Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

যেভাবে বুঝবেন, বস আপনাকে আর চাচ্ছেন না!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ মে ২০১৯, ০৮:৩১ PM
আপডেট: ২১ মে ২০১৯, ০৮:৩১ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


অনেকদিন থেকে অফিসটা আর ভাল লাগছে না তমালের। কেন জানি দিন দিন বিষিয়ে উঠছে সবকিছু। অফিসে যতই মনযোগ দিয়ে ভালো কিছু করার চেষ্টা করুক না কেন, কেউ যেন তার কাজের কোনো মূল্য দিচ্ছেনা আজকাল। পর পর কয়েকটা অ্যাসাইনমেন্ট আর প্রেজেন্টেশনেও বেশ খারাপ রিভিউ এসেছে। এরপর থেকে বস আর কোনো প্রজেক্টের কাজও দিতে চান না। কেন এমন হচ্ছে তার মাথায় আসছে না। তবে তমাল ঠিক ঠিক বুঝতে পারছে যে, এই চাকরিটা যাওয়ার সময় হয়ে এসেছে তার।

এমনটা হরহামেশাই ঘটে অনেক চাকরিজীবীরই জীবনে। কিন্তু কিভাবে আপনি নিজেই বুঝবেন যে অফিস আর আপনাকে চাচ্ছে না..

অফিসে মাঝেমাঝে খারাপ পারফরম্যান্স হতেই পারে। তার মানে সেটা যে খারাপের কোন বিষয় তা নয়। এতে ভুলগুলো ধরে তা শুধরানো যায়, এর ফলে পরবর্তীতে ভালোকিছু করার পথ বের হয়। কিন্তু খারাপ পারফরম্যান্সের যদি ক্রমাগত রিভিউ পেতে থাকেন তবে সেটা অবশ্যই খারাপ লক্ষণ। কর্তৃপক্ষ যদি আপনাকে প্রায়ই বোঝাতে থাকে যে আপনার কাজে তারা সন্তুষ্ট নয়, আপনি বোধহয় কাজ পারছেন না, প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আপনাকে ঠিক যাচ্ছে না- এগুলো যদি বলে বা লিখে দিতে থাকে তো আপনাকে সতর্ক হতেই হবে।

অফিসে কাজের গণ্ডির বাইরে আপনাকে যদি কোনো অসম্ভব কাজ চাপিয়ে দেওয়া হয় তাহলে বুঝতে হবে ভেতরে কোনো সমস্যা আছে। কখনো কাজের প্রেশারও বাড়িয়ে দিতে পারে। এটা হয়ত প্রতিষ্ঠান আপনার প্রতি রাগ থেকে করছে, আপনাকে যাচাই করে দেখছে, আপনি যাতে কষ্ট সহ্য করতে না পেরে নিজে থেকেই চাকরি বাদ দিয়ে দেন- এ কারণেই আপনাকে খামোখা ভোগান্তিতে ফেলতে চায়। সেক্ষেত্রে কাজের চাপ বেশি মনে হলে সরাসরি বসের সঙ্গে কথা বলুন। তিনি সমাধান দিতে না পারলে সমস্যা আসলেই আছে বুঝতে হবে।

প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেই কিছু নিজস্বতা থাকে, তাদের নিজস্ব তথ্যাদি মজুদ থাকে। সেগুলো ঐ অফিসের কর্মীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। গুরুত্বপূর্ণ এই তথ্যগুলো সাধারণত বাইরে ছড়ায় না। কিন্তু হঠাৎ করেই আপনাকে অফিসের এ তথ্যগুলো আর না জানানো হয়, আগের মতো ইমেইলগুলো না পান, কোনো গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে আপনাকে না ডাকা হয়- তাহলে বুঝবেন আপনি বিশ্বস্ততার জায়গাটি হারিয়েছেন। অফিস আর আপনাকে নিজের লোক ভাবছে না, আপনাকে তারা যেকোনো অবস্থায় বাদও দিয়ে দিতে পারে।

