সিলেটের বিশ্বনাথে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কাউছার আহমদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, ঘুষ দাবিসহ নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলার ৫নং দশঘর কাস্টার মান্দারুকা ছুরত মিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নোমান উদ্দিন মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সিলেটের প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের বিভাগীয় উপ-পরিচালকের কাছে এসব লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে নোমান উদ্দিন উল্লেখ করেন, বিশ্বনাথ উপজেলা সহকারী কর্মকর্তা কাউছার আহমদ ভূঁইয়া ৫নং দশঘর কাস্টারের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বিভিন্নভাবে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে আমার কাছ থেকে একাধিকবার অর্থ আত্মসাৎ করেন। গত ২ এপ্রিল (মঙ্গলবার) সকালে আমি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে দপ্তরির মাধ্যমে আমার বিদ্যালয়ের চাবি ও একটি নৈমিত্তিক ছুটির দরখাস্ত সহকারী শিক্ষক মুজিবুর রহমানের নিকট প্রেরণ করি। অসুস্থতার কারণে চিকিৎসক আমাকে ৫ দিনের পূর্ণ বিশ্রামের পরামর্শ দেন। পরে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মোবাইল ফোনে বারবার কল দিয়েও যোগাযোগ করতে পারিনি।
অভিযোগে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ৬ এপ্রিল (শনিবার) তিনি বিদ্যালয় পরিদর্শনে এসে সহকারী শিক্ষক ও দপ্তরির মোবাইল ফোন তার কাছে নিয়ে সবাইকে অফিস থেকে বের করে দেন। বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতা ও অন্যান্য কাগজ ঘেটে পরিদর্শন বইয়ে তিন কার্যদিবসের মধ্যে আমার অনুপস্থিত থাকার কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়ে আসেন। দু'দিন পর লিখিত জবাবসহ ডাক্তারের পরামর্শের ফটোকপি প্রদান ও নৈমিত্তিক ছুটির দরখাস্ত করি। তিনি ছুটি মঞ্জুর না করে আমার কাছে টাকা দাবি করে বলেন, 'কুমিল্লার বুড়িচংয়ে বউ-পরিবার রেখে বিশ্বনাথে এসেছি শুধু টাকার জন্যে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, শিক্ষা কর্মকর্তা কিছুই বুঝি না। শুধু টাকা বুঝি।'
এর পরদিন ফের দেখা করলে তিনি আমার মোবাইল ফোন তার কাছে নিয়ে নৈমিত্তিক ছুটির জন্যে ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। ১০ এপ্রিল বুধবার দুটি মোবাইল ফোন সাথে নিয়ে তার অফিসে গেলে তিনি একটি ফোন নিয়ে নেন। একটি ফোন পূর্বেই রেকর্ডে ফেলে কাপড়ের ব্যাগে লুকিয়ে রাখি। ওই সময় তাকে নগদ ৪ হাজার টাকা দেই। তিনি আরও ৫ হাজার টাকা দিতে বললে আমি পরদিন অনুষ্ঠেয় মাসিক সমন্বয় সভায় আরও ১ হাজার টাকা দেয়ার কথা বলে চলে আসি। পরদিন মাসিক সমন্বয় সভা শেষে বিশ্বনাথ পুরান বাজারের ভোজনঘর রেস্টুরেন্টে তিনি আমাকে নিয়ে এসে ১ হাজার টাকা দিতে চাপ প্রয়োগ করেন। পাশাপাশি, বর্তমান অর্থবছরের স্লিপের এবং রুটিন মেরামত কাজের টাকা থেকে ৫% হারে কমিশন দিতে আগেভাগেই চাপ দিতে শুরু করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন নোমান উদ্দিন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কাউছার আহমদ ভূঁইয়ার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
সিলেটের প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের বিভাগীয় উপ-পরিচালক শাফায়েত আলম বলেন, অফিসের বাইরে থাকায় অভিযোগটি এখনও হাতে পাইনি। পেলে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।