দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের স্বপ্ন পূরণ হতে চলছে লোহাগড়ার মধুমতি নদীতে কালনা সেতুর নির্মাণ কাজ দেখে। এ সেতুটি হবে ৬ লেনের। সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সকালে কালনা ফেরিঘাট ঘুরে ও প্রকল্প সূত্র থেকে জানা গেছে , ৬ লেনের এ সেতু হবে এশিয়ান হাইওয়ের অংশ। চারটি মূল লেনে দ্রুতগতির এবং দু'টি লেনে কম গতির যানবাহন চলাচল করবে। সেতুর দৈর্ঘ্য হবে ৬'শ ৯০ মিটার ও প্রস্থ ২৭ দশমিক ১ মিটার। উভয়পাশের অ্যাপ্রোচ সড়ক হবে ৪ দশমিক ৩০ কিলোমিটার। সেতু নির্মাণে ব্যয় হবে ৯'শ ৫৯ কোটি টাকা।
সেতুটি না থাকায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হত। এই সেতু চালু হলে মধুমতি নদীর উভয়পাড়ের বেশ কয়েকটি জেলার মানুষের ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হবে।
পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুর, ভাংগা, গোপালগঞ্জ, খুলনা, বাগেরহাট, নড়াইল, যশোর, সাতক্ষীরাসহ আশেপাশের আরো কয়েকটি জেলার মানুষ সুফল পাবে। ঢাকা থেকে এই সেতু হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ঢুকতে হলে মধুমতি নদীর ওপর সেতু নির্মাণ করা ছিল জরুরী।
কালনা ফেরিঘাটে সেতুছিল এ অঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবি। যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালের নির্বাচনের পূর্বেই সেতু নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরবর্তী মেয়াদে সরকার গঠন করে ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সেতুটির ডিপিপি চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।
২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গোপালগঞ্জ-নড়াইলের মাঝখানে মধুমতি নদীর ওপর কালনা সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। প্রকল্প অনুমোদন ও ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করার পরও নানা জটিলতায় দীর্ঘদিন কাজ আটকে ছিল।
ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের পরিচালক কে এম আতিকুল হক জানান, গত ২৪ জুন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সেতু কর্তৃপক্ষের কার্যাদেশ চুক্তি স্বাক্ষর হয়। জাপান ইন্টারন্যাশনাল করপোরেট এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে সেতুটি নির্মিত হবে।
জাপানের টেকনেক করপোরেশন ও ওয়াইবিসি এবং বাংলাদেশের আব্দুল মোমেন লি: যৌথভাবে সেতুটির ঠিকাদার। এর ফলে নড়াইলসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণে আরো একধাপ এগিয়ে গেল।
বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন ও ব্যতিক্রমী ছয় লেনের সেতু হবে লোহাগড়ার কালনা সেতু। ইতিমধ্যে কালনা সেতুর নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে চলেছে তবে ৩৬ মাসের মধ্যে সেতু নির্মাণ কাজ শেষ করতে হবে।