Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

দ্বিতীয় তারাবিতে পঠিত আয়াতসমূহের সারাংশ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭ মে ২০১৯, ০৭:২৬ PM
আপডেট: ০৭ মে ২০১৯, ০৭:২৬ PM

bdmorning Image Preview


আজ দ্বিতীয় তারাবিতে সুরা বাকারার ২৫তম রুকুর শেষার্ধ থেকে সুরার শেষ রুকু পর্যন্ত, ২০৪ থেকে ২৮৬ নম্বর আয়াত পর্যন্ত পড়া হবে। সঙ্গে সুরা আলে ইমরানের প্রথম রুকু থেকে নবম রুকুর পুরো অংশ, ১ থেকে ৯১ নম্বর আয়াত পর্যন্ত পড়া হবে।

পারা হিসেবে আজ পড়া হবে দেড় পারা থেকে শুরু করে তিন পারার পুরোটা।

২. সুরা বাকারাহ: ২০৪-২৮৬

২৫তম রুকুর শেষার্ধ। ২০৪ থেকে ২১০ নম্বর আয়াতে মুনাফিক-কাফের ও মুমিনের আচার-বৈশিষ্ট্যের ভিন্নতা তুলে ধরা হয়েছে। মোনাফিক ও কাফেররা নিজেদের আল্লাহর প্রিয় বলে দাবি করে। তারা বলে- আমরা শান্তিপ্রিয় মানুষ। আসলে তারা সুযোগ পেলেই দাঙ্গা-হাঙ্গামা বাধিয়ে বসে। আর মোমিন সবসময় নিজেকে আল্লাহতে সমর্পিত মনে করে। জীবন ও সম্পদ আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করে। শয়তানের ফাঁদে পা দেয় না।

২৬তম রুকু। ২১১ থেকে ২১৬ নম্বর আয়াতে মুমিনদের গুরুত্বপূর্ণ হেদায়েত করা হয়েছে। বনি ইসরাইলদের কথা উল্লেখ করে উম্মতে মোহাম্মাদিকে সতর্ক করা হয়েছে। সত্য অস্বীকার করা, দলে-উপদলে বিভক্ত হওয়া, আল্লাহর দ্বীনের সংগ্রামে ধৈর্যচ্যুত হওয়ার মতো বিষয় থেকে বিরত থাকার হেদায়েত রয়েছে এ রুকুতে।

২৭তম রুকু। ২১৭ থেকে ২১২ নম্বর আয়াতেও পবিত্র মাসে যুদ্ধের বিধান, মদ-জুয়ার অপকারিতা, এতিমদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা এবং মুশরিক নারীদের বিয়ে না করার মতো গুরুত্বপূর্ণ হেদায়েত করা হয়েছে। বলা হয়েছে- পবিত্র মাসে যুদ্ধ করা বড় ধরনের গোনাহর অন্তর্ভুক্ত। আর মদ-জুয়া এগুলোর যদিও কিছু উপকার আছে, আসলে ক্ষতিই বেশি। মুশরিক নারী কোনো মুমিনের চোখে ভালো লাগলেও তার জন্যে কল্যাণ হলো মুমিন নারী কিংবা দাসীকে বিয়ে করা। এতে করে তার দুনিয়া-আখেরাত দুটিই সুন্দর হবে।

২৮তম থেকে ৩১তম রুকুর বড় অংশ। ২২২ থেকে ২৪০ নম্বর আয়াতে নারীদের ঋতুস্রাব, তালাক ও ইদ্দত এবং দেনমোহরের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। মাসিকের সময় স্ত্রী সহবাস করা যাবে না। কেউ যদি স্ত্রী সহবাস না করার শপথ করে, তা হলে চার মাসের মধ্যে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়ার সুযোগ আছে। তালাকপ্রাপ্ত হওয়ার পর স্ত্রী তিন ঋতুস্রাব পর্যন্ত ইদ্দত পালন করবে। আর গর্ভে সন্তান থাকলে সন্তান ভূমিষ্ট হওয়া পর্যন্ত ইদ্দত পালন করবে। এভাবে দুবার তালাক দেয়ার পর তৃতীয়বারে হয় তাকে রাখবে, নয় সুন্দরভাবে বিদায় করে দেবে।

আর দেনমোহর বাবদ যা দেয়া হয়েছে তা ফিরিয়ে নেয়া যাবে না। ইদ্দত পালনের সময় স্ত্রীকে খোরপোশ দিতে হবে। তাকে জ্বালাতন করা যাবে না। আল্লাহর বিধান নিয়ে খেল-তামাশা করা বড় ধরনের অন্যায়।

৩২তম ও ৩৩তম রুকু। ২৪৩ থেকে ২৫৩ নম্বর আয়াতে মুসা (আ.)-এর পর বনি ইসরাইলরা পরবর্তী নবীদের সঙ্গে জিহাদের নামে কেমন পিঠটান আচরণ করেছিল এ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আল্লাহ কর্তৃক মনোনীত নবী ও বাদশাহকে পর্যন্ত বনি ইসরাইল সম্প্রদায় মেনে নেয়নি। যখন তাদের জিহাদের জন্য ডাকা হয়েছে, তারা গোয়ার্তুমি করেছে। মুষ্টিমেয় কয়েকজন ছাড়া বাকি সবাই জিহাদের ময়দান ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

