তালায় যৌতুকের দাবিতে ১ সন্তানের জননী বিলকিসকে (২২) জোরপূর্বক কীটনাশক পান করিয়ে হত্যার অভিযোগ করা হয়েছে। মৃত্যুর দিন ভোর দিকে বিলকিসের স্বামী কবির শেখ ও তার পরিবারের লোকজন তাকে জোরপূর্বক বিষ খাইয়ে দিলে মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে জানা গেছে।
অভিযোগে জানা যায়, গত ৫ বছর আগে চাঁদপুরের সওকত শেখের ছেলে কবির শেখের (২৮) সাথে উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের কবির শেখ’র স্ত্রী ও ফুলবাড়িয়া গ্রামের মতলেব সরদারের মেয়ে বিলকিসের সাথে বিয়ে হয়। নিহত বিলকিসের মাহী (৩) নামে একটি মেয়ে রয়েছে।
বিয়ের সময় মেয়ের বাবা ছেলে পক্ষকে সংসারের প্রয়োজনীয় সকল প্রকার উপঢৌকন ছাড়াও নগত ১ লক্ষ টাকা যৌতুক হিসেবে দেয়। বিয়ের কিছু দিন যেতে না যেতেই ফের তার স্বামী কবির তাকে পিত্রালয় থেকে যৌতুক আনার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে বাবা ফের তাকে যথাসাধ্য চাহিদা পূরণ করে।
সম্প্রতি আবারো ৭০ হাজার টাকা যৌতুকের দাবিতে কবির ও তার পরিবারের লোকেরা বিলকিসকে নানাভাবে শারীরিক ও মানসিক চাপ দিতে থাকে।
বিষয়টি বিলকিস তার পিতা ও ভাইদের বললেও তারা নতুন করে আর কোন টাকা দিতে রাজী না হওয়ায় ঘটনার দিন তারা পরিকল্পিতভাবে বিলকিসকে মারপিট করে। একপর্যায়ে অবস্থা বেগতিক দেখে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে তারা পরিকল্পিতভাবে তার মুখে বিষ ঢেলে দেয়।
বৃহস্পতিবার লোকমুখে খবর পেয়ে বিলকিসের পিত্রালয় থেকে পিতা-ভাইসহ অন্যান্যরা গিয়ে দেখেন, স্বামী কবির তাকে স্থানীয় সুজনশাহা বাজারে গ্রাম্য ডাক্তার দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছেন। পরে তার ভাইসহ অন্যান্যরা জোর করে তাকে তালা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে সাতক্ষীরা নেওয়ার পথে কবিরের পরিবার বাধাগ্রস্থ করে। ওইদিন বিকালে তালা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।
এবিষয়ে নিহতের স্বামী কবীর শেখ কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
তালা থানার ওসি মেহেদী রাসেল জানান, থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হেফাজতে নিয়েছে।