Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

চকরিয়ায় অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ দাবি নিয়ে মালিক-দখলদারদের উত্তেজনা

রিদুয়ান হাফিজ, চকরিয়া-পেকুয়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৭ এপ্রিল ২০১৯, ০৭:০৮ PM
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৯, ০৭:০৮ PM

bdmorning Image Preview


মাতামুহুরী নদীর চিরিঙ্গা সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে প্রশাসনের উদ্যোগে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে সেতুর আশপাশ এলাকার জমি মালিকদের কাছে অধিগ্রহনের আওতায় দফায় দফায় নোটিশ জারি করেছেন জেলা প্রশাসন। জমির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে বেশিরভাগ জমি মালিকদের মাঝে সম্প্রতি সময়ে ক্ষতিপুরণের টাকা বিতরণও শুরু হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযোগ উঠেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি শাখার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জমি অধিগ্রহনের বিপরীতে ক্ষতিপূরণের টাকা বিতরণে জমির প্রকৃত মালিকদেরকে উপেক্ষা করে চলছেন। পক্ষান্তরে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের টাকা দেয়া হয়েছে স্থাপনায় দখলে থাকা লোকজন। এ ঘটনায় জমি মালিক ও দখলদারদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

জমি মালিক ও দখলদার পক্ষের বিরোধের জেরে সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার সকালে চকরিয়া উপজেলা সদরে মাতামুহুরী নদীর চিরিঙ্গা সেতু পয়েন্টে অধিগ্রহণের আওতায় পড়া জমি পরির্দশন ও ভুক্তভোগী জমি মালিকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তে এসেছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

পরির্দশনের একপর্যায়ে চকরিয়া সড়ক বিভাগের অফিনের সামনে ক্ষতিপূরণের টাকা দাবি নিয়ে দুইপক্ষের লোকজন ম্যাজিষ্ট্রেটের সামনে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। ওইসময় দুইপক্ষের লোকজনের হামলা ও পাল্টা হামলায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেন, সরকারিভাবে নীতিমালায় আছে, অধিগ্রহণের আওতায় পড়া এসব জমির খতিয়ানমুলে বৈধ মালিকই ক্ষতিপূরণের টাকা পাবে। কিন্তু টাকা বিতরণের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের ভুমি শাখার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা খতিয়ানমুলে বৈধ মালিকের বদলে উল্লেখিত জমিতে যারা অবৈধভাবে দখলে আছেন তাদেরকে দখলদার ক্যাটাগরীতে রেখে ক্ষতিপুরণের টাকা দিচ্ছেন। এতে প্রকৃত জমি মালিকরা ক্ষতিপূরণের টাকা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ ধরণের অহরহ ঘটনা বর্তমানে বিরাজ করছেন।

অনুরূপভাবে চিরিঙ্গা সেতুর পাশে চকরিয়া উপজেলার চিরিঙ্গা মৌজার ১৬ সৃজিত খতিয়ান নং ১০১৩, ২৯০ নং বিএস দাগের অনুকুলে ১০ শতক জমি মালিক হন চকরিয়া পৌরসভার ২নম্বর ওয়ার্ডের জনতা মার্কেট এলাকার আলহাজ মোজাহের আহমদ সওদাগরের ছেলে সামসুল আলম ও কায়সার আলম। ইতোমধ্যে উল্লেখিত জমি অধিগ্রহণের আওতায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসন থেকে তাদের নামে তিনটি নোটিশ জারি করা হয়েছে। সর্বশেষ নোটিশে ক্ষতিপূরণের টাকা বুঝে নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় উপস্থিত হতেও বলা হয়।

জমি মালিক সামসুল আলম দাবি করেছেন, প্রথমে জমি অধিগ্রহণ ও পরবর্তীতে ক্ষতিপূরণের টাকা বুঝে নিতে আমাদেরকে তিনবার নোটিশ দেয়া হয়েছে জেলা প্রশাসন থেকে। সর্বশেষ নোটিশের পর আমরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগে গেলে জানতে পারি আমাদের উল্লেখিত জমির দখলদার পরিচয়ে জাকারিয়া নামের একব্যক্তি ক্ষতিপূরণের বেশিরভাগ টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিয়েছেন।

সামসুল আলম অভিযোগ করেছেন, জাকারিয়া নামের ওই ব্যক্তি একই মৌজার ১৯৬ সৃজিত খতিয়ানের ২৯০ নং দাগের মাত্র এক দশমিক ৫০ শতক জমির মালিক। কিন্তু তিনি কতিপয় দালাল চক্রের যোগসাজসে সুকৌশলে আমাদের জমির অনুকূল ক্ষতিপূরণের টাকা লুটে নিচ্ছেন।

বিষয়টি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঘটনাস্থলে তদন্তে উপস্থিত কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ম্যাজিষ্ট্রেট ও ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা আবু হাসনাত মো. শহিদুল হক বলেন, জমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণের টাকা বিতরণের ক্ষেত্রে কোন ধরণের অনিয়ম হবে না। কিছু কিছু ভূমি মালিক ক্ষতিপূরণের টাকা প্রাপ্তি নিয়ে অভিযোগ করায় সরেজমিন বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, বৈধ কাগজপত্র অর্থাৎ খতিয়ানমুলে যিনি জমির মালিক তিনিই ক্ষতিপূরণের টাকা পাবেন। তবে কিছু ক্ষেত্রে জমিতে দখলকারক হিসেবে যিনি আছেন তিনিও সুবিধার আওতায় আছে।

ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা আবু হাসনাত মো. শহিদুল হক বলেন, চকরিয়া উপজেলার চিরিঙ্গা মৌজার ১৬ সৃজিত খতিয়ান নং ১০১৩, ২৯০ নং বিএস দাগের জমির বিষয়ে যখন আপত্তি উঠেছে। পরবর্তীতে বিষয়টি সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত উল্লেখিত দাগের জমির ক্ষতিপূরণের টাকা বিতরণ প্রয়োজনে বন্ধ রাখা হবে।

Bootstrap Image Preview