বলে হাসপাতালে চিৎকার শুরু করে। এক পর্যায়ে ঘাতকরা কৌশলে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। 

গ্রেফতারকৃত মিজানুর রহমান মিজান বুধবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। পরে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। 

প্রেস ব্রিফিংকালে উপস্থিত ছিলেন- হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ সহিদুর রহমান, ওসি তদন্ত জিয়াউর রহমান, পুলিশ পরিদর্শক উত্তম কুমার দাস। 

Bootstrap Image Preview