অশুভ শক্তির সংহার সত্য সুন্দর শিব বন্দনায় শিবলীলা মহোৎসব উপলক্ষে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার চাম্পাফুল ইউনিয়নের বালাপোতা শ্রীশ্রী তারকনাথ ধাম এ প্রত্যাহ হাজার হাজার হিন্দু ধর্মালম্বী ভক্তবৃন্দ সমাগম হয়েছে। পরম করুণাময় শ্রীশ্রী বাবা তারকনাথের আবির্ভাব উপলক্ষে শ্রীশ্রী বাবা তারকনাথ ধামে শিবলীলা মহোৎসবে শুধু বাংলাদেশ নয় পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের ভক্তবৃন্দও এসেছেন।
মন্দির কমিটির সহ-সভাপতি শিক্ষক জগদীশ চন্দ্র সরকার ও সাধারণ সম্পাদক শিক্ষক সুব্রত সরকার বলেন ১৯৮০ সালে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ মন্দিরে শত শত ভক্তবৃন্দ শিবলীলা মহোৎসবে যোগদান করছেন। তবে তারা বলেন প্রতিষ্ঠার পর ২০০০ সাল থেকে ভক্তবৃন্দের পদচারণা বেশি লক্ষনীয়। বর্তমানে সোমবার, রবিবার, শুক্রবারে হাজার হাজার ভক্তবৃন্দের পদচারণা ঘটে।
জানা যায় শিবলীলা মহোৎসব উপলক্ষে মন্দির কমিটি প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ৯ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত অর্থাৎ ২৫ চৈত্র থেকে ৩০ চৈত্র পর্যন্ত এক ধর্মীয় অনুষ্ঠান মালার আয়োজন করেছে। এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে মন্দির কমিটি নানান প্রস্তুতিও গ্রহণ করেছে।
মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সভাপতি বলেন ভারতের হুগলি জেলার বাবা তারকেশ্বরের মন্দিরের অনুকরণে বা নিয়মে বালাপোতা বাবা তারকনাথ ধামে সব কিছু পরিচালিত হয়ে থাকে। মন্দিরের বার মাস পূজারী পুজা করে থাকেন। তবে চৈত্র মাসটা মেলার রুপ ধারণ করে এবং এ মাসে লক্ষাধিক ভক্তবৃন্দের সমাগম ঘটে। এ সময় সমগ্র বাংলাদেশ থেকে ভক্তবৃন্দ আসে তবে খুলনা বিভাগের বেশী ভক্তের পদচারণা ঘটে।
সরজমিনে দেখা যায় শ্রীশ্রী তারকনাথ ধামে রয়েছে শ্রীশ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির, শ্রীশ্রী ডাকাতি কালী মন্দির, শ্রীশ্রী লোকনাথ মন্দির ও শ্রীশ্রী বাবার মন্দির। রয়েছে শিব পুকুর, ভক্তবৃন্দ ও সন্ন্যাসীদের রাত্রি ও দিন যাপনের কক্ষ। তবে মন্দির কমিটির সহ সভাপতি বলেন যখন অধিক ভক্তবৃন্দের আগমন ঘটে তখন রাত্রি যাপনে স্থান সংকট পড়ে। এক্ষেত্রে মন্দির কতৃপক্ষ আশ্রয়স্থল তৈরীর ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
জানা যায় ১৯৮০ সালে স্থানীয় বাসিন্দা পতিত পাবন সরকার এর উদ্যোগে গ্রামবাসির সহায়তায় ১০ শতক জমিতে বালাপোতা শ্রীশ্রী বাবা তারকনাথ ধাম মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এর জমির পরিমান প্রায় ৫বিঘা। মন্দিরের পূজারী নরেন্দ্র নাথ সরকার নিয়মিত পূজা অর্চ্চনা করে চলেছেন। প্রথমে গোলপাতার ছাউনি দিয়ে মন্দিরটি তৈরী হয়। বর্তমানে হাজার হাজার ভক্তবৃন্দের সুবিধার্থে সামান্য সরকারি অর্থায়নে ৬৪ পিলার বিশিষ্ট মন্দির তৈরীর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ৬৪ পিলার বিশিষ্ট মন্দির তৈরীতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ থেকে ৪ কোটি টাকা । বর্তমানে পিলারগুলি নামমাত্র স্থাপন করা হয়েছে। এই মন্দিরটি তৈরীতে সরকারি বেসরকারি সহায়তা কামনা করেন।
জানা যায় মন্দিরের সকল কার্যক্রম দেখা শুনা করার জন্য কোন বেতনভোগি কর্মচারী নাই। মন্দির কমিটি ও স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ করে থাকেন। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যবৃন্দ নিরাপত্তার ব্যাপারে সহযোগিতা করে থাকেন।
কালিগঞ্জ থানা পুলিশও বিশেষ করে চৈত্র মাসের শিবলীলা মহোৎসবের সময় প্রচুর ভক্তবৃন্দের যখন আগমন ঘটে তখন নিয়মিত টহল দিয়ে থাকেন যা মন্দির কতৃপক্ষ জানান। স্থানীয় জাতীয় সংসদ সদস্য মন্দির পরিদর্শন করেছেন। গ্রামবাসিসহ মন্দির কর্তৃপক্ষ বলেন এই মন্দিরের সকল কার্যক্রম চলে ভক্তবৃন্দের অনুদানে। যে কারণে নিরাপত্তার সুবিধার্তে মন্দিরের চারিপাশে প্রাচীর নির্মাণ করা প্রয়োজন।