Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

সাঘাটায় বন্ধ হচ্ছে না বালু উত্তোলনের মহোৎসব

মোস্তাফিজুর রহমান, সাঘাটা (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ০৫ এপ্রিল ২০১৯, ০৯:৪৪ PM
আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৯, ০৯:৪৪ PM

bdmorning Image Preview


সাঘাটায় যমুনা, কাঁটাখালী ও বাঙ্গালী নদী থেকে বালু উত্তোলনের মহোৎসব বন্ধ হচ্ছে না। অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে দীর্ঘদিন ধরে চলছে বালু উত্তোলন। ফলে নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্প, ত্রিমোহনী ব্রিজ, সতিতলা ব্রিজসহ নদীর তীরবর্তী জনবসতি এলাকা ভাঙ্গন ঝুঁকিতে পড়েছে। প্রশাসনের কাছে এলাকার লোকজনের কোনো অভিযোগও কোন কাজে আসছে না।  

জানা গেছে, বালু খেকোরা প্রশাসনের নিরবতার সুযোগ নিয়ে উপজেলার যমুনা নদীতে গোবিন্দী, হলদিয়া, হাসিলকান্দি, নলছিয়া, গোবিন্দপুর, দক্ষিণ উল্যা (বড়মতাইড়), কাটাখালী নদীর ত্রিমোহনীঘাট, রামনগর ঘাট, সতীতলা ঘাট, ইলিয়াছের ঘাট, শংকরগঞ্জ ঘাট ও মেলান্দহ ঘাট ফলিয়াদিগর পাকুরতলা ঘাটসহ নদীর বিভিন্ন স্থানে চলছে বালু উত্তোলনের মহা উৎসব।

বালু খেকো একটি চক্র নদীতে রাবারড্রামের উপর ড্রেজার মেশিন স্থাপন করে নদীর তলদেশ থেকে দীর্ঘদিন যাবত বালু উত্তোলন করে অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা উপার্জন করছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ সরকারি অনুমোদন ছাড়াই বালু ব্যবসায়ীরা যমুনা নদীর তীর রক্ষা প্রকল্প এলাকার ৪টি পয়েন্ট থেকে বালু উত্তোলন অব্যাহত রাখার ফলে ওই এলাকায় নদীর গভীরতা বেড়ে নদীর তীর রক্ষা প্রকল্পসহ বিপুল সংখ্যক জনবসতি ভাঙ্গন ঝুঁকিতে পড়েছে।

এব্যাপরে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেও কোন ফল পাওয়া যায়নি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। উল্টো অভিযোগকারীদেরকে বিভিন্নভাবে ওই প্রভারশালী চক্রের দ্বারা হেনস্থা হতে হয়েছে। অপরদিকে বালু খেকো প্রভাবশালী চক্র কাটাখালী নদীর উপর নব নির্মিত ত্রিমোহনী ব্রিজ ও মেলান্দহ ব্রিজ সতিতলা ব্রিজ, পাকুরতলা ব্রিজ এলাকায় অনুরূপভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে।

এ অবস্থার কারণে সাঘাটায় কাটাখালী নদীর উপর ত্রিমোহনী ব্রিজ, মেলান্দহ ব্রিজ, সতিতলা ব্রিজ, পাকুর তলা নদীর সংরক্ষণ প্রকল্প ও যমুনা নদীর তীর রক্ষা প্রকল্প ও আশেপাশের গ্রামের বিপুল সংখ্যক জনবসতি ভাঙ্গন ঝুঁকিতে পড়েছে।  

ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১'শ ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে যমুনা নদীর রক্ষা প্রকল্পের (ব্লক এর কাজ) ও ২৮ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কাঁটাখালী নদীর উপর ত্রিমোহনী ব্রিজ ভাঙ্গন ঝুঁকিতে পড়েছে। অসাধু বালু খোরদের কারণে বিপুল পরিমান অর্থ ব্যয়ে এ প্রকল্প দু'টি ক্ষতিগ্রস্ত হলে একদিকে সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা ভেস্তে যাবে।

অপরদিকে নতুন করে দুর্ভোগের কবলে পড়বে এলাকাবাসী। শুধু তাই নয়, উত্তোলন করা বালু ডাম্পার ট্রাকে ক্রেতারা নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। বালু বোঝাই এসব ডাম্পার ট্রাক অতিরিক্ত চলাচলের কারণে এলাকার রাস্তাগুলোর বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। বালু বোঝাই এসব ট্রাক চলাচলের সময় রাস্তায় অসহনীয় যানযটের সৃষ্টি হয়। এতে স্কুল-কলেজগামী ছাত্র-শিক্ষক, অফিসগামী লোকজন ও হাটুরেদেরকে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। দীর্ঘদিন ধরে এমন অবৈধ কর্মকাণ্ড চলতে থাকলেও তাদের ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায় না কেউ।  

নদী রক্ষা প্রকল্প এলাকা থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়ে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, সাঘাটা থানায় এ সংক্রান্ত একটি জিডি করা হয়েছে। এরপরও বালু উত্তোলন বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।

উপজেলা নিবার্হী অফিসার উজ্জল কুমার ঘোষ নদী থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়ে এলাকাবাসীর অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, রাজনৈতিক নেতাদের সদইচ্ছা ছাড়া এই সব অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করা সম্ভব নয়।

 

 

Bootstrap Image Preview