প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিশ্বাসের সম্পর্ক থাকা খুব জরুরি। খুব বড় কোনো ঘটনা না ঘটলে সাধারণত হিসাব বিভাগ কর্মীদের কাছে খরচের বিবরণ চায় না। কিন্তু কিছুদিন থেকে যদি আপনার কাছে কাজ, সময় আর খরচপাতির পুরো হিসাব দেখতে চায় তো বিষয়টিকে গুরুত্ব দিন। কারণ প্রতিষ্ঠান হয়তো আপনাকে সন্দেহ শুরু করেছে। আপনি নির্দোষও হলেও বিষয়টি জানার চেষ্টা করুন। অন্য সহকর্মীর কাছে খোঁজখবর নিন যে তাদেরও এমন ঘটনা আছে কিনা। না হলে আপনি বিপদে আছেন বুঝুন।

আপনি একটা ভুল করলে সেটা দ্বিতীয়বার না করার জন্য আপনাকে অফিস থেকে ব্যক্তিগতভাবে জানিয়ে দেবে। এতে আপনি নিজেকে শুধরে নিতে পারবেন। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে সতর্ক করা মানেই বিপদ। এর অর্থ হলো আপনাকে সতর্ক করার বিষয়টি আপনার প্রতিষ্ঠানের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর এই সতর্কবার্তা যদি একের অধিকবার পান তাহলে বুঝবেন আপনার অবস্থা নড়বড়ে হয়ে গেছে। তারা আপনাকে প্রতিষ্ঠানে নাও রাখতে পারে।

বস আর উর্ধ্বতনদের সঙ্গে কর্মীর সম্পর্ক আন্তরিক আর বন্ধুত্বপূর্ণ না হলে কাজ করে কখনো শান্তি পাওয়া যায় না। কিন্তু যদি সম্পর্কটি কোনো কারণে খারাপ হয়ে যায় তাহলে সেটি আসলেই ভাববার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। বস যদি প্রতিদিন বকাবকি, সবার সামনে অপমান করতে থাকে তাহলে বুঝবেন আপনাকে আর সে পছন্দ করতে পারছে না।

আপনাকে বেশি কাজ দেওয়া যেমন ভালো না, আবার আপনাকে আগের চেয়ে কাজ কমিয়ে দেওয়াটাও ভালো লক্ষণ না। আপনাকে আগের মতো আর কাজের দায়িত্ব দেওয়া দেওয়া বা নতুন কাজে যুক্ত না করা হলে বুঝবেন গুরুত্ব কমছে আপনার। অফিস আপনাকে আর যোগ্য ভাবছে না, ভরসা করতে পারছে না। এই অবস্থায় কিছুদিনের মধ্যে আপনাকে বাতিল ঘোষণাও করা হতে পারে।

কাজে সফল হলে আপনাকে অফিসে বাহবা দেবে, সেটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু ধরুন আপনার কাজ তাদের কাছে একঘেয়েমি হয়ে গেলো। আপনি যা করছেন তা তাদের কাছে ডালভাত মনে হলে আপনাকে আর নতুন করে প্রশংসা তারা করবে না। এমনকি আপনার কাজ ভালো নয় বলেও কথা শোনাবে। এটা আপনাকে অপছন্দের অন্যতম ইঙ্গিত।

যদি খেয়াল করেন যে অফিসে আপনাকে কম পাত্তা দেওয়া হচ্ছে, আপনাকে নিয়ে আর তেমন কারো কোনো আগ্রহ নেই তাহলে একটু ভাবুন নিজের অবস্থান নিয়ে। আপনি ‘সিলেবাসের বাইরে’র মানুষ হয়ে যেতে থাকলে বুঝতে হবে আপনার বিকল্প হয়তো তারা খোঁজা শুরু করে দিয়েছে।

Bootstrap Image Preview