Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৬ মঙ্গলবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত কোম্পানীগঞ্জের আহম্মদের বাঁচার আকুতি  

নুর উদ্দিন মুরাদ, কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ০৬ মে ২০১৯, ১২:৩৩ PM
আপডেট: ০৬ মে ২০১৯, ১২:৩৩ PM

bdmorning Image Preview


'বাঁচতে চাই, তিনটি সন্তানের জন্য হলেও বাঁচতে চাই। সুন্দর আগামীর দিনগুলো নিয়ে দেখতে চাই স্বপ্ন। গরিব হিসেবে নয়, আমাকে মানুষ হিসেবে ভালোবাসুন, একটু সাহায্য করুন, একটু হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসুন। আপনাদের সম্পদ কমে যাবে না, তবে আমার মতো অভাগা হয়তো বেঁচে যাবে।' হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত শেখ আহম্মদের এই করুণ অর্জিতে ভারি হয়ে উঠেছিল হাসপাতালের পরিবেশ। আশপাশের বিছানার রোগী ও তার স্বজনরাও এমন কথা শুনে ঝর ঝর চোখের পানি ছেড়ে কেঁদেছেন।  

বেঁচে থাকার এমন আর্তনাত শুধু অসুস্থ শেখ আহম্মদের নয় গোটা পরিবারেরও। তবে আর্থিক দিক দিয়ে অসচ্ছল এই পরিবারের কাছে কান্না আর আর্তনাত জানানো ছাড়া যেন কিছুই করার নেই। তবে আশা ছাড়েননি। পরিবারটি এখনো স্বপ্ন দেখেন সুস্থ হয়ে আবারো হাসৌজ্জ্বলভাবে চলাফেরা করবে তাদের শেখ আহম্মদ।

মাত্র ৩৪ বছর বয়সেই শরীরে বেঁধেছে দুরারোগ্য রোগ। ছোট্ট একটি পান দোকান দিয়ে অনেক আনন্দ নিয়ে জীবন চলছিলো শেখ আহম্মদের। স্বপ্ন দেখেছিলো সন্তান গুলোকেও সু-শিক্ষিত মানুষ করবে। কিন্তু তার সেই আনন্দ ও স্বপ্ন এখন ম্লান হতে চলেছে। কারণ অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত শেখ আহম্মদ গত একটি বছরই অসুস্থ, অসুস্থতার শুরুতেই ঔষধের খরচ চালাতে পান দোকানটি বিক্রি করে। এরপর এনজিও থেকে টাকা নিয়ে চট্রগ্রাম ও ঢাকা বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে চিকিৎসা করেন। কোনো আশার আলো না দেখে কয়েকমাস পর ঘরের ভিটে বিক্রি করে ভারতে চিকিৎসা নিয়েছিলেন।

সেখানেও কোনো আশার আলো দেখেন নি, এখন জীবন-মৃত্যুর সাথে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করছে সে। কোথা থেকে আসবে চিকিৎসার কয়েক লাখ টাকার খরচ তাও জানেনা নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরপার্বতী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডে বাসিন্দা দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত শেখ আহম্মদের ভাই হারিস আহম্মদ। চিকিৎসাতো দূরের কথা শেখ আহম্মদের স্ত্রী ও ৩ সন্তানদের মুখে তিন বেলা খাবার তুলে দিতেই হিমশিম খান তিনি। তবুও হাল না ছেড়ে সাহায্যের আবেদন জানান ধর্নাঢ্য ব্যক্তিদের কাছে। 

অসুস্থ শেখ আহম্মদের ভাই হারিস আহম্মদ শিপন জানান, ওনাকে প্রতিমাসে ৪ ব্যাগ রক্ত দিতে হয়। পাকস্থলীতে রক্ত ক্ষরণ হয়, এন্ড্রোস্কপি এবং কোলোন্সকপি করেও নির্দিষ্ট স্থানটা সনাক্ত  করতে না পেরে ডাক্তার ক্যাপসুল এন্ড্রোস্কপি করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে। কিন্তু এই পরীক্ষাটা করতে শুধু ১ লাখ ১০ হাজার টাকা লাগবে।

এরপর অপারেশন করতে হবে, তারপর চিকিৎসা। চিকিৎসা ব্যায় প্রায় ৩-৫ লাখ টাকা হবে। এনজিওর ঋণ, ভিটে বিক্রি সবশেষ করে এখন এটাকা কোনোভাবেই জোগাড় সম্ভব নয়। দিন ক্রমান্নয়ে যত যাচ্ছে তত অসুস্থতা বাড়ছে। এ যেনো তিনটা বাচ্চার মাথার উপর ছায়া হয়ে থাকা ঢালটি ধীরে ধীরে ভেঙে যাচ্ছে। 

এমন অবস্থায় মানবিক মানুষগুলোর কাছে আর্থিক সহায়তা কামনা করেন তিনি। 
 

Bootstrap Image Preview