Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

মানহীন শিশু খাদ্যে সয়লাব বাজার, মৃত্যু ঝুঁকিতে ৩ জনের ১ জন শিশু

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ এপ্রিল ২০১৯, ০৬:৩৪ PM
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৯, ০৬:৩৪ PM

bdmorning Image Preview


হঠাৎ ফুড পয়জনিংয়ের  কারণে গত তিন দিন ধরে ঢাকা শিশু হাসপাতালে ভর্তি ৫ বছরের প্রাচুর্য। ৯৬ ঘণ্টার অতিবাহিত হলেও অবস্থার কোনো উন্নতি নেই। চিন্তার ভাজ পরতে শুরু করেছে পরিবার ও চিকিৎসকের কপালে।

আক্রান্ত শিশুর বাবা মহাখালির বাসিন্দা মোহাম্মদ আক্কাশ মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন ১১ এপ্রিল স্কুল থেকে ফেরার পর থেকে পেটে ব্যথার কথা বলছিল আমার ছেলে। কিন্তু সাধারণ ব্যথা ভেবে খাবার স্যালাইন খাওয়ায় ওর মা। কারণ মাঝে মাঝে পেটে ব্যথার কথা বলতো বাবু।

অতিরিক্ত ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও পরজীবীর সংক্রমণকারী খাদ্য প্রাচুর্যের এই অবস্থার জন্য দায়ী বলে দাবি করছেন ডাক্তাররা। শুধু প্রাচুর্য নয় আরও কয়েক শত শিশু একই সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে ভর্তি হয়েছে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে শ্যামলী এলাকায় অবস্থিত ঢাকা শিশু হাসপাতাল। 

এ বিষয়য়ে বাংলাদেশ শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রের (ঢাকা শিশু হাসপাতাল) সাবেক পরিচালক ডা. সৈয়দ খাইরুল আমিনের সাথে কথা হলে তিনি বিডিমর্নিংকে বলেন, বর্তমানে যে অবস্থা দেখছি তা এখনি যদি ঠিক করা না যায় তাহলে হলফ করে বলতে পারি, বেশি দিন বাকি নেই ‘নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের’ মত অভিবাবকরা ‘নিরাপদ শিশু খাদ্য’ জন্য আন্দোলন নিয়ে রাজপথে নেমে আসবে।

তিনি জানান, ৫ এপ্রিল জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বর্তমান বাংলাদেশে প্রতি ৩ জন শিশুর মধ্য ১ জন শিশু মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছে। আর আমি মনে করি এর জন্য মানহীন শিশু খাদ্য দায়ী। যা আসলেই একটি উন্নয়নশীল দেশের জন্য বড় হুমকি।

মানহীন শিশু খাদ্য কিভাবে দায়ী তা জানতে চাওয়া হলে ডা. সৈয়দ খাইরুল আমিন বলেন, বর্তমানে জন্মের পর থেকেই ভেজাল ও মানহীন খাদ্য ও নানা পণ্যের (শিশুর ব্যবহৃত পণ্য) মধ্যে দিয়ে বেড়ে উঠছে শিশুরা। যার ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারাচ্ছে  তারা।

যাতে করে  জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ দূষণের মাধ্যমে প্রসারিত রোগগুলো প্রতিহত করার মত ক্ষমতা হারাচ্ছে শিশুরা। ফলে প্রতি মূর্হুতে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে প্রাচুর্যের মত শিশুরা।

বাজারে ভেজাল শিশু খাদ্যের বিষয়ে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক বলেন, হ্যাঁ আমি আপনার সাথে একমত। কিছু অসাধু  ব্যবসায়ী  অধিক মোনাফার জন্য শিশুদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, আপনি সংবাদিক, সারাদিন অনেক তথ্য আপনার কাছে আসে। আপনি অবশ্যই অবগত আছেন বাজারের ভেজাল খাদ্যে যে বা যারা বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম শুরু করেছি।

মাহফুজুল হক এছাড়া বিশেষ জোড় দিয়ে বলেন, আমদানি করা পণ্যগুলোর বেশিভাগ শিশুদের জন্য, কারণ এতে অধিক মুনাফা হয়। কিন্তু যারা আমদানী করছে তারাও নকল ও মেয়াদহীন পণ্য নিয়ে আসছে। তাই আমাদের পাশাপাশি বিএসটিআই কর্তৃপক্ষকেই সঠিক ও দৃষ্টান্ত মূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। যদি দেশে প্রবেশের সব বিএসটিআই দ্বারা আমদানিকৃত পণ্যের যাচাই নিশ্চিত করা যায়। তাহলে শত ভাগ না হলেও অনেকটাই কমিয়ে আনা যাবে মানহীন ও ভেজাল খাদ্যের পরিমাণ।

এ বিষয়ে বিএসটিআই কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলে কথা বলার জন্য কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে নাম না প্রকাশের শর্ত দিয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির এক কর্মকর্তা জানান, আসলে সেভাবে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে বিএসটিআই সরজমিন তদারকি অনেক কম। আর যেগুলো হয় সেগুলো আমদানি কারক প্রতিষ্ঠান দিয়ে যায়। তার উপরে ভিত্তি করেই পণ্যের ছাড় পত্র দেওয়া হচ্ছে।

Bootstrap Image Preview