Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

খালেদা জিয়ার ঈদ কাটবে কেরানীগঞ্জ কারাগারে

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫ মে ২০১৯, ১২:২৬ PM
আপডেট: ১৫ মে ২০১৯, ০২:২৬ PM

bdmorning Image Preview


জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিট্যাবল ট্রাস্ট মামলায় দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে সরিয়ে নেয়া হবে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, কেরানীগঞ্জে মহিলা বন্দিদের কারাগারটি এতদিন প্রস্তুত ছিল না বলে বিএনপি চেয়ারপারসনকে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছিল। এরই মধ্যে কেরানীগঞ্জের মহিলা কারাগার সকল কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কাজেই তাকে সেখানে রাখতে এখন আর সমস্যা হবে না। যেখানে খালেদা জিয়াকে রাখা হয়েছিল, পুরনো কারাগারের সেই ভবনটি সংস্কার করা হবে।

এর আগে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, কেরানীগঞ্জের কারাগারের ভেতরে স্থাপিত বিশেষ আদালতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোর বিচার কার্যক্রম চলবে। এ বিষয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জরি করা প্রজ্ঞাপণে কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে একটি নবনির্মিত ভবনকে অস্থায়ী আদালত হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে দুই বছর আগেই বন্দিদের কেরানীগঞ্জে নির্মিত নতুন কারাগার ভবনে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। গতবছর ফেব্রুয়ারিতে জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদার সাজা হলে তাকে ওই পুরনো কারাগারের একটি ভবনে রাখা হয়। সেখানে তিনিই ছিলেন একমাত্র বন্দি। পরিত্যক্ত ওই কারাভবনের স্যাঁতস্যাঁতে কক্ষে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের মারাত্মক অবনতি হয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছিলেন বিএনপি নেতারা।

খালেদা জিয়াকে কবে নাগাদ কেরানীগঞ্জ কারাগারে স্থানান্তর করা হতে পারে? এ সম্পর্কে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত কোনো তথ্য কেউ দিচ্ছেন না। তবে ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষনেতাদের বক্তব্যে ধারণা করা হচ্ছে, শিগগিরই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে চলেছে সরকার। রাজনৈতিক অঙ্গনে বিএনপি চেয়ারপারসন জামিন বা প্যারোলে মুক্তি নিয়ে যে আলোচনা ওঠেছিল সেটাও ক্রমশই ফিকে হয়ে ওঠেছে। নিকটবর্তী সময়ে খালেদা জিয়া যে মুক্তি পাচ্ছেন না, এটা এখন নিশ্চিত।

খালেদা জিয়াকে কারাগারে স্থানান্তার প্রসঙ্গে বিবিসির এক প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে স্থানান্তরের ব্যাপারে চিকিৎসকদের ছাড়পত্রের নির্ভর করা হবে।তার চিকিৎসা হচ্ছে। ডাক্তার যখন বলবে যে তাঁর চিকিৎসা সম্পন্ন হয়ে গেছে, তখন তাকে নিয়ে যাওয়া হবে।

বিশেষ আদালত কেরানীগঞ্জে স্থানান্তর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া দোষী সাব্যস্ত করার আগে থেকেই পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে বিশেষ আদালত স্থানান্তর করে তার বিচার কাজ চলছিল।ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যেহেতু কেরানীগঞ্জে চলে গেছে সেজন্য সেখানে বিচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সরকার যে ই-জুডিশিয়ারি স্থাপন করছে সেখানে একটি বিধান রাখা হচ্ছে যাতে হাই সিকিউরিটি কারাবন্দীরা কারাগার থেকে সাক্ষ্য দিতে পারে। সে কারণে কেরানীগঞ্জে কারাগারের ভেতরে আদালত স্থাপন করা হয়েছে। ঢাকা শহরের ভেতরে বর্তমানে কোনো কেন্দ্রীয় কারাগার নেই। যেহেতু কেন্দ্রীয় কারাগারটি কেরানীগঞ্জে স্থানান্তর করা হয়েছে সেজন্য খালেদা জিয়াকেও সেখানে স্থানান্তর করা হবে।

এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার শারীরিকভাবে অনেক ভালো আছেন এবং রোজাও রাখছেন। এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার শারীরিকভাবে অনেক ভালো আছেন এবং রোজাও রাখছেন। ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিসের ওষুধ নিচ্ছেন, ইনসুলিন নিচ্ছেন। এখন উনার শরীর মোটামুটি ভালো আছে।

কেরানীগঞ্জের কারাগার সূত্রে জানা গেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এরই মধ্যে কারা কর্তৃপক্ষকে মহিলা কারাগার প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, চিকিৎসকদের ছাড়পত্র পাওয়া সাপেক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসনকে আগামী সপ্তাহেই কেরানীগঞ্জ কারাগারে নিয়ে যাওয়া হবে।

সেই হিসেবে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে খালেদা জিয়াকে এবারের ঈদুল ফেতর পালন করতে হবে কেরানীগঞ্জ কারাগারে।

প্রসঙ্গত, দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা দুর্নীতির একটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন বিএনপি নেত্রী। চিকিৎসার জন্য চলতি বছরের ১ এপ্রিল তাকে বিএসএমএমইউতে নেওয়া হয়। এরপর থেকে সেখানেই আছেন তিনি।

Bootstrap Image Preview