নীলফামারী জেলা সদরের বিন্যাবতীর বিরাট দিঘিতে সনাতন হিন্দু ধর্মের পুণ্য স্নানোৎসবে (বারুনী স্নান) নেমে দীঘিতে তলিয়ে যাওয়া সুমন চন্দ্র রায় (১৫) নামের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী কিশোর। নিখোঁজের ৫ দিনের মাথায় ভেসে উঠেছে তার মরদেহটি।
রবিবার (৭ এপ্রিল) সকালে তার মরদেহটি দীঘির উত্তরপাশে ভেসে উঠে।
এর আগে বুধবার (৩ এপ্রিল) সকাল ৭টায় ওই দীঘিতে বারুনী স্নান করতে নেমে সুমন তলিয়ে গিয়েছিল। ঘটনার দিন হতে ২ দিন ধরে ফায়ার সার্ভিসের ২ জন ডুবুরি দীঘির ভেতর অনুসন্ধান চালিয়ে সুমনকে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেছিল।
রবিবার সকালে জেলা প্রশাসকের পক্ষে জাল টেনে উদ্ধার অভিযান পরিচালনার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই মরদেহটি ভেসে উঠে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, প্রতিবছরের ন্যায় জেলা সদরের গোড়গাম ইউনিয়নের অবস্থিত বিন্যাবতীর বিরাট দীঘিতে (নীলসাগর) সনাতন হিন্দু ধর্মের ৩ দিনব্যাপী পুণ্য স্নানোৎসব গত বুধবার থেকে শুরু হয়েছিল। সেদিন ভোর থেকে দীঘি স্থানে হাজার হাজার সনাতন ধর্মের মানুষজন সমবেত হতে থাকে।
এদের মধ্যে সুমন ৩ বন্ধুকে নিয়ে দীঘিতে স্নান করতে নেমেছিল। তারা বিন্যাবতী দিঘির পশ্চিম পার্শ্বের ঘাটের ডাঙ্গায় পড়নের জামা-কাপড় রেখে পানিতে নেমে সাঁতার কেটে পূর্ব প্রান্তের ঘাটের দিকে যাওয়ার পথে দীঘির গভীর পানিতে তলিয়ে যায় সুমন।
একই গ্রামের সমবয়সী সুমনের তিন বন্ধু বিপুল চন্দ্র রায়, অনুকুল চন্দ্র রায় ও উত্তম কুমার রায়ের চিৎকারে তারাসহ উপস্থিত মানুষজন তাৎক্ষনিকভাবে সুমনকে রক্ষা ও উদ্ধার করার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়।
সেদিনই নীলফামারী ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় রংপুর হতে ডুবুরী দলের একটি ইউনিট বেলা ১১টার থেকে নিখোঁজ সুমনকে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে। পরের দিনও দিনভর ডুবুরি দল অনুসন্ধান চালিয়ে সুমনকে উদ্ধার করতে পারেনি। ফলে ডুবুরি দল উদ্ধার অভিযান বন্ধ করে দেয়।
শনিবার (৬ এপ্রিল) বিকাল পর্যন্ত সুমনের সন্ধান কেউ করতে পারেনি। তবে রবিবার সকালে সুমনের লাশ স্থানীয়রা ভেসে উঠতে দেখে। তাৎক্ষনিকভাবে লাশ উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম, নীলফামারী দমকল বাহিনীর স্টেশন ইনচার্জ এনামুল হক, খোকশাবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান, গোড়গ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান রেয়াজুল ইসলামসহ স্থানীয়া।