Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৮ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

একটি ব্রীজ বদলে দিতে পারে হরিশপুর-বরাজপাড়াবাসীর জীবনযাত্রা

এম এ ইউসুফ, রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৪ এপ্রিল ২০১৯, ০২:১৭ PM
আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৯, ০২:১৭ PM

bdmorning Image Preview


নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার হরিশপুর-বরাজপাড়া (ঠুনাই ফকির ঘাট) নামক স্থানে নওগাঁর ছোট যুমনা নদীর উপর দিয়ে চলাচলের জন্য এলাকাবাসীর উদ্যোগে নির্মিত বাঁশের সাঁকোই স্থানীয় জনসাধারণের যোগাযোগের একমাত্র ভরসা।

কাশিমপুর, কুজাইল, বরাজপাড়া, ত্রিমোহনী, মিরাট, গোনা, কাশিমপুর, নওগাঁ সদরের শৈলগাছি এলাকার প্রায় ২০ হাজার মানুষের মাঝে যোগ হয়েছে নিবিড় বন্ধন হিসেবে এই সাঁকো। এই এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থার তেমন উন্নয়ন না হওয়ায় সরকারি অনেক জরুরী সুযোগ-সুবিধা ও সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে এই দুই ইউনিয়নের বাসিন্দা। আধুনিকতার যুগে স্বাধীনতার ৪৮ বছর পার হলেও নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার হরিশপুর-বরাজপাড়া নামক স্থানে নওগাঁর ছোট যুমনা নদীর উপর দিয়ে পারাপারের জন্য একটি ব্রীজ নির্মাণ অভাবে দীর্ঘ দিন ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো অথবা নৌকা দিয়ে প্রতিদিন পারাপার হয় প্রায় ১৩টি গ্রামের কৃষক-শ্রমিক, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীসহ প্রায় ২০ হাজার জনগণ।

বর্ষাকালে নৌকা যোগে নদী পারাপার হলেও নদীর নাব্যতা সংকটের কারণে স্থানীয়দের উদ্যোগে তৈরি বাঁশের সাঁকোই একমাত্র যোগাযোগের ভরসা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু সেই সাঁকোটি বেশকিছু দিন ধরে সংস্কার না করায় মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় স্কুলগামী কমলমতী ছাত্র-ছাত্রী ও বৃদ্ধ বণিতা চলাচলের সময় নানান ধরণের অসুবিধার সম্মুখিন হতে হয়।

জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলার সদর থেকে প্রায় সাড়ে ৭ কিলোমিটার পশ্চিমে কাশিমপুর-মিরাট ইউনিয়নের সীমান্ত ঘেষা হরিশপুর-বরাজপাড়া গ্রাম দিয়ে বয়ে গেছে নওগাঁর ছোট যুমনা নদী। প্রায় সাড়ে চার দশক ধরে এই নদীতে কোন প্রকার খনন কাজ না করায় দিনদিন নাব্যতা সংকটের কারণে নদীর বুকে বিশেষ বিশেষ স্থানে চর জেগে উঠার কারণে কৃষি জমিতে সেচ ব্যবস্থা ও নৌ চলাচল স্বাভাবিক গতি ধরে রাখার জন্য এবং নদীর পানি প্রবাহ সচল রাখার লক্ষ্যে সরকারি পর্যায় থেকে কোন প্রকল্প অদ্যবদি হাতে নেওয়া হয়নি। বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি যখন ফুলে-ফেপে উঠে তখন পারিবারিক প্রয়োজনে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়ায় নৌকা।

কিন্তু শুস্ক মৌসুমের শুরুতেই নদীর পানি কমতে থাকায় নৌকা চলাচল বন্ধ হলে জনস্বার্থেই এলাকাবাসির উদ্যোগে বাঁশের সাকো তৈরি করে চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়। পায়ে হেঁটে সাঁকো পার হয়ে দুই ইউনিয়নের বসবাসকারী জনসাধারণ তাদের প্রয়োজনের তাগিদে জেলা ও উপজেলা সদরে যেতে হয়। যানবাহন চলাচলের উপযোগী সরাসরি কোন পথ না থাকায় স্থানীয় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধানসহ অন্যান্য কৃষি পন্যসামগ্রী সহজ ভাবে বাজারজাত করতে না পারায় নায্য মূল্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়ে মোটা অংকের লোকসান গুনতে হয়।

অনেকটা বাধ্য হয়েই ফড়িয়া ও মহাজনদের কাছে চলমান বাজার মূল্যের চেয়ে কমদামে কৃষি পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হয়। হরিশপুর ঠুনাই ফকির ঘাট নামক স্থানে নওগাঁর ছোট যুমনা নদীর উপর একটি ব্রীজ নির্মাণ এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি থাকলেও সরকারি পর্যায়ে উন্নয়নের অনেক প্রকল্প আসে প্রকল্প যায় কিন্তু এই এলাকাবাসির ভাগ্য উন্নয়নে কারো যেন মাথা ব্যাথা নাই। ইরি-বোরো মৌসুমে ধান কাটাসহ আনা নেওয়া খুব অসুবিধা হয়। তাই এই এলাকায় বসবাসরত জনসাধারণের দাবি উক্ত স্থানে একটি ব্রীজ নির্মাণ করা হলে সকল ক্ষেত্রের মানউন্নয়ন হবে।

হরিশপুর স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মাও: মো: মোবারক হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে হরিশপুর ঠুনাই ফকির ঘাট নামক স্থানে একটি ব্রীজ নিমার্ণ না হওয়ায় আমার মাদ্রাসা, পার্শ্বে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীসহ সাধারণ মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বর্ষা মৌসুমে নৌকাতে এবং শুষ্ক মৌসুমে নড়ভোড়ে এই সাঁকো দিয়েই চলাচল করে। উক্ত স্থানে একটি ব্রীজ নির্মাণ করা হলে অত্র এলাকায় যোগাযোগ, ব্যবসা ও শিক্ষা ব্যবস্থার আমল পরিবর্তন হবে।

রাণীনগর এলজিইডি’র প্রকৌশলী মো: শাইদুর রহমান মিঞা জানান, হরিশপুর ঠুনাই ফকির ঘাট নামক স্থানে নওগাঁর ছোট যুমনা নদীর উপর জনস্বার্থে একটি ব্রীজ নিমার্ণের জন্য ইতিমধ্যেই উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রস্তাবনা প্রেরণ করেছি। অনুমোদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

Bootstrap Image Preview