পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় চলমান এইচএসসি পরীক্ষায় সাফা ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রের শিক্ষার্থীদের নকলসহ বাড়তি সুবিধা দেয়ার নামে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অবৈধ অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রের আহ্বায়কের বিরুদ্ধে। এর ফলে ওই কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ৭টি কলেজের ৭৪১ জন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সাফা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ অভিযোগ করে বলেন, আমি কলেজের অধ্যক্ষ হলেও আমাকে না জানিয়ে আমারই কলেজের প্রভাষক ও বঙ্গবন্ধু কলেজের গভর্ণিং বডির সভাপতি শাকিল আহম্মেদ প্রভাব খাটিয়ে পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব নেন। তিনি মূল সাফা ডিগ্রী কলেজ ও সাফা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভেন্যু কেন্দ্রের চলমান পরীক্ষার্থীদের নকল সরবরাহসহ সকল প্রকার অনৈতিক সুবিধা প্রদানের জন্য পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক শাকিল আহম্মেদ ও তার সহযোগি ওই কলেজের প্রভাষক বাদশা তালুকদার ও বঙ্গবন্ধু কলেজের প্রভাষক কামাল গাজী প্রতি পরীক্ষার দিনে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০/১০০ টাকা করে ঠাণ্ডা ফি আদায় করছে।
ভূক্তভোগী পরীক্ষার্থীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করেন, আমরা প্রতি পরীক্ষায় অতিরিক্ত টাকা দিতে না চাইলে আমাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। ফলে বাধ্য হয়ে টাকা দেই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত ৮ এপ্রিল ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা চলাকালীন সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) রিপন বিশ্বাস দায়িত্ব পালনকালে নকল সরবরাহের সময় বঙ্গবন্ধু কলেজের প্রভাষক বিমল চন্দ্র হালদারকে আটক করেন। পরে ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের আহ্বায়ক শাকিল আহম্মেদ অভিযুক্ত প্রভাষককে মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে নেন। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ আরও জানান, বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদ করায় তার ওপর শারীরীক নির্যাতন ও জোরপূর্বক মুচলেকা নেয়ার অভিযোগ আনেন এবং মারধর ও মুচলেকার বিষয় থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও রহস্যজনক কারণে পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
এ বিষয় পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক প্রভাষক শাকিল আহম্মেদ তার বিরুদ্ধে অনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বঙ্গবন্ধু কলেজের প্রভাষক ও পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সদস্য কামাল গাজীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় তাকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) রিপন বিশ্বাস বলেন, ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ মৌখিকভাবে পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।