বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে টাইফয়েড রোগ নিরাময়ের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিহতকারী সুপারবাগ বা ব্যাক্টেরিয়ার এর সন্ধান পেয়েছেন গবেষকরা অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণুগুলোকেই সুপারবাগ বলা হয়ে থাকে।
গবেষকরা আশঙ্কা করছেন, টাইফয়েডের প্রতিষেধক প্রতিহত করার জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়ার ফলে কয়েক বছরের মধ্যেই টাইফয়েড নিরাময়কারী অ্যান্টি-বায়োটিক অকার্যকর হয়ে পড়বে।
মেরিয়োস্ক ফাউন্ডেশনের সায়েন্টিফিক ডিরেক্টর এবং ইরামোস বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রপিক্যাল ব্যাকটেরিওলজির প্রফেসর প্রফেসর হুবার্ট এন্দেজ বলেন, ‘যে সব এলাকায় এই রোগের মহামারী দেখা যায় সেখানে এই ব্যাকটেরিয়ার উত্থান হচ্ছে এবং অ্যান্টি-বায়োটিক সঠিকভাবে কাজ করছে না। এই ব্যাকটেরিয়াগুলো পাকিস্তান এবং এখন বাংলাদেশে দেখা গিয়েছে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ‘প্রতিবছর নতুন করে প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ থেকে ২ কোটি লোক টাইফয়েডে আক্রান্ত হন। এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ১ লাখ ২৮ হাজার থেকে ১ লাখ ৬১ হাজার।’ উচ্চতর সংক্রামক এই ব্যাধির জন্য স্যালমোনিলা টাইফি ব্যাকটেরিয়াকে দায়ী করা হয়। দূষিত খাবার ও পানি, অনুন্নত স্যাটিটেশন ব্যবস্থায় এই ব্যাকটেরিয়া বেশি ছড়ায়। এশিয়া এবং আফ্রিকার বেশিরভাগ অঞ্চলে এর প্রার্দুভাব বেশি।
জ্বর, পেটব্যাথা, বমি, মাথাব্যাথা এবং ডায়ারিয়া এর অন্যতম লক্ষণ। এই রোগের চিকিৎসায় সবচেয়ে প্রচলিত পদ্ধতি অ্যান্টি-বায়োটিক। এর ব্যবহার এটি নিশ্চিত করে, টাইফয়েডে ভুগে মৃত্যুর আশঙ্কা মাত্র ১ ভাগ। কিন্তু যদি এই অ্যান্টি-বায়োটিক অকার্যকর হয়ে পড়ে তবে এটি ১৫ ভাগে গিয়ে পৌঁছবে। যা প্রতিবছর ৩০ থেকে ৪০ লাখ মৃত্যুর কারণ হবে। মঙ্গলবার এমবায়ো’তে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই সতর্কবার্তা দেয়া হয়।
অ্যান্টিবায়োটিকের কর্মক্ষমতা শেষ হয়ে যাওয়াকে একবিংশ শতাব্দীর জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি বলে মনে করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে ওষুধ-প্রতিরোধী সংক্রমণের কারণে বছরে ৭ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে এমন ব্যাকটেরিয়া পেয়েছেন যা কলিস্টিন অ্যান্টিবায়োটিক ঠেকিয়ে দিতে পারে। এর ফলে অনিরাময়যোগ্য সংক্রমণের হুমকি বেড়েছে।