বগুড়ার ধুনট উপজেলায় গরু চোর সন্দেহে আবুল কাসেম (৫৫) নামে এক রিকশাচালককে শ্বাসরোধে হত্যার ৮ দিন পর ইউপি সদস্য ডাবলু সরকারসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
বুধবার (২২ মে) দুপুরে নিহতের ভাতিজা ওমর ফারুক বাদী হয়ে বগুড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা দায়ের করে। বাদীপক্ষের আইনজীবী মোজাম্মেল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিলচাপড়ি গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে আবুল কাসেম ঢাকায় রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। গত ৭ মে ঢাকা থেকে বিলচাপড়ি গ্রামে নিজ বাড়িতে ফিরে আসে আবুল কাসেম। এ অবস্থায় ১৩ মে রাতে একই গ্রামের শহিদুল ইসলামের গোয়ালঘর থেকে ২টি গরু চুরি হয়। গ্রামবাসির নিকট ওই চুরির ঘটনার সাথে আবুল কাসেমের জড়িত থাকার অভিযোগ করে শহিদুল ইসলাম।
এ ঘটনায় ১৪ মে রাতে এলাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য বিলচাপড়ি গ্রামের ডাবলু সরকারের নেতৃত্বে গ্রামে সালিশি বৈঠক বসে। ওই বৈঠকে গরু চুরির দায়ে আবুল কাসেমের এক লাখ টাকা জরিমানা ধার্য্য করা হয়। এ অবস্থার ১৪ মে রাত ২টার দিকে আবুল কাসেমকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার পর মৃতদেহ গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখে।
এ ঘটনায় নিহতের ভাতিজা বিলচাপড়ি গ্রামের ওমর ফারুক বাদী হয়ে বুধবার সকালে বগুড়া জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য ডাবলু সরকার বলেন, ১৪ মে রাতে গ্রাম্য সালিশি বৈঠকে গরু চুরির দায় স্বীকার করে আবুল কাসেম এক লাখ টাকা জরিমানা দিতে চেয়েছিল। বৈঠক শেষে রাত ১১টার দিকে আবুল কাসেমকে তার বাড়িতে রেখে এসেছি। এরপর ১৫ মে সকালে তার মৃতদেহ বাড়ির পাশে গাছের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে স্থানীয়রা। তবে আবুল কাসেমের মৃত্যু রহস্যজনক। তারপরও আমাকে প্রধান আসামি করে আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে।
নিহতের স্ত্রী অলেদা খাতুন বলেন, গরু চুরির অভিযোগে ১৪ মে রাতে আমার স্বামীকে সালিশি বৈঠকের মাতব্বররা নানাভাবে নির্যাতন করে বাড়িতে রেখে গেছে। কিন্তু একই রাত ২টার দিকে ইউপি সদস্য ডাবলু সরকার ও তার লোকজন আমার স্বামীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ গাছে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করে।