Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সীতাকুণ্ডে পুলিশ-জেলে সংঘর্ষ, আহত ৩০

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ মে ২০১৯, ১১:৪৫ AM
আপডেট: ২১ মে ২০১৯, ১১:৪৫ AM

bdmorning Image Preview


চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কুমিরায় এক যুবক জেলেকে আটকের জেরে পুলিশের সাথে জেলেদের দফায় দফায় সংঘর্ষে এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে পরিদর্শক (তদন্ত) ও দুই কনস্টেবল গুলিবিদ্ধসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত আনুমানিক ১১টার দিকে সীতাকুণ্ডের কুমিরা ইউনিয়নের বড় কুমিরা ঘাটঘর জেলেপাড়ায় রুবেল জলদাশ (৩০) নামক এক যুবককে আটক করেন সীতাকুণ্ড থানার এসআই জাহেদ হোসেন জসীম। এ সময় এলাকার অন্য জেলে যুবকরা তাকে গ্রেপ্তারের কারণ জানতে চেয়ে বাধা দিলে জসীম ও সাথে থাকা ফোর্স তাদেরকে মারধর করে বলে অভিযোগ করে জেলেরাও তাদের ওপর পাল্টা হামলা করে।

এদিকে ঘটনার সময় সেখানে বিলম্বু দাসী (৭৫) নামক এক মহিলার আকস্মিক মৃত্যু হলে পুলিশের হামলায় ওই বৃদ্ধা নিহত হয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এতে পুলিশের সাথে জেলেদের ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। জেলেরা বিভিন্নরকম বোতল, ইটপাটকেল ছুড়তে থাকলে পুলিশও গুলি চালায়। পুলিশ শতাধিক রাউন্ড গুলি চালালে এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে অন্তত ১৫ জন জেলে নারী-পুরুষ ও পুলিশ সদস্যসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২৫-৩০ জন আহত হন। গুলিবিদ্ধ হন পরিদর্শক (তদন্ত) আফজাল হোসেন ও দুই পুলিশ সদস্য।

কুমিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোর্শেদুল আলম চৌধুরী বলেন, ইয়াবা কারবারি রুবেলকে গ্রেফতারে বাধা দেওয়ায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হয়। তিনি বলেন, ওই নারী বয়স্ক। তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন। কিন্তু জেলেরা পুলিশের হামলায় ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে ছড়িয়ে দিয়ে হামলা চালান।

এদিকে ঘটনার পর নিহত বৃদ্ধা বিলম্বু দাসের ছেলে খোকন জলদাশ ইউএনও মিল্টন রায়ের কাছে জানান, সংর্ষের ঘটনার সাথে তার মায়ের মৃত্যুর কোনো সম্পর্ক নেই। রাত ৮টার পর তার মা জানান, শরীর খুব খারাপ লাগছে। বুকে অশান্তি লাগছে। এ সময় তাকে ওষুধ খাওয়ানো হলেও বুকে প্রচুর ব্যথা করতে থাকে। সে সময় তিনি মাকে কোলে নিয়ে বসেছিলেন। ওই অবস্থাতেই তার মা মারা যান। 

ইউএনও মিল্টন রায় খোকনের জবানবন্দির ভিডিও প্রকাশ করে বলেন, মহিলাটির স্বাভাবিক মৃত্যু হলেও তিনি পুলিশের হামলায় মারা গেছে ছড়িয়ে এলাকাটিকে রণক্ষেত্রে পরিণত করা হয়।

সীতাকুণ্ড থানার গুলিবিদ্ধ কর্মকর্তা সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আফজাল হোসেন জানান, রুবেলের কাছে ৩০ হাজার পিস ইয়াবা ছিল। এই তথ্য নিশ্চিত হয়ে পুলিশ তাকে আটক করলে জেলেরা এসআই জসীম ও সঙ্গীয় ফোর্সের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নেয়। খবর পেয়ে তারা সেখানে গেলে জেলেরা তিনিসহ অন্তত ২৫ জন পুলিশকে অবরুদ্ধ করে ব্যাপক হামলা চালায়। জেলেদের মদের বোতল, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে এসআই আলীম ও সেকেন্ড অফিসার সুজায়েত আহত হন। এ ছাড়া তিনি, কনস্টেবল কামরুলসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি ওসি (ইনটেলিজেন্স) সুমন বণিকসহ অনেকেই আহত হয়েছেন।

সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, বৃদ্ধার মৃত্যুর অপপ্রচার ছড়িয়ে ইয়াবা কারবারি রুবেলকে ছিনিয়ে নিতে এসব ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ব্যাপক সংঘর্ষের পর চট্টগ্রাম থেকে অতিরিক্ত ফোর্স গিয়ে অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করা হয়। রাত আড়াইটার পর এলাকা শান্ত হয় বলে ওসি জানান।

Bootstrap Image Preview