মাদকের অপর নাম নীরব ঘাতক। সমাজের রন্ধে রন্ধে বিষধর সাপের মতো ছড়িয়ে পড়ছে মাদক। শেষ করে দিচ্ছে নতুন প্রজন্মকে। ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে যুব সমাজকে। এ এক তীব্র নেশায় হাজারো তরুন-তরুণীর জীবনের মানবিক মূল্যবোধ ও মনুষত্ব্য শেষ করে দিচ্ছে।
আর তেমনি মাদক কেড়ে নিলো ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার উঠতি যুবকের সাতটি বছর। মাদক ছোবলের কবলে পড়ে শিকলবন্দি জীবন কাটাচ্ছে মিজানুর রহমান (২২)।
দুই পায়ে শিকল বেঁধে ঘরের বারান্দার একটি কক্ষে খুটির সাথে বেধে রেখেছে তার মা-বাবা। শিকলে আবদ্ধ অবস্থায় থেকে মুক্ত হবার জন্য ছঁফট করে মিজানুর। তাঁর ডাক চিৎকারে কেউ এগিয়ে আসেনা শিকলের তালা খুলে দিতে।
জানা যায়, মিজানুর রহমান মুশল্লী ইউনিয়নের কাউয়ারগাতি গ্রামের মো. নুরু মিয়া ও হেলেনা বেগমের এক মাত্র ছেলে। সঙ্গদোষে হঠাৎ মাদকাসক্ত হয়ে উঠে সেই ছেলে।
মা হেলেনা বেগম জানান, ‘ছেলে যখন পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে তখন হঠাৎ করে তার আচরণের পরিবর্তন দেখা গেলে মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ার মতো উপক্রম হয়। পরে বাধ্য হয়ে কোনো উপায় দেখতে না পেয়ে ১৫ বছর বয়সে ছেলেকে থানায় দেওয়া হয়। ৬ মাস জেল কাটার পর জামিনে মুক্ত হয়।
কিন্তু বাড়িতে এসে কিছুদিন পর ভালো থাকলেও সেই আগের মতই অবস্থা। আমাদেরকে মারধর করে। তাই নিরাপত্তহীনতার কারনেই তাকে শিকল দিয়ে বেঁধেছি।’
ছেলের চিকিৎসার করানো যেন এক দুঃসাধ্য ব্যাপার।
স্থানীয় সামাজ সেবক আতাউর রহমান বাচ্চু তিনি উক্ত মাদকাসক্ত ছেলেটিকে উদ্ধার করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য প্রশাসন ও বিত্তবানদের সুদৃষ্টি কামনা করেন।’
এ বিষয়ে নান্দাইল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোসাদ্দেক মেহদী ইমাম বলেন, 'ওই যুবককে শিকলে বাধা থেকে মুক্ত করে উপজেলা সামাজ কল্যাণ কার্যালয়ের রোগী কল্যান তহবিল থেকে অর্থ সহযোগিতার মাধ্যমে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।'