নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক একই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র শাহিন খলিফাকে (১৩) নির্মমভাবে পিটিয়েছে।
বুধবার (১৫ মে) সকাল ১১টার দিকে বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে ডেকে গণিত শিক্ষক মো. ইসার উদ্দিন প্রায় ৩০ মিনিট ধরে একনাগারে বাঁশের মোটা কঞ্চি দিয়ে বেধড়ক পেটায় তাকে। এ ছাড়া বুকে-পিঠে ৮/১০টি লাথিও মারেন ওই শিক্ষক। শাহিন দিনমজুর কাজেম খলিফার ছেলে।
গুরুতর আহত অবস্থায় সহপাঠিদের সহযোগিতায় শাহিনকে উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার কালিকাপুরের স্থানীয় একটি ক্লিনিকে তাকে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় সন্ধ্যায় কাজেম খলিফা বাদী হয়ে শিক্ষক ইসার উদ্দিনকে (৪৭) আসামি করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন নির্যাতনের শিকার শাহিন জানায়, সকাল ১০টার দিকে বিদ্যালয়ে কোচিং ক্লাশে গেলে স্যারদের আসতে দেরি হয়। ওই সময় বিদ্যালয়ের তৃতীয় তলায় একই ক্লাশের সহপাঠি নাইম ও সুমনসহ কয়েকজন নীচে থাকা গণিত শিক্ষক মো. ইসার উদ্দিনকে হেটে আসা দেখে দুষ্টুমীর ছলে বলে ‘রোবট স্যার আসছে’। এ কথা শুনতে পেয়ে ওই শিক্ষক তৃতীয় তলায় আসেন।
পরে সহপাঠিরা নিজেরা বাঁচতে আমার নাম বললে শিক্ষক ইসার উদ্দিন আমাকে অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে প্রায় ৩০ মিনিট শরীরের বিভিন্ন স্থানে এক নাগারে পেটায়। না মারার জন্য আমি ৮/১০ বার ওই স্যারের পায়ে ধরলে তিনি আমার বুকে ও পিঠে ৮/১০টি লাথি মারেন। পরে ওখানে থাকা ফজলু স্যার আমাকে উদ্ধার করেন।
শাহিনের বাবা কাজেম খলিফা জানান, শাহিনের সহপাঠিরা আমাকে সংবাদ দিলে আমি দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যালয়ে গিয়ে শাহিনকে উদ্ধার করে বনপাড়া আরাফাত ক্লিনিকে ভর্তি করি।
স্থানীয় কাউন্সিলর শিরিণ আক্তার জানান, ঘটনা জানতে পেরে ক্লিনিকে শাহীনকে দেখতে গিয়েছি। শাহিনের সারা শরীরের রক্ত জমাট বেঁধে আছে। শিক্ষকের এমন অমানবিক নির্যাতনের দৃশ্যত প্রমাণ সত্যিই দুঃখজনক।
অভিযুক্ত শিক্ষক ইসার উদ্দিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওয়াসেক আলী সোনার জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে এ বিষয়ে আপাতত তার কিছুই বলার নেই বলে তিনি জানান।
বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক নাজমুল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, নির্যাতনের শিকার শাহীনের কাছ থেকে নির্যাতনের বর্ননা শুনেছি। প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।