টয়লেট থেকে উদ্ধার সেই নবজাতককে দত্তক নিতে পারবেন, যদি…

রাজধানীর শিশু হাসপাতালের টয়লেট থেকে উদ্ধার করা নবজাতকটি সুস্থ রয়েছে।শিশুটির বয়স আনুমানিক ৩ দিন। এখন তার পরিচয় খুঁজতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বুধবার বিকেলে শেরে বাংলা নগর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) জানে আলম মুন্সি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ওই নবজাতককে হাসপাতালের টয়লেটে দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানান এক রোগীর স্বজন। উদ্ধারের পর শিশুটিকে ওই হাসপাতালেই ভর্তি করা হয়েছে।

চিকিৎসকের বরাত দিয়ে ওয়ার্ড মাস্টার বলেন, নবজাতকটি এখন সুস্থ আছে। তার চিকিৎসা চলছে। কে বা কারা এই শিশুকে টয়লেটে ফেলে চলে গেল তার কোনো কুলকিনারা করা যাচ্ছে না। ভিডিও ফুটেজ দেখে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

এ বিষয়ে হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ হাকিম বলেন, তার অভিভাবকদের না পাওয়া গেলে কেউ যদি শিশুটিকে দত্তক নিতে চায় তো যথাযথ নিয়মের মধ্য দিয়ে দত্তক নিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি।

শেরে বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানে আলম বলেন, ‘বুধবার সকাল পর্যন্ত কেউ শিশুটিকে নিজের বলে দাবি করেনি। তবে শিশুটির জন্য রাত থেকে আমার কাছে, শেরে বাংলা নগর থানার ডিউটি অফিসারের কাছে এবং ইন্সপেক্টর তদন্তের মোবাইলে শত শত ফোন আসছে। সকাল থেকে আমি নিজেই ১০০’র বেশি ফোন রিসিভ করেছি। সবাই শিশুটিকে দত্তক নিতে চাচ্ছেন। আমরা আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী তদন্তের কাজ করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাত থেকেই শিশুটিকে দেখতে ও দত্তক নিতে হাসপাতালে অনেকেই ভিড় করেছেন। এতে শিশুর স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় শিশু হাসপাতালে তার কেবিনের বাইরে পুলিশ মোতায়েন করেছি। চিকিৎসক ও তদন্ত সংশ্লিষ্ট ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।’

ওসি আরও জানান, ওই শিশুটি শারীরিকভাবে সুস্থ আছে। শিশুটি উদ্ধার হওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এর পর আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি।

তিনি বলেন, শিশুটির পরিচয় খোঁজা হচ্ছে। তবে এখনো তার কোনো পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। শিশুটিকে যারা হাসপাতালের টয়লেটে ফেলে রেখে গেছে, তাদের খুঁজে বের করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

শিশুটির দত্তক নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, শিশুর দত্তক নেয়ার বিষয়ে এখনো কোনো তথ্য আমরা পাইনি। তবে কেউ যদি দত্তক নিতে চায়, তাহলে অবশ্যই আইনি পক্রিয়ার মাধ্যমে নিতে হবে। এটি করবে আদালত।

এ ব্যাপারে পুলিশের তেজগাঁও জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মাহমুদ হাসান বলেন, ‘শিশুটির বাবা-মাকে খুঁজতে রাতে ডিসি-তেজগাঁও-ডিএমপি ফেসবুক পেজে ছবিসহ একটি পোস্ট দেওয়া হয়। এরপর থেকে অনেক ফোন আসছে শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য। অনেকে ফেসবুক পোস্টের নিচেই তাদের দত্তক নেওয়ার জন্য নাম-ঠিকানা ও সিরিয়াল দিয়ে রাখছেন। আমরা তার বাবা-মাকে খুঁজে বের করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। পরবর্তীতে শিশু আইনে আদালত যা সিদ্ধান্ত দেবে পুলিশ সেটা মেনেই কাজ করবে।’