দীর্ঘ ১২ বছর পর লোহাগড়া উপজেলার কোটাকোল ইউনিয়নের ঘাঘায় মধুমতি নদীর ভাঙন প্রতিরোধে কাজ হওয়ায় খুশি এলাকাবাসী। ৪১০ মিটার স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধ কাজ করায় মধুমতি নদীর ভয়াবহ ভাঙন থেকে রক্ষা পাচ্ছে ঘাঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, স্লুইচগেটসহ অন্তত শতাধিক বাড়িঘর ও গাছপালা। এদিকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করার দাবি ভুক্তভোগীদের।
সোমবার (৬ মে) সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, সাড়ে ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে লোহাগড়ার ভাঙন কবলিত ঘাঘা গ্রামে ৪১০ মিটার এলাকায় স্থায়ী প্রতিরক্ষা কাজ চলছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে প্রতিরক্ষা কাজ শুরু হয়েছে। এলক্ষ্যে জিও ব্যাগ ও ব্লক নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।
ইতোমধ্যে ৮ হাজার জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হয়েছে। আরো জিও ব্যাগ ও ব্লক দেয়া হবে। আগামি বছর (২০২০) মে মাসে এ কাজ শেষ হবে। কাজটি বাস্তবায়ন করছে কুমিল্লার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মশিউর রহমান চৌধুরী।
এ ব্যাপারে ঘাঘা গ্রামের নূরুল হক শেখ (৫৮) বলেন, ১২ বছর ধরে নদী ভাঙনের কারণে শত শত বাড়িঘর, গাছপালা ও ফসলি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। গতবছরও বর্ষা মওসুমে এ এলাকা ভেঙ্গেছে। ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন প্রতিরোধে কাজ শুরু করায় আমরা আনন্দিত। কাজটি যথাসময়ে শেষ হলে গ্রামবাসী উপকৃত হবে ।
ঠিকাদার তারিক হাসান বলেন, ভাঙন প্রতিরোধে প্রতিদিন এক হাজার থেকে ১২০০ জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হচ্ছে। আশা করছি মে মাসের মধ্যে জিও ব্যাগ ফেলা শেষ হবে। এছাড়া দ্রুত ব্লকও ডাম্পিং করা হবে। পাউবো নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সক্রিয় সহযোগিতা মধ্য দিয়ে কাজটি বাস্তবায়ন হচ্ছে। যথাসময়ে কাজটি শেষ করতে পারব বলে আশাবাদী। এতে এলাকাবাসী উপকৃত হবেন।
ঘাঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা বলেন, ভাঙনের মুখে জিও ব্যাগ ফেলায় প্রাইমারি স্কুলটি আপাতত রক্ষা পেয়েছে। স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধের কাজ শেষ হলে স্কুলটি পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্ত হবে বলে আশা করছেন তারা।
কোটাকোল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মারিয়া হোসেন বলেন, ঘাঘা এলাকায় মধুমতি নদীতে স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধের ফলে ঘাঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, স্লুইচগেটসহ অন্তত শতাধিক বাড়িঘর, গাছপালা ও জমি রক্ষা পাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানেওয়াজ তালুকদার বলেন, খুলনার ভূতিয়ার বিল ও বর্ণাল-সলিমপুর-কোলাবাসুখালী বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও পুনর্বাসন প্রকল্পের (২য় পর্যায়) আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ঘাঘা এলাকার মধুমতি নদীর ডান পাড়ের ৪১০ মিটার স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধ কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এ এলাকার নদীভাঙন রোধ হবে এবং স্থানীয় জনগণসহ কোটাকোল ইউনিয়নবাসী এ কাজের সুফল পাবেন।