'জীর্ণ যাহা কিছু যাহা কিছু ক্ষীণ, নবীনের মাঝে হোক তা বিলীন, ধুয়ে যাক যত পুরনো মলিন, নব আলোকের স্নানে' এমনই আশায় সব জীর্ণতাকে ধুয়ে মুছে দিতে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে ফরিদপুরের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।
উদ্দেশ্য সব ক্ষুদ্রতা-দীনতাকে ঢেকে বাঙালির জীবনে নতুন সুর ছড়িয়ে দেয়া। আশা নতুনের এ আলোকচ্ছটায় আবার নবসাজে সাজবে সবুজ-শ্যামল বাংলাদেশ।
বসন্তের দখিনা বাতাসে এখন কেবলই পহেলা বৈশাখের আগমনী সুর। বাঙালির সবচেয়ে বড় এই অসম্প্রদায়িক সার্বজনীন উৎসবকে বরণ করে নিতে সংস্কৃতির রাজধানী ফরিদপুরে চলছে জোর প্রস্তুতি। সরব শহরের সাংস্কৃতিক অঙ্গন। প্রতিটি সংগঠনের সবাই ব্যস্ত গান, নাচ, কবিতা আবৃত্তি ও নাটকে নিজস্বতা ধরে রাখতে। তাই চলছে মহড়া। সকাল থেকে রাত অবধি মহাব্যস্ত থাকছেন কর্মীরা।
নববর্ষকে বরণ করতে পহেলা বৈশাখের ভোর থেকেই শুরু হয় শহরের বিভিন্ন স্থানে নানা অনুষ্ঠান। যা রাত পর্যন্ত চলে। এদিন শহরে হাজারও মানুষের ঢল নামে। লাল, সাদা, খয়েরি আর বাসন্তি রঙের নতুন পোশাকে ফরিদপুর হয়ে উঠে রঙিন। তাই শুরু হয়ে গেছে নতুন পোশাক তৈরির কাজ। এক একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন তৈরি করে নিজস্ব নকশায় নতুন পোশাক। ফলে অনুষ্ঠানস্থলে সৃষ্টি হয় আলাদা সৌন্দর্য। সেই সঙ্গে নজর কাড়তে তৈরি করা হয় নানা বৈচিত্ৰ্যের তোরণ।
ফরিদপুর সাহিত্য ও সংস্কৃতি উন্নয়ন সংস্থার উদ্যেগে সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান আয়োজন হয় ফরিদপুর কোর্ট প্রাঙ্গণের স্বাধীনতা চত্ত্বরে।
পহেলা বৈশাখের দিন ভোর ৬টা থেকে অনুষ্ঠান শুরু হয় এ অনুষ্ঠান, চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
ফরিদপুর সাহিত্য ও সংস্কৃতি উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি আবুল ফয়েজ শাহনেওয়াজ বলেন, এবার সংগঠনের উদ্যোগে সকাল ৬টায় বর্ষবরণ, ৮টায় মঙ্গল শোভাযাত্রা। বিকালে ফরিদপুর স্বাধীনতা চত্ত্বরে ৭ দিনব্যাপী বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হবে।
এদিকে ফরিদপুর সাহিত্য ও সংস্কৃতি উন্নয়ন সংস্থার সহ সভাপতি রিজভী জামান জানান, বৈশাখী মেলা ছাড়াও প্রতিবছরের ন্যায় এবারও পহেলা বৈশাখে ফরিদপুর সাহিত্য ও সংস্কৃতি উন্নয়ন সংস্থা নানা অনুষ্ঠানের পরিবেশনা থাকবে।
এদিকে দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজেও পহেলা বৈশাখে বিভিন্ন কর্মসূচির উদ্যোগ হাতে নিয়েছে।
এব্যাপারে কলেজটির অধ্যক্ষ ও লেখক প্রফেসর মোশার্রফ আলী বলেন, এবার আমাদের কলেজের উদ্যোগে সকালে মঙ্গল শোভাযাত্রা, পরে আলোচনা ও আপ্যায়ন, লাঠিখেলা-সাপখেলা, সবশেষে রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্র সংসদ (রুকসুর) সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিভাগের উদ্যোগে আদিভাব লালন চর্চা কেন্দ্রের শিল্পীরা বাউল গান পরিবেশন করবেন।
ফরিদপুর পুলিশ সুপার মোঃ জাকির হোসেন খাঁন জানান, বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সকল প্রকার নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কোথাও কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।