বগুড়ার ধুনট উপজেলার মথুরাপুর গ্রামে হাসিনা খাতুন নামে এক গৃহবধূ স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে প্রাক্তন স্বামী আসমত আলীর বাড়িতে ৫ দিন ধরে অনশন করছে। আসমত আলী মথুরাপুর গ্রামের আবুল হোসেন শেখের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার উলিপুর গ্রামের মোকছেদ মন্ডলের মেয়ে হাসিনা খাতুনের ২০ বছর পূর্বে আসমত আলীর (৪৫) সাথে বিয়ে হয়। বৈবাহিক জীবনে তাদের ঘরে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। অভাব অনটনের সংসারে ব্যয়ভার বহন করতে স্ত্রীকে দিয়ে বিভিন্ন এনজিও থেকে প্রায় ৫লাখ টাকা ঋণ উত্তোলন করে নেয় আসমত আলী।
ঋণের টাকা উত্তোলনের পর আসমত আলী পাশের গ্রামের এক মেয়ের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি টের পেয়ে হাসিনা খাতুন প্রতিবাদ করায় তাকে প্রায়ই মারধর করতো স্বামী। এ বিষয়টি নিয়ে কয়েক দফা গ্রাম্য সালিশি বৈঠক হলেও কোন মীমাংসা হয়নি।
এ অবস্থায় ঋণের টাকা পরিশোধ না করেই আসমত আলী ২ মাস আগে হাসিনা খাতুনকে তালাক দেয়। তালাকপ্রাপ্তির পর বিভিন্ন এনজিওর ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে বাবার বাড়িতে বসবাস করতে থাকে হাসিনা খাতুন। ঋণের টাকা পরিশোধ না করায় আসমত আলীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করে হাসিনা।
এ অবস্থায় গত শুক্রবার আসমত আলী হাসিনা খাতুনের বাবার বাড়িতে গিয়ে পুনরায় স্ত্রীর মর্যাদা দেওয়ার কথা বলে রাত্রি যাপন করে। কিন্তু শেষ রাতের দিকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার কথা বলে বাহিরে গিয়ে আর ফিরে আসেনি আসমত আলী।
পরদিন শনিবার বিকেলের দিকে স্বামীর খোঁজে শ্বশুর বাড়িতে যায় হাসিনা খাতুন। বাড়িতে হাসিনার উপস্থিতি টের পেয়ে কৌশলে পালিয়ে যায় আসমত। তারপরও স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে স্বামীর বাড়িতে অনশন কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনশন থেকে সরে দাড়াবেন না বলে জানান হাসিনা খাতুন।
এ ঘটনায় আসমত আলী জানান, স্ত্রীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় তালাক দিয়েছি। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে সংসারের কাজেই খরচ করেছি। তাই ঋণ পরিশোধের বিষয়টি আমার একার দায়িত্বে পড়ে না। তার সাথে আমি কোন প্রকার যোগাযোগ রাখিনি। তারপরও সে আমার বাড়িতে অবৈধভাবে অবস্থান নিয়েছে।
ধুনট থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আব্দুল জব্বার বলেন, ঋণ পরিশোধের বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলো হাসিনা খাতুন। পরবর্তীতে এ বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার কথা ছিলো। কিন্তু এ ঘটনার কি সিদ্ধান্ত হয়েছে আমাকে জানানো হয়নি। এছাড়া প্রাক্তন স্বামীর বাড়িতে অনশনের কথা শুনেছি। তবে এবিষয়ে থানায় কোন অভিযোগ দেওয়া হয়নি।