জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সেজেছিলো বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি)। মূল ফটক থেকে শুরু করে প্রতিটি রাস্তাজুড়ে টাঙানো হয়েছিলো স্বার্ণালি যুগের সব সিনেমার পোস্টার ও স্থিরচিত্র। এছাড়াও ব্যানার ফেস্টুনে বর্ণিল সাজ ধারণ করেছিলো চলচ্চিত্রের আঁতুরঘর। মেলা ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনীও বাদ পড়েনি। উৎসবের শেষদিন, বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) বিকাল পাঁচটায় আয়োজন করা হয়েছিলো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আর তাতেই বেঁধেছিলো বিপত্তি।
সুন্দর আয়োজনে দুই দিন ব্যপী এই উৎসব শুরু হলেও শেষ হয় বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে। এফডিসির ভেতরে জানাজা পড়ানোর জায়গায় মঞ্চ তৈরি, অতিথিদের জন্য ছোট জায়গা বরাদ্দ রাখা, প্রথম দিনে মঞ্চ পুরোপুরি প্রস্তুত না হওয়া, মূল ফটকের সামনে স্ক্রিন বসানোর কথা থাকলেও তা না বসানো, মূল অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে ফেস্টুন দিয়ে না সাজানো ইত্যাদি এমন বহু বিষয় নিয়ে এফডিসিভিত্তিক বিভিন্ন সংগঠন ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। এরই মধ্যে অভিযোগ এসেছে, এ দুদিনের অনুষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির নিরাপত্তাকর্মীরা হাত তুলেছেন এফডিসির কলাকুশলীদের ওপর।
গত বৃহস্পতিবারের ঘটনা নিয়ে নৃত্যপরিচালক হাবিব বলেন, ‘অনুষ্ঠানের প্রয়োজনে আমি যখন স্টেজের সামনে যাচ্ছিলাম, তখন ইভেন্টের লোক আমাকে বাধা দেয়, আমি আমার পরিচয় দেওয়ার পরও তারা আমাকে ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। একপর্যায়ে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়, এমন ঘটনা দেখে আমাদের নাচের ছেলেদের সঙ্গে ইভেন্ট সিকিউরিটিদের হাতাহাতি হয়। শুধু আমি না, অনেক চলচ্চিত্র নায়িকাও লাঞ্ছনার শিকার হয়।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লাঞ্ছনার শিকার এক নায়িকা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি আমার পরিচয় দেওয়ার পরও তারা আমাকে ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। আমি বলেছি, আমি শিল্পী সমিতির একজন মেম্বার; ভেতরে যাওয়ার অধিকার আমার আছে। একপর্যায়ে তাদের সঙ্গে আমার তর্কবিতর্ক হয়। তখন আমি শিল্পী সমিতিতে গিয়ে জায়েদ খানকে খোঁজ করি, সেখানে জায়েদ ভাইকে পাইনি। আমি অনুষ্ঠান থেকে চলে আসি। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। জাতীয় চলচ্চিত্র দিবসে আমরা বাইরের লোকদের কাছে লাঞ্ছিত হলাম।’
উল্লেখ্য, গেলো বুধবার (৩ এপ্রিল) জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস উপলক্ষে সকাল সাড়ে ১০টায় উৎসবের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ‘চলচ্চিত্র বাঁচলে সংস্কৃতি বাঁচবে’ স্লোগান নিয়ে এফডিসি’র ঝর্না স্পটের সামনে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস ২০১৯’ এর উদ্বোধন করেন তিনি। এই বছর পুরো অনুষ্ঠানটি ‘রাউন্ড দ্য ক্লক’ নামে এক ইভেন্ট কোম্পানি করেছে। তবে বিশৃঙ্খলা নিয়ে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কেউ কথা বলতে রাজি হননি।