Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বনানী অগ্নিকাণ্ড: ‘স্পাইডারম্যান’ খ্যাত জসিমকে সংবর্ধনা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:০২ PM
আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:০২ PM

bdmorning Image Preview


রাজধানীর বনানীতে এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে নিজের জীবন বাজি রেখে পানির পাইপ বেয়ে সাততলায় উঠে একজন বিদেশি ও নারীসহ পাঁচজন জীবন্ত মানুষকে উদ্ধার করেছিলেন জসিম উদ্দিন। এ ঘটনায় ‘স্পাইডারম্যান’ হিসেবে পরিচিতি পান তিনি।

সোমবার শেরপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ‘স্পাইডারম্যান’ খ্যাত জসিম উদ্দিনকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।

দুপুরে জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষ রজনীগন্ধায় জেলা প্রশাসক আনারকলি মাহবুবের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা সভায় জসিম উদ্দিন অগ্নিকাণ্ডে আটকা পড়া মানুষকে জীবন্ত উদ্ধার করে আনার রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।

জসিম উদ্দিন বলেন, ‘বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা দেখে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। তখন ওই ভবনে ঢোকার কোনো রাস্তা না পেয়ে পাইপ বেয়ে ভবনের সাততলায় উঠে যাই। সেখানে গ্রিল বেয়ে প্রথমে একজন নারীকে উদ্ধার করি। পরে শ্রীলঙ্কার এক নাগরিকসহ আরও তিনজনকে উদ্ধার করি। ওই সময় বৈদ্যুতিক তার বেয়ে নামা অনেক মানুষকে নামতে নিষেধ করেছি আমি। কিন্তু আমার কথা না শুনে দুজন লোক চোখের সামনে নিচে পড়ে মারা যান।’

উদ্ধারকাজে জসিমের সহায়তার সব ঘটনা না হলেও এক তরুণীর জীবন বাঁচানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তার মানবিক কাজের জন্য সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রশংসিত হন।

জেলা প্রশাসক আনারকলি মাহবুব অকুতোভয় এই যুবককে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানিয়ে ফুলের তোড়া ও নগদ ১০ হাজার টাকা এবং অন্যান্য উপহার সামগ্রী তুলে দেন।

জসিম উদ্দিন জানান, তার বাড়ি শেরপুর সদর উপজেলার বলাইয়ের চর ইউনিয়নের দুসরা ছনকান্দা গ্রামে। তার বাবা ওমর আলী ১৯৯৮ সালে মারা যান। তারা তিন ভাই এক বোন। অভাবেব তাড়নায় তারা ঢাকা চলে যান। ঢাকার কুড়িল বস্তিতে বর্তমানে বসবাস করছেন তারা। বর্তমানে তিনি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট বাসেত মজুমদারের বাসায় কাজ করেন। একই সঙ্গে তিনি এরশাদ নগরের হাওয়া মাঠের তত্ত্বাবধায়ক এবং ক্রীড়া সংগঠক। তার অন্য দুই ভাই মোবাইলের দোকানে কাজ করেন।

জসিম উদ্দিন বলেন, সেদিন নিজের তরফ থেকে আরও মানুষকে বাঁচাতে পারলে খুশি হতাম। কিন্তু অনেক মানুষ মারা যাওয়ায় সেই দিনটি আমার কাছে শোকের। সাহায্য-সহযোগিতার চেয়ে মানুষের দোয়া ও ভালোবাসা আমার বড় প্রাপ্তি। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মানবতার সেবায় যেন নিজেকে নিয়োজিত রাখতে পারি- এটাই আমার প্রতিজ্ঞা। আমি মানুষের জন্য জীবন দিয়ে হলেও কাজ করতে চাই। এজন্য আমি সবার কাছে দোয়া প্রার্থী।

স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক এটিএম জিয়াউল ইসলামের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন- অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাইয়েদ এজেড মোরশেদ আলী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জন কেনেডি জাম্বিল, প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আধার প্রমুখ।

Bootstrap Image Preview