Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সুইডেনে নাচে গানে বাংলা নববর্ষ পালিত

কূটনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৫ এপ্রিল ২০১৯, ০২:১৭ PM
আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৯, ০২:১৭ PM

bdmorning Image Preview


সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে বাংলাদেশ দূতাবাসে নাচে গানে বাংলা নববর্ষ উদযাপিত হয়েছে। রবিবার, ১৪ এপ্রিল-২০১৯ পয়লা বৈশাখ সুইডেনে বসবাসরত বাংলাদেশিদের সঙ্গে নিয়ে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে আর নাচ-গান-কবিতায় নতুন বছরকে (১৪২৬) স্বাগত জানায় দূতাবাস। এ অনুষ্ঠানে নরওয়ে ও ফিনল্যান্ডে বসবাসরত বাঙালিরাও যোগ দেন।

নতুন বছরের আগমনী আনন্দের সুর সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে দূতাবাস চত্বর ডালা-কুলা, মুখোশ, রং-বেরঙের ঘুড়ি ও বাহারী উপকরণ দিয়ে চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্যবাহী সাজে সাজানো হয়।

দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নাজমুল ইসলাম তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। বক্তব্যের সূচনায় তিনি বাংলা নববর্ষের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরেন।

পয়লা বৈশাখ উদযাপনকে বাঙালি সংস্কৃতির প্রধান উৎসব উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলা নববর্ষ মূলত বাঙালি জাতির ধর্মনিরপেক্ষ চেতনাকে অপরাজেয় শক্তি ও মহিমায় পূর্ণ করার উৎসব, সকল কুসংস্কার ও কূপমণ্ডূকতার বিরুদ্ধে লড়াই করবার প্রেরণার উৎস। তিনি মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ইউনেসকো কর্তৃক Intangible Cultural Heritage-এর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন এবং আমাদের বাংলা সংস্কৃতিকে ঋদ্ধ করে তোলার পেছনে এর ভূমিকার বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি প্রবাসে বসবাসরত সকল বাংলাদেশিদের অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও সহনশীল বাংলাদেশ গঠনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মননে বাংলা কৃষ্টি ও সংস্কৃতির বীজ বপনের জন্য সকলকে অনুরোধ জানান।

সাংস্কৃতিক পর্বে প্রবাসী শিল্পী ও দূতাবাসের কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যদের নাচ, গান ও কবিতা পরিবেশনা আগত অতিথিদের মুগ্ধ করে। ‘সাত ভাই চম্পা’ গানের সঙ্গে নাচ পরিবেশন করে ছোট্ট আজরীন চৌধুরী। কবিতা আবৃত্তি করেন এনামুল হক ও রোমানা আক্তার। দেশীয় গান পরিবেশন করে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন পুলক নন্দী, শিপ্রা নন্দী, কাঁকন আক্তার, নাফিস মালিক, মাজহারুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ থেকে আগত ‘ইয়ুথ বাংলা কালচারাল ফোরাম’-এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর আরহাম চৌধুরী।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে আগত অতিথিদের পরিবেশন করা হয় ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি খাবার ও মিষ্টান্ন সামগ্রী। খাবারের তালিকায় ছিল বাঙালির প্রিয় পান্তা-ইলিশ, খিচুড়ি, বিভিন্ন পদের মাংস, হরেক রকম ভর্তা, দেশিয় কয়েক পদের পিঠা-পুলি, মিষ্টান্ন ইত্যাদি। আগত সকলেই অনুষ্ঠানটি নিয়ে তাঁদের প্রবল উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এবং প্রাণভরে অনুষ্ঠান ও দেশীয় সব খাবার উপভোগ করেন।

বাংলাদেশি শিল্পীর চিত্র প্রদর্শনী: বাংলাদেশ দূতাবাস ও সুইডেনের ঐতিহ্যবাহী শিল্পকলা প্রতিষ্ঠান Färgfabriken-এর যৌথ আয়োজনে তাদের আর্ট গ্যালারিতে শুরু হয়েছে ডেলটা অ্যান্ড সেডিমেন্ট-থ্রি কনটেমপোরারি এক্সপ্রেশনস ফ্রম বাংলাদেশ শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনী।

গত শনিবার (১৩ এপ্রিল) এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়। প্রদর্শনীটি ১৬ জুন পর্যন্ত চলবে। প্রদর্শনীতে বাংলাদেশের বর্তমান সময়ের তিনজন শিল্পী ইয়াসমিন জাহান নূপুর, শুভ্র কান্তি দাস ও মুনেম ওয়াসিফের চিত্রকর্ম প্রদর্শিত হচ্ছে।

রাষ্ট্রদূত মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, নদীবিধৌত বাংলাদেশের রয়েছে নিজস্ব সমৃদ্ধ ইতিহাস ও বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। জলবায়ু পরিবর্তনে অতি নগণ্য অংশগ্রহণকারী হয়েও বাংলাদেশ এর বিশাল ফলভোগকারী। তিনি সরকার কর্তৃক জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলাসহ দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং অর্জন তুলে ধরেন।

রাষ্ট্রদূত এ প্রদর্শনীর সহ-আয়োজক হওয়ার জন্য Färgfabriken কে ধন্যবাদ জানান। তিনি বাংলাদেশ থেকে আগত শিল্পীদের অভিনন্দন জানান। এ ধরনের প্রদর্শনীর আয়োজন দুই দেশের সাংস্কৃতিক বিনিময়ের অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি ভবিষ্যতে এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে দেশটির বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তি, সুইডেনে অবস্থিত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কর্মকর্তা, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও প্রবাসী বাংলাদেশি অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে দূতাবাসের আয়োজনে নানাপদের ঐতিহ্যবাহী মুখরোচক বাংলাদেশি খাবার পরিবেশিত হয়।

Bootstrap Image Preview