৩৪ ও ৩৫তম রুকু। ২৫৪ থেকে ২৬০ নম্বর আয়াতে আল্লাহর মহত্বের কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে আল্লাহর পরিচয় ও ক্ষমতার কথা। উদহারণস্বরূপ ইবরাহিম (আ.)-এর দুটি ঘটনা সংক্ষেপে বর্ণনা করা হয়েছে। একটি ঘটনা নমরুদের সঙ্গে তর্কবিতর্কের ঘটনা। আরেকটি হলো- মৃতকে জীবিত করার রহস্য সম্পর্কে আলোচনা।

৩৬ থেকে ৩৯তম রুকু। ২৬১ থেকে ২৮৩ নম্বর আয়াতে অর্থনৈতিক বিধান বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আল্লাহর পথে ব্যয়ের মাহাত্ম্য ও মর্যাদা, আল্লাহর পথে ব্যয় না করার পরিণাম, উশরের বিধান, দানের উপযুক্ত কারা এসব বিধান আলোচনা করার পাশাপাশি সুদের ভয়াবহতা, সুদ হারাম হওয়ার ঘোষণা এবং সুদ ছেড়ে দেয়ার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। আলোচনা করা হয়েছে ঋণের বিধান নিয়ে। ঋণ যেন লিখিত চুক্তির ভিত্তিতে হয় এসব নির্দেশনা সবিস্তারে আলোচনা হয়েছে ২৮২ ও ২৮৩ নম্বর আয়াতে।

৪০তম তথা শেষ রুকু। ২৮৪ থেকে ২৮৬ নম্বর আয়াতে উপসংহারস্বরূপ ইমানের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। বান্দার জন্য আল্লাহর দয়া ও মেহেরবানি উল্লেখ করা হয়েছে শেষের দুই আয়াতে।

৩. সুরা আল ইমরান : ১-৯১

সুরা আল ইমরান মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছে। ক্রমিক নম্বর অনুযায়ী পবিত্র কোরআনের তিন নম্বর সুরা এটি। এর মোট আয়াত সংখ্যা ২০০ এবং রুকু সংখ্যা ২০। আজ পড়া হবে নবম রুকু পর্যন্ত।

প্রথম রুকু। ১ থেকে ৯ নম্বর আয়াত পর্যন্ত ভূমিকাস্বরূপ পবিত্র কোরআনের মাহাত্ম্য তুলে ধরা হয়েছে। এ কোরআন যে পূর্ববর্তী গ্রন্থের সত্যায়ক এবং এটিই সত্য-মিথ্যার মাঝে প্রকৃত পার্থক্যকারী সে কথা বলা হয়েছে। এর আয়াতসমূহের ওপর বিশ্বাসীরা আমল করে এবং অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে। আর বাঁকা মনের মানুষ এতে জটিলতা খোঁজে।

দ্বিতীয় রুকু। ১০ থেকে ১৯ নম্বর আয়াতে সত্য অস্বীকারকারীদের জন্য জাহান্নামের ভয়াবহ আজাবের কথা বলা হয়েছে। পার্থিবজীবনের অসাড়তা ও মোহগ্রস্ততার হেতু কী- এ প্রশ্নের উত্তর রয়েছে ১৪ নম্বর আয়াতে। পরবর্তী অংশে ইমান ও দাওয়াতের বিষয়ে সংক্ষেপ তবে মৌলিক আলোচনা করা হয়েছে।

তৃতীয় রুকু। ২১ থেকে ৩০ নম্বর আয়াত পর্যন্ত আহলে কিতাবদের মধ্যে যারা ইলম অনুযায়ী আমল করেনি, সত্য লুকিয়ে রেখেছিল তাদের শাস্তির কথা বলা হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, ক্ষমতা ও সম্মানের মালিক আল্লাহ। তিনি যাকে ইচ্ছা এসব দান করেন, আবার যার থেকে ইচ্ছা এসব ছিনিয়ে নেন। একান্ত বিপদে পড়লে শুধু মুখে ইমানবিরোধী কথা বলা যাবে, এ অনুমতিও দেয়া হয়েছে মুসলমানদের।

চতুর্থ রুকু থেকে ষষ্ঠ রুকু। ৩০ থেকে ৬২ নম্বর আয়াতে ইমরানের স্ত্রী, মরিয়ম (আ.) ও ঈসা (আ.)-এর ঘটনা বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। নেক বান্দা ইমরানের স্ত্রী আল্লাহর রাস্তায় নেক পুত্র বিলিয়ে দেয়ার মানত করে। কিন্তু পরে ইমরানের স্ত্রী একজন কন্যাশিশু প্রসব করেন।

আল্লাহ বলেন, হে ইমরান পরিবার! এ কন্যা পুত্রের চেয়ে উত্তম। এ শিশুকন্যাই ঈসা (আ.) এর মা হজরত মরিয়ম (আ.)। মরিয়ম (আ.) এর ওপর আল্লাহতায়ালা কী ধরনের আশ্চর্য আশ্চর্য অনুগ্রহ করেছেন, এ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে বিস্তারিতভাবে।

সপ্তম থেকে নবম রুকু। ৬২ থেকে ৯১ নম্বর আয়াতে আহলে কিতাবদের সঙ্গে মুসলমানদের আচরণ এবং দাওয়াতের পন্থা কেমন হবে, আহলে কিতাবদের ব্যাপারে ইসলাম ও মুসলমানদের দৃষ্টিভঙ্গিই বা কেমন হবে- এসব বিস্তারিত বলা হয়েছে। তাদের সঙ্গে বিরোধে না গিয়ে কীভাবে সমঝোতায় আসা যায়- সে পথ ও পন্থা বলে দিয়েছেন আল্লাহতায়ালা।

Bootstrap Image Preview