বগুড়ার ধুনট উপজেলায় গরু চোর সন্দেহে আবুল কাসেম (৫৫) নামে এক রিকশা চালককে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (১৫ মে) সকাল ১১টার দিকে তার ঝুলন্ত মৃতদেহ বাড়ি থেকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত আবুল কাসেম উপজেলার বিলচাপড়ি গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে।
থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিলচাপড়ি গ্রামের আবুল কাসেম ঢাকায় রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। গত ৭ মে ঢাকা থেকে বিলচাপড়ি গ্রামে নিজ বাড়িতে ফিরে আসে আবুল কাসেম। এ অবস্থায় ১৩ মে রাতে একই গ্রামের শহিদুল ইসলামের গোয়ালঘর থেকে একটি গরু চুরি হয়েছে। ওই চুরির ঘটনার সাথে আবুল কাসেমের জড়িত থাকার অভিযোগ করে শহিদুল ইসলাম।
এ ঘটনায় এলাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য বিলচাপড়ি গ্রামের ডাবলু সরকারের নেতৃত্বে মঙ্গলবার রাতে গ্রামে সালিশি বৈঠক বসে। ওই বৈঠকে গরু চুরির দায়ে আবুল কাসেমের এক লাখ টাকা জরিমানা ধার্য্য করা হয়। এক পর্যায়ে বুধবার সকালে জরিমানার টাকা আদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে রাতের বৈঠক মুলতবি করা হয়।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য ডাবলু সরকার বলেন, গ্রাম্য সালিশি বৈঠকে গরু চুরির দায় স্বীকার করে আবুল কাসেম এক লাখ টাকা জরিমানা দিতে চেয়েছিল। বৈঠক মুলতবি করে রাত ১১টার দিকে তাকে তার বাড়িতে রেখে এসেছি। এরপর বুধবার সকালের দিকে তার মৃতদেহ বাড়ির পাশে গাছের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়েছে গ্রামবাসি।
নিহতের স্ত্রী অলেদা খাতুন বলেন, গরু চুরির অভিযোগে আমার স্বামীকে সালিশি বৈঠকের মাতব্বররা নানাভাবে নির্যাতন করে মঙ্গলবার রাত ১১টায় বাড়িতে রেখে গেছে। কিন্তু রাত ২টার দিকে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা বাড়ির সীমানা প্রাচীরের বাইরে থেকে আমার স্বামীকে ডেকে নিয়ে যায়। সে ফিরে না আসায় তাকে খুঁজতে বাড়ির বাইরে গিয়ে দেখা যায় তার লাশ গাছের সাথে ঝুলে আছে। দুর্বৃত্তরা আমার স্বামীকে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ গাছে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করেছে।
বগুড়া জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া আবুল কাসেমের মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব না। তবে এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।