Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৬ মঙ্গলবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

নারী নিয়ে ঐতিহাসিক ‘তারা’ মসজিদে ফটোশুট, যা বললেন আল্লামা মাসঊদ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬ মে ২০১৯, ০৯:২৪ PM
আপডেট: ০৬ মে ২০১৯, ০৯:২৪ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


সম্প্রতি দেশের প্রথম সারির জনপ্রিয় ফ্যাশন হাউজ ‘মেনজ ক্লাব’, ঈদের ফটোশুট করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ঈদকে সামনে রেখে প্রতিষ্ঠানটির নতুন পণ্যের ফটোশুট হয়েছে মসজিদের ভেতরে। তাদের এমন ফটোশুটের ছবি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। বইছে সমালোচনার ঝড়। ছবিতে দেখা যায় লাইট, ক্যামেরা নিয়ে ফটোগ্রাফার এবং সহকারীরা মসজিদের প্রথম কাতারে দাঁড়িয়ে আছেন। সঙ্গে আছেন একজন নারীও।

জানা গেছে, গত শুক্রবার পুরান ঢাকার আরমানিটোলার ‘তারা মসজিদ’ এ এই ফটোশুটটি করা হয়। ক্যামেরার দায়িত্বে ছিলেন শাকিব মুহতাসিম। আর মডেল হিসেবে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন মাহবুব, নাহিদ প্রমুখ।

মেনজ ক্লাবের এ ধরনের ফটোশুট প্রসঙ্গে বিজেশর নামের একটি পেইজ লিখেছে, মেনজ ক্লাব নামক একটি ফ্যাশন হাউজ মসজিদে তাদের পণ্যের ফটোশুট করলেন ঠিক এভাবেই। নারী-পুরুষ একই মসজিদে নামায আদায় করতে পারেন। কিন্তু এভাবে একসঙ্গে একে অন্যকে দেখার সুযোগ সেখানে নেই৷ ছবির নারীটি বেশ পর্দানশিন হয়ে আছেন। কিন্তু পুরুষের সাথে এভাবে মসজিদে প্রবেশ এদেশের মানুষ সহজভাবে নেবে বলে মনে হয় না। আর পণ্যের শুটিং - বিষয়টি আরো স্পর্শকাতর।

ফেসবুকে মাসুদ আনসারী নামে একজন লিখেছেন, মসজিদে চলছে ব্র্যান্ড MENZ KLUB এর ঈদ কালেকশন শুট! এমন কাজকে ধিক্কার জানাই। মসজিদ কর্তৃপক্ষ কই? এরা কীভাবে ঢুকলো? আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এরা সাহসটা পাইলো কই? বাড়াবাড়ির একটা লিমিট থাকা উচিত। এই লজ্জাজনক কাজটার জন্য ব্র‍্যান্ড কর্তৃপক্ষ যদি ক্ষমা বা অনুতপ্ত না হয়; তাহলে এটাকে ভাইরাল করে দিন যেভাবে পারেন। আর কিচ্ছু লাগবে না, এই ব্র‍্যান্ডের দাফন হয়ে যাবে।

‘পুরান ঢাকা’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ লিখেছে- ধিক্কার জানাই MENZ KLUB কে। মসজিদের পবিত্রতা নষ্ট করার জন্য। আমাদের ঈমান দিন দিন নষ্ট হচ্ছে বলেই আজ আমাদের দেশে ‘ফনির মতন’ এত আজাব আসতেছে। আপনারা দেশ সেরা ব্র্যান্ড। আপনারাই যদি এমন কাজ করেন, অন্য ছোট ব্র্যান্ডরাও আপনাদের পথ অনুসরণ করবে। আমরা সবাই জানি মসজিদে ক্যামেরা ব্যবহার করা নিষেধ। সেখানে আপনেরা প্রি-প্ল্যান ফটোশুট করছেন। ‘তারা মসজিদ’-এর মতন একটি বিখ্যাত মসজিদে কীভাবে আপনারা অনুমতি পান ফ্যাশন ফটোশুট করতে? ভাই আমরা এত বেশি নামাজ পড়ি যে লোকে নাম দিয়েছে ‘শুক্কুর বারের মুসলমান’! ভাই দয়া করে আর পাপের বোঝা বাড়াইয়েন না। না হলে ‘ফনির’ পর ‘কনি’ আসবে। আপনাদের এই ফ্যাশন ফটোসেশন মসজিদ অবমাননাকারীর শামিল।

আজম আহমেদ নামে একজন লিখেছেন-ঢাকার বিখ্যাত ‘তারা মসজিদ’-এ MENZ KLUB এর ঈদ ফটোশুট : মসজিদ ইবাদতের স্থান আর এরা এখানে ফটোশুট করার অনুমতি পেল কি করে? মেনজ ক্লাবের মতো একটি নামকরা ব্র্যান্ড যদি এই গর্হিত কাজ করে পরবর্তীতে অন্যরাও উৎসাহিত হবে, আল্লাহর ঘরে ঈদ ফটোশুট করতে।

আল্লাহ সবাইকে সঠিক বিষয় বোঝার তাওফিক দিক। এমন অসংখ্য বিতর্কিত মন্তব্য এখন ফেসবুক দুনিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।

জানা গেছে, মেনজ ক্লাবের ফটোশুটের বিষয়টি দেখাশোনা করেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক সারেক মাহমুদ। তিনি নিজেও একজন মডেল।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই ফটোশুটের দায়িত্বে ছিল অন্য কেউ। এটা কোথায় হয়েছে, আমার জানা নেই।’

সমালোচনা প্রসঙ্গে সারেক মাহমুদ আরও বলেন, ‘যারা মক্কা-মদিনায় হজ বা ওমরাহ পালন করতে যান, তারাও কিন্তু ওখানে (মসজিদে) ছবি তোলেন। যারা এটা নিয়ে এত নেগেটিভ কমেন্ট করছে, তারা তো কেউ ধর্মটাকে ওভাবে পালন করে না।’

মেনজ ক্লাবের এ ধরনের ফটোশুট প্রসঙ্গে দেশের প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, ‘এ ধরণের কাজ মসজিদের সঙ্গে বেয়াদবি। মসজিদ কর্তৃপক্ষের জন্য উচিত হয়নি তাদেরকে এ রকম কাজে সুযোগ দেয়া। ফ্যাশন শো’র মতো কাজের জন্য যারা মসজিদকে বেছে নেয় তাদের উচিত তওবা করা।’

মসজিদে মহিলা প্রবেশের বিষয়ে এই আলেম বলেন, ‘আদবের সাথে মহিলারাও মসজিদে প্রবেশ করতে পারে। এতে কোন অসুবিধা নেই।’

তবে এ ধরণের কাজের ব্যাপারে ধর্মীয় কোন শাস্তির বিধান আছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ধর্ম অবমাননার যে শাস্তি এখানেও সেই শাস্তি হতে পারে। তবে আমরা আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারি না। সরকারের দায়িত্ব এগুলো মনিটর করা এবং এ ধরণের গর্হিত কাজের ব্যাপারে ফ্যাশন হাউজের লোকজনকে সতর্ক করা।’

Bootstrap Image Preview