Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

২০২০ সালের মধ্যে চীনকে দরিদ্রমুক্ত করার পরিকল্পনা শি জিনপিংর

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ এপ্রিল ২০১৯, ০৯:৫৭ AM
আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৯, ০৯:৫৭ AM

bdmorning Image Preview


দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চীন। আগামী বছর তথা ২০২০ সালের মধ্যেই দেশের ১৪০ কোটি জনগণের সবাইকে দারিদ্র্যসীমার বাইরে নিতে চায় দেশটি। পাঁচ বছর আগে ২০১৫ সালের এক ঐতিহাসিক ভাষণে লক্ষ্য ও পরিকল্পনা নির্ধারণ করেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ক্ষমতাসীন দল কমিউনিস্ট পার্টির ৭ লাখ ৭৫ হাজার নেতাকর্মীকে দারিদ্র্যবিরোধী ক্যাম্পেইনে নামানো হয়েছে। দারিদ্র্য বিমোচনে গ্রাম এলাকাগুলোতে নিয়োগ করা হয়েছে পরামর্শক কর্মকর্তাও।

সরকার জনগণকে কিভাবে সহায়তা করবে সে ব্যাপারে নানা তথ্য নিয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন এসব কর্মকর্তা। নিজেদের সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে দারিদ্র্য জয় করতে পথ দেখাচ্ছেন তারা। শনিবার সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। দৈনিক ১.১০ ডলার ও বার্ষিক ৪১৬ ডলারের (২৮০০ ইউয়ান) আয়কে দারিদ্র্যসীমা হিসেবে নির্দিষ্ট করেছে চীন।

তবে বিশ্বব্যাংকের দারিদ্র্যসীমা অনুযায়ী দৈনিক ১.৯০ ডলার ও বার্ষিক ৭শ’ ডলার আয়কে দরিদ্র হিসেবে অভিহিত করা হয়। সরকারের লক্ষ্য, আগামী বছরের মধ্যে মাথাপিছু আয় কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের ওপরে নিয়ে যাওয়া। সরকারের এ চেষ্টা ও পরিকল্পনাতে সাড়াও দিয়েছে গ্রামের লোকজন।

চীনের গুইঝোও প্রদেশের লিপিং কাউন্টির একটি গ্রাম গাইবাও। ২০১৫ সালে এক ভাষণে শি জিনপিং ২০২০ সালের মধ্যে দারিদ্র্য দূরীকরণে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার অংশ হিসেবে ২০১৮ সাল থেকে এই গ্রামে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন উ ইউশেংকে নামে একজন কর্মকর্তা।

প্রাদেশিক এই দারিদ্র্য দূরীকরণ কর্মকর্তার পরামর্শ ও সহায়তায় গাইবাও গ্রামের বাসিন্দারা এখন তাদের প্রাত্যহিক জীবনের ওপর শর্টফিল্ম তৈরি করছে। এই ফিল্মগুলো ইউটিউবে আপলোড করে গ্রামবাসীরা অর্থ উপার্জনের পাশাপাশি কৃষিকাজে অন্যদের উৎসাহিতও করছে। শি জিনপিংয়ের প্রতিশ্রুতির সমালোচনা করে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ বলেন, সম্ভবত আগামী বছর দারিদ্র্য দূর হয়েছে বলে ঘোষণা দেয়া হতে পারে কিন্তু তা বাস্তবসম্মত হবে না।

চীনের এ দারিদ্র্য দূর করার চেষ্টা জিনপিংয়ের মাধ্যমে শুরু হয়নি। বরং এর শুরু আধুনিক চীনের প্রতিষ্ঠাতা মাও সেতুং-এর সাংস্কৃতিক বিপ্লবের হাত ধরে। গ্রামের কৃষক-মজুরদের দারিদ্র্যই চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টিকে জনপ্রিয় করে তোলে।

কিন্তু বিশ্লেষকদের মতে, দারিদ্র্য বিমোচনে মাওয়ের অর্থনৈতিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেশকে সেভাবে দারিদ্র্যমুক্ত করতে পারেনি। ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের চায়না ইন্সটিটিউটের পরিচালক স্টিভ স্যাং-এর মতে, ১৯৪৯ সালে বর্তমানে চীনের অন্যতম উন্নত ও বড় শহর সাংহাই হংকং-এর চেয়ে ধনী ছিল। এছাড়া উপকূলীয় যেকোনো শহরই তাইওয়ানের চেয়েও উন্নত ছিল। কিন্তু ১৯৭৯ সালে হংকং ও তাইওয়ান অন্য শহরগুলো অনেক অনেক এগিয়ে যায়।’

বিশ্বব্যাংকের এক হিসাব অনুযায়ী, ১৯৯০ সালেও দেশজুড়ে দরিদ্র লোকের সংখ্যা ছিল ৭৫ কোটি, যা সেই সময়ের জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ। এ সময় নতুন করে পরিকল্পনা ও লক্ষ্য স্থির করে চীন। প্রায় ৩০ বছর পর ২০১৯ সালে গরিব মানুষের সংখ্যা এখন মাত্র এক কোটি ৬৬ লাখ।

জিনপিং ক্ষমতায় আসার পরই দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি সবচেয়ে ত্বরান্বিত হয়েছে বলে দাবি কমিউনিস্ট পার্টির। নিজের এ সাফল্যে এখনও সন্তুষ্ট নন জিনপিং। দারিদ্র্য বিমোচন কতটুকু হয়েছে গত সপ্তাহেই নিজের গ্রামে গিয়ে তা দেখে আসেন তিনি।

Bootstrap Image Preview