সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে পত্নীতলা থানা পুলিশ অবশেষে বহুল আলোচিত থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা ইসাহাক হোসেনের হত্যাকাণ্ডের মূল আসামী হারুন প্রামানিক (৪৮) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে থানা পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদ ও ইলেকট্রনিক ডিভাইস এর মাধ্যমে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার ডাইনকিনি নামক স্থানে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করতে সক্ষম হয়।
আটককৃত হারুন প্রামানিক নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলার ভিটি উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত আহম্মেদ আলীর পুত্র।
এর আগে হত্যাকাণ্ডের দিন গত ৪ ডিসেম্বর ২০১৮'তে থানা পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা মো.আবুল কালাম আজাদ ওরফে লিটু কাউন্সিলরসহ দুই জনকে আটক করে। আটককৃতরা বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছে।
থানা পুলিশ প্রদত্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, গত ৪ ডিসেম্বর-২০১৮'র রাত আনুমানিক ৯টা ১৫ মিনিটে নজিপুর পার্টি অফিস থেকে নিজ বাড়ি মাহমুদপুর ফেরার সময় নিজ বাড়িতে দুষ্কৃতকারীর এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে নিহত হন ইসাহাক হোসেন।
অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে একইদিনে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা মো.আবুল কালাম আজাদ ওরফে লিটু ফকিরসহ ২ জনকে আটক করে।
উক্ত ঘটনায় নিহতের শ্যালক আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে পত্নীতলা থানায় একটি মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে মামলার তদন্তকারী অফিসার মো.জহুরুল হক ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সহ পত্নীতলা থানা পুলিশের একটি টিম দীর্ঘ আট (৮) দিন গাজীপুর জেলায় অভিযান চালিয়ে হারুন প্রামাণিককে আটক করে।
আটককৃত হারুন শনিবার (৬ এপ্রিল) বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন।
জবানবন্দিতে সে জানায়, আবুল কালাম আজাদ উরফে লিটু ফকিরের সাথে তার পরিচয় জেলখানায় ২-৩ মাস আগে। নিহত ইসাহাক হোসেনের সাথে নজিপুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর লিটু ফকিরের জমিজমা এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। জেলখানাতেই লিটু ফকির ও হারুনসহ অন্যান্য আসামিদের নিয়ে পত্নীতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসহাক হোসেনকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
জেল থেকে জামিনে বের হওয়ার পর লিটু ফকির মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আসামিদের নিজ বাড়িতে ডেকে নেয়। হত্যাকারী হারুন প্রামানিক কবিরাজ বেশে কাউন্সিলর লিটু ফকিরের বাড়িতে ঘটনার দেড় মাস পূর্ব হতেই যাতাযাত শুরু করে। হত্যাকাণ্ডের জন্য আসামির সাথে লিটু ফকিরের ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা চুক্তি হয়।
এই চুক্তি অনুযায়ী গত ৪ ডিসেম্বর ২০১৮'তে লিটু ফকিরের সহায়তায় হত্যাকারীরা রাত আনুমানিক ৯টায় ইসাহাক হোসেনকে তার নিজ বাড়িতে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে পত্নীতলা থানা অফিসার ইনর্চাজ পরিমল চক্রবর্তী জানান, পুলিশ সুপার মহোদ্বয়ের দিক নির্দেশনায় থানা পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে গাজীপুর জেলার কালয়াকৈর ডাইনকিনি এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত মূল আসামী হারুন প্রামানিককে আটক করা হয়। সে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক ইছাহাক হত্যাকাণ্ডের জবানবন্দি প্রদান করেছে।