Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

নবীগঞ্জে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রের বেহাল অবস্থা, দেখার যেন কেউই নেই  

আজিজুল ইসলাম সজীব, হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ০৬ এপ্রিল ২০১৯, ১১:৪৫ AM
আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৯, ১১:৪৫ AM

bdmorning Image Preview


হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ আউশকান্দি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটির বেহাল অবস্থা। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ৫টি পদের মধ্যে ৫টি পদই শূন্য রয়েছে, বন্ধ থাকে দিনের বেলা ১২ ঘন্টাই। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে একজন পরিবার কল্যাণ  পরিদর্শিকা ও আয়া পদে ২জন কর্মরত আছেন। কিন্তু তারাও নিয়মিত অফিস করেন না।

উক্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি অত্র এলাকার কয়েকটি ইউনিয়নের স্বাস্থ্যসেবায় একমাত্র ভরসা স্থল হলেও সেটি এখন নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এখানে শুধু নেই আর নেই। স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটি এলাকাবাসীর কোন উপকারে আসছে না বললেই চলে।

এব্যাপারে এলাকার শতাধিক জনতা গণস্বাক্ষর করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, হবিগঞ্জ সিভিল সার্জনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদন করেছেন।  

অভিযোগে বলা হয়, উক্ত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র থেকে আউশকান্দি, দীঘলবাক, কুর্শি ও দেবপাড়া পার্শ্ববর্তী ৪টি ইউনিয়নের ৪৪টি গ্রামের কোন হাসপাতাল বা দাতব্য চিকিৎসালয় নাই। এসব গ্রামের কৃষক, শ্রমিক এবং সাধারণ মানুষকে চিকিৎসেবা প্রদানের জন্য প্রাথমিকভাবে অত্র হাসপাতালের উপর নির্ভর করতে হয়।

প্রায় ২২ থেকে ২৪ হাজার মানুষের প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র এই হাসপাতালটি। এই নিয়মানুযায়ী এ হাসপাতালে একজন এমবিবিএস, সহকারী ডাক্তার, দুইজন ফার্মাসিষ্ট, একজন নৈশ্য প্রহরী, একজন অফিস সহকারী থাকার কথা। এসব পদে কেউ কর্মরত নেই। সব কয়টি পদই শূন্য রয়েছে। ফলে জনসাধারণ চরম দুর্ভোগে শিকার হচ্ছে। প্রতিদিনই শত শত মানুষ এই স্বাস্থ্যসেবা থেকে চিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছেন।

জনগণের চিকিৎসা সেবার চাহিদা অনুযায়ী এই সংখ্যা একেবারেই অপ্রতুল্য। অজ্ঞাত কারণে র্দীঘদিন ধরে এই হাসপাতালের কোন পদ পূরণ করা হচ্ছে না। দীর্ঘদিন যাবত এই হাসপাতালে নিয়মিত কোন ডাক্তার নেই। যদিও বিল্ডিংয়ে সার্বক্ষণিক ডাক্তারের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা আছে। অত্র হাসপাতালে ২টি বিল্ডিং রয়েছে। যার মধ্যে একটি দু'তলা ভবন ও অপরটি পরিত্যক্ত অবস্থায় টিনশেড ভবন।

এছাড়াও হাসপাতালে পুুকুরে কুচরীপানা ও আবর্জনা পচে দূর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। হাসপাতালের আঙ্গিনা আগাছায় চেয়ে গেছে, যেখানে মশা-মাছি-কিট-পতঙ্গ এবং সাপের বিচরণে এলাকার জনগণ ভীতসন্ত্রস্ত ও আতংকিত চলাচল করতে হয়। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি সারাক্ষণই বন্ধ থাকে ফলে এলাকাবাসীর কোন উপকারে আসছে না। 

এলাকার যুবক শিহাব আহমদ জানান, এলাকাবাসী দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে অত্র এলাকাবাসীর সু-স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবার গুরুত্ব বিবেচনা করে গুরুত্বারোপ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করবেন। এলাকার ৪৪ টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ইতিবাচক সহযোগিতা ও পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আমরা এলাকাবাসী সিভিল সার্জনকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।

এব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শাহাদাৎ হোসেন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পরিবার কল্যাণ বিভাগে কোন পদ খালি নাই ২ জন কর্মরত আছেন। স্বাস্থ্য বিভাগের সবক'টি পদ খালি রয়েছে। কেউ যদি অফিস ফাঁকি দেয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে। 

নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডাঃ গোলাম মোস্তাফা বলেন, এখানে কোন পদেই লোক নেই তাই অফিস বন্ধ থাকে। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আসলেই বিষয়টি দুঃখজনক এলাকার মানুষ স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আশা করি অচিরেই পদগুলো পূরণ হবে। 

Bootstrap Image Preview