Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বাংলাদেশে স্মার্ট সিটি তৈরিতে আগ্রহী ভারত: অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬ মে ২০১৯, ০৬:১১ PM
আপডেট: ০৬ মে ২০১৯, ০৬:১১ PM

bdmorning Image Preview



বাংলাদেশে স্মার্ট সিটি তৈরিতে আগ্রহের কথা জানিয়েছেন ভারতীয় হাই কমিশনার রিভা গাঙ্গুলি। তিনি আজ দুপুর ২টায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এমপি, এফসিএ'র সাথে শেরে বাংলানগরে নিজ কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আগ্রহ প্রকাশ করেন।

সাক্ষাৎকালে তারা আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ, দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

এ সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। সময়ের আবর্তনে এ সম্পর্ক পারস্পরিক বিশ্বাসের ওপর ভর করে পরিপক্কতা লাভ করেছে। বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ভারতের সাথে বহুবিধ সম্পর্ক গড়ে তুলতে প্রকৃতপক্ষে ভাল সম্পর্ক, বিশ্বাস, পারস্পারিক স্বার্থ ও সম্মানের ভিত্তিতে নীতি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ ভারতের সাথে সম্পর্কের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তৃতীয় লাইন অফ ক্রেডিটের আওতায় ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণে ভারতের সঙ্গে বিদ্যুৎ, রেলপথ, সড়ক, জাহাজ চলাচল, বন্দরসহ অবকাঠামো খাতে ১৭টি অগ্রাধিকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক গতিশীলতার কারণে শুধু শহরেই নয়, উন্নয়ন হয়েছে গ্রামীণ জনপদেও।

ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি বাংলাদেশকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বন্ধুপ্রতীম দেশ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, পারস্পারিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধি এ অঞ্চলের সকল দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বয়ে আনবে। বাংলাদেশের প্রকল্প পরিচালনা ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত সুন্দর। রিভা গাঙ্গুলি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সাম্প্রতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিশেষ করে রেল ও সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নের বিষয়টি তুলে ধরেন। বাংলাদেশকে এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে অবশ্যই যোগাযোগ ব্যবস্থা ও প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের দিকে আরো বেশী জোর দিতে হবে। ভারত বাংলাদেশের উন্নয়নের সহযোগী হিসাবে বাংলাদেশের এলএনজি, বিদ্যুৎ খাতসহ বিভিন্ন খাতে আরো বেশী বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।

সাক্ষাৎকালে অর্থমন্ত্রী বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থানের কথা উল্লেখ করে বলেন, এই দেশের ভৌগোলিক অবস্থান দেশটিকে আঞ্চলিক যোগাযোগ, বিদেশি বিনিয়োগ এবং গ্লোবাল আউট সোর্সিংয়ের একটি কেন্দ্রে পরিণত করেছে। বাংলাদেশে এখন জনমিতিক লভ্যাংশ (ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড) কাল চলছে, যা ২০৬১ সাল পর্যন্ত থাকবে। দক্ষ জনবল হিসেবে গড়ে তুলতে দেশের তরুণ-তরুণীদের বিভিন্ন ট্রেড প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সরকার ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে।

তিনি বলেন, বর্তমান যুগ হলো আর্টিফিসিয়াল ইনটিলিজেন্স, ম্যাটরিয়াল সাইয়েন্স, বায়ো কেমিস্ট্রি, ব্লক চেইন টেকনোলজি, কোয়ান্টাম সাইয়েন্স, রবোটিক্স, ন্যানো টেকনোলজি ইত্যাদির যুগ। আগামীর চাহিদা পূরণে শিক্ষা সংস্কারের আমাদের ক্লাসরুমগুলোতে পর্যায়ক্রমে এসব বিষয় শিক্ষা প্রদান করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ভারত চাইলে এই খাতেও বিনিয়োগ করতে পারে। ভ্যাট আদায়ে ফাঁকি রোধে ইলেকট্রনিক ফিসকাল ডিভাইস বা ইএফডি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার লক্ষ্যে ইএফডি ক্রয় প্রক্রিয়া এনবিআর-এ চলমান আছে। এ প্রক্রিয়াতেও ভারতকে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশে ভারত এনবিআরের অটোমেশন, ব্যাংকিং খাত, জ্বালানী মজুদ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে পারে।

অর্থমন্ত্রীর বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আহ্বানে ভারতীয় হাই কমিশনার রিভা গাঙ্গুলি আন্তরিকভাবে বিভিন্নখাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং ভারতের বিভিন্ন স্মার্ট সিটির আদলে বাংলাদেশে স্মার্ট সিটির পরামর্শ প্রদান করেন।

অর্থমন্ত্রী স্মার্ট সিটির পরামর্শের উত্তরে বলেন, আমাদের স্মার্ট সিটি তৈরি করার যথেষ্ট সম্ভাবনা ও স্থান রয়েছে। ভারত আগ্রহী হলে আমরা যেকোন সময়ে উন্নয়ন সহযোগী হিসাবে স্মার্ট সিটি তৈরি করার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।

Bootstrap Image Preview